লেবেল

বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২২

ধারাবাহিক প্রেমের উপন্যাস পর্ব-১১ ।। ...এবং ইরাবতির প্রেম।। গৌতম আচার্য।।Ankurisha।। E.Magazine।। Bengali poem in literature।।

 




ধারাবাহিক প্রেমের উপন্যাস পর্ব-১১



...এবং ইরাবতির প্রেম
গৌতম আচার্য




ইরাবতির সঙ্গে জমে উঠেছে প্রেম।। ইরাবতি ইনিয়ে বিনিয়ে দুই চার কথা বলেই সুচতুরভাবে সত্যেন এর সঙ্গে "তুমি" তে রাজি হয়ে গেছে।। প্রথম দিকে এমন ভাব দেখাচ্ছিলো, যেন সে সত্যেনকে তুমি বললেই সব আচার- শাস্ত্র অশুদ্ধ হয়ে যাবে।। কিন্ত শেষ পর্যন্ত "লজ্জা করে...", "লজ্জা নারীর ভূষণ....", "ঠিক আছে জেদী বাবুর যখন ইচ্ছে...", "বুঝছি এবার তুমি করেই কথা বলতে হবে..", "শেষে রাগী বাবু আবার রেগে যাবেন".... ইত্যাদি থেকে সরাসরি "তুমি" তে পদার্পন ঘটলো ইরাবতির।।

ঠিক এর পরেই গভীর রাতে মেসেঞ্জারে গল্পের শুরু।। গল্প করতে করতে কখন রাত ফুরিয়ে যায়, কিন্তু দুজনের কথা ফুরায় না।। সত্যেন এর দুই চোখ স্বপ্নময় হয়ে ওঠে।। ভালোবাসার স্বর্গীয় রূপ ভাবতে ভাবতে সত্যেন হারিয়ে যায় সাত সমুদ্র তেরো নদীর পার ঘেষা কোন এক নিজের তৈরি স্বপ্নপুরীর বিস্তীর্ণ মায়াজালে।। প্রতিটি দিন প্রতিটি মূহুর্ত স্মরণীয় করে রাখতে চায় সত্যেন।। তার সেই মন কাননের স্বপ্নপুরী ভরে ওঠে ইরাবতির গৌরবময় উপস্থিতিতে।।  

যখন গ্রীষ্মের দাবদাহে চতুর্দিক পুড়ে যায়, ইরাবতির সুললিত মুখটিকে ভেবে শান্তিতে ঘুমের পরশে ডুব দেয় সত্যেন।। আবার বর্ষা এলে পেখম তুলে ময়ূরীর মতো নেচে ওঠে আবেগ ছাড়া আনন্দে, বৃষ্টির প্রতিটি ধারা তার মনের গভীরতায় দোলা দিয়ে যায়।। স্বপ্নের আবেগে পুরীর সমুদ্র সৈকতে ইরাবতি কে পাশে নিয়ে দিগন্ত বিস্তৃত দিক চক্রবালের দিকে আঙুল তুলে ইরাবতির দু'চোখে স্বপ্ন জুড়ে দেয় ভালোবাসার, হেঁটে বেড়াতে বেড়াতে ইরাবতির আরও একটু বেশি ঘনিষ্ঠ হতে চায় সত্যেন, ইরাবতির মনের গভীরতাকে ছুঁয়ে দিয়ে নিজেকে ধন্য অনুভব করতে চায়।।

ইরাবতি আজ সন্ধ্যায় ফোন করেছে সত্যেনকে।। এই প্রথম ইরাবতির ফোন ধরে সত্যেন বুঝতে পারে, এটি ভিডিও কল্।। এ্যাতোদিন ইরাবতিকে সে দেখেছে মেসেঞ্জার আর হোয়াটসঅ্যাপের স্হির ছবিতে,কথা বলেছে মোবাইলে।। এই প্রথম সে দেখতে পাচ্ছে ইরাবতি হাসছে, কথা বলছে, ভেংচি কাটছে তাকে।। খুব ছুঁতে ইচ্ছে করছে ইরাবতিকে।। অবাক সত্যেন প্রশ্ন করে, "না বলে কয়ে ভিডিও কল"? ইরাবতি মুখ গম্ভীর করে বলে, "বেশ করেছি।। কিছু করবার আছে তোমার"? কাচুমাচু হয়ে সত্যেন বলে, যদি কেউ দেখে ফেলতো বা অন্য কেউ ধরতো ফোনটি।।
-- দেখে ফেললে ফেলবে-- সোজাসাপটা উত্তর দেয় ইরাবতি।। তারপর একটু থেমে বলে, তোমার ফোন অন্য কেউ ধরবে কেন?
-- আরে তা নয়।। অনেক সময় হয়না..... বে- খেয়ালে ফোন ফেলে বেড়িয়ে গেলাম....
-- না স্যার।। মোবাইল ফোন ফেলে বেড়িয়ে যাওয়া একদম অন্যায় কাজ।। মোবাইল মানেই তো সে আমার সঙ্গে সঙ্গে চলবে.....
-- আরে ভুল তো হয়েই।। উত্তর দেয় সত্যেন।।
-- নো।। এই ভুলটি ভুলেও করো না।। আমার যখন ইচ্ছে হবে কথা বলতে, আমি ফোন করবোই।। আর যখনই দেখতে ইচ্ছে করবে, ভিডিও কল-ও করবোই।।
-- আজ বুঝি দেখতে ইচ্ছে করছিলো?
-- হ্যাঁ তো।। শয়তানকে আমার দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিলো তো।। তাতে অন্যায় কিছু আছে নাকি?
-- আমি কি বলেছি... " অন্যায় "?
-- একদম পাক্কা শয়তান।। বললেই বা আমি মানবো কেন?
ইয়ার্কি করে ওঠে সত্যেন।। বলে, আজ কেন দেখতে ইচ্ছে করছিলো আমি জানি।।
-- কি জানো বলো।।
-- ভিডিও কল করে দেখে নিলে আমি ফেক্ আইডি কিনা।। তাইতো?
-- হ্যাঁ তো।। এ্যতো ভালো ভালো কথা যে বলে... মনে আলোড়ন তোলে, তাকে একবার দেখবো না বুঝি?
-- সে তো আমার প্রোফাইলেই আমাকে দেখতে পাও।।
-- না স্যার প্রোফাইলে দেখা আর সরাসরি দেখা এক নয়।।
-- ভিডিও তে দেখা, আর মুখোমুখি দেখাও তো এক নয়।।
-- নয় তো।। আমি কি বলেছি এক?
-- তাহলে দেখা হোক্ না আমাদের।। প্লিজ্ ইরা...
-- মশাই, দেখা হলেই তো হয়ে গেলো।। তার থেকে "দেখা হবে"..... "দেখা হবে" র মধ্যে একটি চার্ম আছে।। এবার বলো ইয়েস্ অর নো.....
-- নো।। আমার চার্ম এর দরকার নেই।। আমার দরকার ইরাবতি।। বলে ওঠে সত্যেন।।
-- "পুরোপুরি একটি শয়তান" প্রশ্রয় মেশানো আদুরে গলায় বলে ইরাবতি।।



চলবে...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন