আগমনী বন্দনা -৩৫
ড. রমলা মুখার্জী
১.
শিউলি ডালে শরৎ দোলে
প্যাচ প্যাচে গরম শেষে ঘনিয়ে এল বর্ষা-
গাছ-লতা-প্রাণীর প্রাণে বাঁচার নব ভরসা।
রাস্তা-ঘাট কাদায় ভরে পিছল হবার পরে,
মেঘলা আকাশ কেটে ঐ সোনালী রোদ ওড়ে।
তুলোয় পেঁজা মেঘ-বালিকা বলছে ডেকে আয়-
নীল আকাশে শুভ্রা শরৎ নৃত্য করে যায়।
কাশের বনে সাদা চামর শিউলি ডালে ডালে-
মা দুর্গা আসছেন ঐ ঢাকের তালে তালে।
শতদল-শালুক ফুলে সেজেছে আজ ধরা-
পুকুর-দিঘি-ঝিল-নদী কানায় কানায় ভরা।
পুজোর ছুটির আনন্দেতে উদ্বেলিত প্রাণ-
মায়ের তিনটি চোখের পাতায় শেষ তুলির টান।
এমনি করে বছর পরে মা সবার ঘরে-
ঝুপড়ি-কুটির-ইমারত আনন্দেতে ভরে।
২.
মরণ থেকে নাও মা ডেকে
মিষ্টি হাওয়ায় গান যে শোনায় ভোরের পাখি-
রঙের থালা মেলছে ডালা তাকিয়ে দেখি।
শিউলি সকাল ছন্দে মাতাল গন্ধে ভরা-
নতুন আশায় ভালোবাসায় সারছে জরা।
পদ্ম ডাকে মধুপটাকে দিঘির ধারে-
যেথায় আছে শাপলা-শালুক সারে সারে।
বুকের মাঝে নূপুর বাজে রিণিরিণি...
আসছে দোলায় সোনার আলোয় মা জননী।
শিশির ঘাসে ঝিলিক হাসে মুক্তকণা-
ঢাকের কাঠি কাঁসর মিঠি কাই-না-না-না-
বাদ্যি বোলে হৃদয় দোলে তাকুড় নাকুড়-
অন্ধমনে আলো এনে দাও গো ঠাকুর।
আলোর গানে অসুর প্রাণে সুরের নাচন-
মরণ থেকে নাও মা ডেকে তবেই বাঁচন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন