আগমনী বন্দনা -৩৪
জয়শ্রী সরকার
১.
আমার দুগ্গা ভোর না হতেই
ভোর না হতেই আমার দুগ্গা আগমনির সুরে
গুনগুনিয়ে গান গেয়ে যায় কোন্ সে অচিনপুরে !
আমার দুগ্গা ভীষণ দুঃখী চোখের জলে ভাসে
বুকের মধ্যে কষ্ট চেপে ঠোঁটের কোণে হাসে !
আমার দুগ্গা বানভাসিদের অশ্রুরই সংলাপে
আমার দুগ্গা কলার ভেলায় হাড়হিম হয়ে কাঁপে !
আমার দুগ্গা কক্ষনো তো যায়নি শপিং মলে
আমার দুগ্গা গুগলি খোঁজে খাল-বিল দিঘি-জলে!
আমার দুগ্গা পায়নি কখনো মাটন-বিরিয়ানি
আমার দুগ্গা হাস্যমুখেই খেয়ে নেয় আমানি !
আমার দুগ্গা ঘর বাঁচাতে নিজেকেই দেয় সঁপে
আমার দুগ্গা নষ্ট তো নয়, টিকবে কী আর ধোপে?
আমার দুগ্গা দূর-আকাশে শুধুই চেয়ে থাকে
আমার দুগ্গা আনমনেতে দুগ্গামাকেই ডাকে !
আমার দুগ্গা রূপক মাত্র , সময়ের কলতান----
আমার দুগ্গা তাই গেয়ে যায় ঝরাপাতাদের গান !
২.
দুগ্গা মাগো তোমায় বলি
শরৎ মানেই সুনীল আকাশ সাদা মেঘের ভেলা
সেই ভেলাতেই দুগ্গামায়ের মর্ত্যে আসার খেলা !
সাদা মেঘের ভেলায় বসে দুগ্গা মা যে আসে
কয়েকটা দিন আম-বাঙালি আনন্দেতে ভাসে !
দুগ্গা মাগো তোমায় বলি প্রতিবারের মতো
দূর করো মা সবহারাদের দুঃখ-দৈন্য যত !
স্বর্গসুখটা কোথায় আছে কেউ কী জানি মোটে?
দুগ্গা এলেই সব শিশুরা মনের সুখে ছোটে !
কষ্ট কত হচ্ছে মাগো , স্কুলগুলো সব বন্ধ
অনলাইনে ক্লাস করে যে চোখ বুঝি হয় অন্ধ !
তাই তো তোমায় বলছি মাগো ওদের হয়ে আমি
সব শিশুদের রক্ষা করো , এই আশিসই দামি !
ওরাই এখন সবচে অনাথ অভিজ্ঞতাই বলে
রক্ষাকবচ সঙ্গে এনো মর্ত্যে আসার ছলে !
তোমার আশিস পেয়ে ওরা ছুটবে সারা আকাশ
নীলপরীদের মতো উড়ে লুটবে সুখের বাতাস !
দুটি কবিতাই খুব সুন্দর। মন ভালো করে দেয়।
উত্তরমুছুন