শুক্রবারের গল্প
গৌতম বাড়ই
অণুগল্প-(১)
কে?
শীলা আমার মনে হয় বিন্নী আমাদের খুব একটা ভালো নেই।অমল এই বলে শীলার মুখের দিকে চাইলেন।শীলার মুখটি গতরাত থেকেই থমথমে।দুশ্চিন্তার ছাপ স্পষ্ট সেখানে। গতরাতে শীলা যে ঠিকমতন ঘুমোইনি তা অমল জানে ঘাপটি মেরে থেকে।অমল কি ঘুমিয়েছে নাকি!
রাত বারোটার কিছু পরে শেষবারের মতন ফোন আসে বিন্নীর কিন্তু কথা না হয়ে কেটে যায়।তারপর বহু চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি বা বিন্নীর ফোনও আসেনি।সেটাই চিন্তার।আজও গোটাদিন না। মানুষের জীবনটা যে কি এই ভাবতে ভাবতে বুকের ভেতরে এক গভীর ব্যথা অনুভব করে অমল।অবসর!তার কানে ব্যাঙ্গাত্মক শোনায়।আজ খিদে নেই।রাতে কোনরকম একমুঠো খেয়ে দুজনে শুয়েছে সবে।শীলার মোবাইল টা বেজে উঠল।বিন্নীর কল, অসম্ভব ডিসটার্বড লাইন নেট সব বন্ধ পরশু রাত থেকে।আমি আগামীকাল আসছি চিন্তা করো না।
সকালে সদর দরজায় ডাকাডাকির আওয়াজ।পুলিশের গাড়ি।পাড়ার মোড়ে বাক্সে একটি মেয়ের রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে। দেখুন তো আপনার মেয়ের কিনা?
অমলবাবু দেখে বললেন না এ আমার মেয়ের না এবং কিছুতেই না।শীলা বাড়িতে মেয়ের সাথে তখন মোবাইলে কথা বলছিলো।
অণুগল্প-(২)
দাল্লা
চারুলতার এখনো মনে পড়ে স্পষ্ট সেইসব দিনের কথা।আজ তো ট্রেকার টোটো অটো কত কি দাল্লা গ্রামের পিচঢালা কালোসাপের মতন মসৃণ রাস্তায় শুনি।বীরেন মাষ্টারকে হয়তো এ প্রজন্মের অল্পবয়সীরা চেনেই না।
পাকুয়াহাটের বাসে মালদা থেকে এই এগারো মাইল এসে ঘন্টা দুয়েক বসে থেকে টাঙ্গায় চেপে দাল্লাগ্রাম।যেমন ঘোড়া আর তেমন সহিস।মহীনের ঘোড়া।মনে হয়েছিলো সেদিন পৃথিবীর শেষ এটাই। আদিবাসীদের গ্রাম।ওপারে রাজশাহী।প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি।একরাত দাল্লাগ্রামে থেকে ছেড়ে চলে এসেছিলেন। অগাস্ট মাসের শেষ,সাপেরা অসংখ্য রাস্তা পেরোচ্ছে জল কাদা মাটির।আলপথ মেঠোপথ। সুদূর কলকাতা অন্য গ্রহে আর আফ্রিকার জঙ্গল বোধ হচ্ছিলো এই দিগন্ত মেলানো গ্রামটিকে।চাঁদের পাহাড়ের মতন।
জীবনের আজ এই ক্লান্ত নির্জন একা থাকবার দিনে ঐ দাল্লাগ্রাম কেন জানিনা চারুকে বারবার টানতে থাকে।
---------------------------------------------------------------------
মতামত জানান। এই বিভাগে মৌলিক অপ্রকাশিত লেখা পাঠান।
ankurishapatrika@gmail. com
----------------------------------------------------------------------

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন