।।প্রতিদিন বিভাগ।।
বিশ্বেশ্বর রায়-এর কবিতা
১.
আকস্মিকতা
নদীতীর ভেঙে যায় অন্তর্লীন স্রোতে,
তীরপৃষ্ঠ জানে না তা ভাঙনের আগে।
যেমন জানে না শাখা, হরিৎ পাতারা
কান্ডের অভ্যন্তরে গড়েছে আবাস
কালান্তক ঘূণপোকা। একদা যখন
নব প্রভাতের আলো পত্রপুঞ্জের মুখে
দিতেছিল চুম্বন এঁকে, সহসা তখন
ভুলুণ্ঠিত হল সেই মহীরূহ অকস্মাৎ।
যেমন মেঘশূন্য আকাশ ফেড়ে
নেমে আসে বজ্রনির্ঘোষ ভূমিতলে।
যেমন মধ্যাহ্নের দীপ্র রবি
নিমেষে ঢেকে দেয় কালবৈশাখী মেঘ।
যেমন হাল ভাঙা পাল ছেঁড়া নাবিক
দিশাহারা হয়ে যায় মাঝ দরিয়ায়।
যেমন সাজানো সংসার তছনছ হয়ে যায়
গৃহস্বামীর আকস্মিক প্রয়াণে।
২.
নির্ভুল ঠিকানায়
কোথাও যাবার কথা ছিল? অন্য কোথাও!
ভুল করে এই পথে আসা!
যে তরী অন্য ঘাটে ভেড়বার কথা
ঘাট ভুলে আঘাটায় ভিড়েছে সে শেষে।
সেখানে কি প্রতীক্ষায় ছিল কেউ!
যেমন শবরী ছিল, অহল্যাও!
নাকি কেউ কোনোখানে অপেক্ষায় থাকে না কখনও,
থাকেও নি কোনোদিন কেউ!
এ মধুর ভাবনা নিতান্তই আত্মশ্লাঘা না কি আত্মপ্রবঞ্চনা!
যেখানে গন্তব্য যার
সে ঠিক পৌঁছে যাবে নির্ভুল ঠিকানায়।
যেমন গ্রহ-উপগ্রহ তার নিজস্ব গন্তব্য ছেড়ে
অন্যত্র বিচরণ করে না কখনও।
যদি বা ভ্রান্তি ঘটে জীবনের সরণিতে কারও
অন্তিমে গন্তব্য নির্ভুল।
যত অন্ধকারই হোক পথ তাকে নিয়ে যাবে
নির্ভুল ঠিকানায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন