লেবেল

বুধবার, ১৮ আগস্ট, ২০২১

আফগানিস্তান যখন তালিবানের দখলে... কেমন আছে আফগানিস্তান? কবিতায়—আরণ‍্যক বসু।। মাতৃগর্ভের অধিকার হারাবি তোরা।। Ankurisha ।।E.Magazine ।। Bengali poem in literature

 


আফগানিস্তান যখন তালিবানের দখলে... 

কেমন আছে আফগানিস্তান?


কবিতায়—আরণ‍্যক বসু

মাতৃগর্ভের অধিকার হারাবি তোরা



( " চাই না স্তিমিত সূর্য, রাতের দিগন্তে মরা চাঁদ ; 

আমি চাই সেই মৃত মুখ,

 যার নাম সন্ত্রাসবাদ " )


প্রতিবাদের নাম পঞ্জশির।

 প্রতিরোধের নাম কান্দাহার।

উত্তাল তরঙ্গের নাম জালালাবাদ। 

মুঠো মুঠো শান্তির জন‍্য, সন্ত্রাসবাদের শেষ দেখার  লড়াইয়ের নাম, আফগানিস্তান।


কোনো মা


তৃগর্ভের স্নেহনীড়েই তো দশ মাস দশদিন ছিলি রে অমানুষের দল।

সেখানে তোর কচি হাতে

এল এম জি বা রকেট লঞ্চার ছিলো? এমন সাংঘাতিক সর্বনাশা অস্তিত্ব নিয়ে, তোদের তো  হিটলারের সঙ্গে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে জায়গা পাওয়া উচিৎ! 

নিজের মাতৃভূমি আফগানিস্তানের প্রতিটি সেন্টিমিটারকে শ্মশান বানিয়ে ছেড়েছিস রে নরকের কীট তোরা। কী ভেবেছিস? মানুষের জাগ্রত বিবেক, তোদের তৈরি বদ্ধভুমিতে, তোদেরই  রকেট লঞ্চারে ছিন্নভিন্ন হবে?

এমন কাপুরুষের স্পর্ধা তোরা কোথায় , কোনো ভাগাড়ে শিখলি রে?


১৯৪৮-এর ৩০শে জানুয়ারি, ১৯৭৫-এর  ১৫ ই আগস্ট , ১৯৮৪-র ৩১ শে অক্টোবর,আর মানুষ ও প্রকৃতির গোটা দুনিয়া জুড়ে, যুদ্ধবাজ উন্মাদদের হনন-উৎসব কি আজও শেখাতে পারলো না যে, ট্রিগারে আঙুল রেখে কখনও শান্তির বৈঠক হয় না!

বিশ্বশান্তির  জন‍্য মহাত্মা গান্ধি, নেলসন ম‍্যান্ডেলা, মাদার টেরেজা, ইন্দিরা গান্ধি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ,কমরেড লেনিন,অথবা শান্তির দূত মালালা ইউসুফজাই  হতে হয়। খই ফোটানোর মতো বুলেট বৃষ্টির অর্থহীন আনন্দ থেকে নিজেকে সরিয়ে, নারীর হাতের পরিচিত বর্ণমালা, খাতা-কলম, আর,পায়ের ফুটবলকে সম্মান জানাতে শিখতে হয়। হ‍্যাঁ, শিখতে হয়, তা নয়তো শান্ত ও ঘরপোষা নির্জীব মেয়েরাও একদিন, তোদের চোখে চোখ রেখে, দলে দলে "কাবুলিওয়ালার বাঙালি বৌ" হয়ে উঠতে পারে। সাবধান!


অপেক্ষা কর।

 সন্ত্রাসবাদ ,তালিবান শব্দ গুলো একদিন হিটলার শব্দের মতোই জীর্ণ ও পরিত্যক্ত হবে।

সমবেত মানুষের সুচেতনা , একদিন যে সজীব পৃথিবীর অভিধান লিখবে , সেখানে ছাপার অক্ষরের জমি হারাবি তোরা। ভাষাজননী তোদের নাম মুছে ফেলে -- অন্ন, আশ্রয় , শিক্ষা, স্বাস্থ্য ,কাজ -- এইসব শব্দকে মহাদিগন্ত এনে দেবে । 


না,কোনো মাতৃগর্ভেই তোদের উত্তর প্রজন্মের বীজ আর কখনও বোনা হবে না। 


প্রতিবাদের নাম পঞ্জশির।

প্রতিরোধের নাম কান্দাহার ।

উত্তাল তরঙ্গের নাম জালালাবাদ ।

মুঠো মুঠো শান্তির জন‍্য, সন্ত্রাসবাদের শেষ দেখার লড়াইয়ের নাম--

 আফগানিস্তান। 



৪টি মন্তব্য:

  1. সুন্দর এক বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন কবিতায়।

    উত্তরমুছুন
  2. কী অসাধারণ শুরুটাই হয়েছে এই কবিতার ! প্রথম চারটে লাইন পড়তে পড়তেই রক্তে উত্তাল তরঙ্গ উঠলো ! তারপর কবিতার প্রতিটি শব্দ -- প্রতিবাদ আর প্রতিরোধে সব মানুষকে রাস্তায় নেমে ঝড় তুলতে শেখাবে।গান্ধিজী,শেখ মুজিব ও ইন্দিরা গান্ধি হত‍্যার তারিখগুলো কী অসামান্যভাবে এনেছেন !আপনার প্রার্থনাই যেন সত্যি হয় কবি।কোনো মাতৃগর্ভেই যেন এই সন্ত্রাসীদের বীজ আর বোনা না হয় !সন্ত্রাসবাদ ,তালিবান এই শব্দগুলোর বদলে ভাষাজননীর পরম নিশ্চিন্ত কোলে থাক-- অন্ন ,আশ্রয়, শিক্ষা ,স্বাস্থ্য,কাজ ..শুধু এই শব্দগুলো।🙏
    আমার নতজানু শ্রদ্ধা নেবেন কবি।🙏🙏

    উত্তরমুছুন
  3. সুন্দর একটি প্রতিবাদী কবিতা। মানবতাকে সুন্দর করার
    দিকনির্দেশ।

    উত্তরমুছুন
  4. সুন্দর একটি কবিতা। চরম সন্ত্রাসবাদ ও মানবতা
    বিরোধী কর্মকান্ডের ঘোর প্রতিবাদ।

    উত্তরমুছুন