লেবেল

মঙ্গলবার, ২১ জুলাই, ২০২০

নির্বাচিত ছড়াগুচ্ছ।। সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী






 মাছ 

কৈ মাছ 
কই পাই 
মাথা গেছে গুলিয়ে, 
ভাব দেখে 
ডাকে ব্যাঙ 
দুই গাল ফুলিয়ে |

পুটি মাছ  
শাড়ি পরে 
কম জলে ধরে নাচ, 
সাথে নাচে 
ডানকিনা 
হাতে গোনা গুটি পাঁচ |

টাকি মাছ 
ফাঁকিবাজ 
বাইর বুদ্ধির গভীরে, 
কাদায় থাকে 
কাদা নাই 
একটুও শরীরে |

শিং মাছের 
রাগ বেশী 
ক্ষেপে গেলে একবার, 
বিষ কাঁটা 
ফুটে দেবে 
বদ মাছের সর্দার |

শোল মাছ 
গোল করে 
থাকে যে পুকুরে, 
লেজ তুলে 
ছুটে চলে 
সকাল সন্ধ্যা দুপুরে |

যারে পায় 
তারে খায় 
বোয়ালেরা নিষ্ঠুর, 
গোফ কয় 
মুখে তাই 
কাজ করে দুষ্টুর |

খাল বিল 
নদী নালা 
ডোবা দীঘি পুকুরে, 
ভয়ে ভয়ে 
থাকে তারা 
কে জানি কি করে |

ধরা খেলে 
মাফ নাই 
বটি দিয়ে মুন্ড, 
কেটে কেটে 
খুশি মতো 
করা হবে খন্ড |

তার পর 
তেলে ভাজা 
নুন মরিচ মিশিয়ে , 
কি মজা 
তুলো ধুনা 
দুই গালে পিষিয়ে |


তেল 


এ জগতে হায় 
সেই বেশী পায় 
তেল মর্দনে যিনি পাকা, 
কোনো কিছু তার 
লাগেনাকো আর 
জং ধরে নাকো তার চাকা |

তেলের কৌশল 
ভালো যিনি জানেন 
সমস্যা তার নাই কিছু, 
অসম্ভব যতো 
সম্ভব করেন 
অনেকে ঘোরেন পিছু পিছু |

তেলের স্পর্শ 
জাদু যেনো ঠিক 
করে ফেলে তেলতেলে, 
যেখানে চলেনা 
সূচের অগ্র 
সেখানে কুড়াল চলে |

দেখে মনে হয় 
সারা দেশময় 
তেলেরই দামই বেশী, 
গোবর গণেশ 
চেয়ারে আসীন 
তাইতো দেখি রাশি রাশি |

জয় হউক তেলের 
তেলের হউক জয় 
দেশ ভরে যাক তেলে, 
তেলের ব্যবসা 
সব চেয়ে বড় 
হয়ে গেলে সব তেলতেলে |

কিন্তু একটা 
বিপদের কথা 
তেলিদের আমি বলি, 
ধূলায় যদি 
তেল পরে যায় 
আঁকড়িয়ে ধরে বালি |

তখন কিন্তু 
যতই তেল মারো 
হবেনাকো কোনো ফল , 
কোনো কৌশল 
আসিবেনা কাজে 
তেল মনে হবে যেনো জল |





জামাই ষষ্ঠী 


ও জামাই 
দারুন কামাই 
হবে এবার ষষ্ঠীতে,
শশুর বাড়ি 
মধুর হাড়ি 
যাচাই সে তো কষ্টিতে |

ইলিশ খাবে 
চিংড়ি খাবে 
বালিশ মিষ্টি গোটা কয়, 
থাকলে শালী 
আরো দারুন 
সংখ্যা হলে গোটা ছয় |

আম কাঁঠালের 
আসবে বাটি 
সাথে খাঁটি দুধের দই, 
পেটে জায়গা 
হউক বা না হউক 
শালা শালী দেবে মই |

আরেক কথা 
রাখবে মনে 
পায়না যেনো করোনা, 
যতই করো 
জামাই জামাই 
ধরলে কিন্তু ছাড়বেনা |

নিজের বাড়ি 
শশুর বাড়ি 
সকল বাড়ির পাস কেটে, 
চুপি চুপি 
করোনা কিন্তু 
সকাল বিকাল যায় হেঁটে  |

তাইতো বলি 
খুব ভালো হয় 
বাদ দিয়ে দাও ষষ্ঠী,  
থাকলে বেঁচে 
আসছে বছর 
করবে দ্বিগুন তুষ্টি |






পাঁচালি 


এক দিকে 
ওৎ পেতে 
মাছরাঙা সানায় ঠোঁট, 
ছো মেরে 
উড়িয়ে নেবে 
তাই ডানকিনা পুটি টেংরা 
বেঁধেছে জোট |

অন্যদিকে 
বোয়ালেরা চোয়াল সানায়
সাদা বক বসে আছে 
ওৎ পেতে 
যেন কোনো এক সাধক তপস্যি, 
বড়শি হাতে 
ধ্যানে মগ্ন 
চেয়ে আছে 
নিরামিষ সন্যাসী |





ছড়া 


খিল খিল 
হাসে আর 
বিড়বিড় কথা কয় , 
নেচে নেচে 
গায় গান
সারাক্ষন মেতে রয়। 

শুনে নাকো 
মানা কারো
কতো কি যে ব্যস্ত, 
কাজ করে 
সারাক্ষন 
আহা কি যে মস্ত। 

মিছে মিছে
ঘর বানায় 
ডালপালা বালিতে, 
রান্নার 
জুড়ি নাই 
ভাত রেঁধে হাড়িতে। 

দিনরাত 
মাথায় তার 
কতো কতো ভাবনা, 
যা খুশি 
তাই করে 
অভিমান কান্না। 

রাগ করে 
ঘন ঘন 
তুলকালাম কান্ড, 
কাছে পেলে 
ছুড়ে দেয় 
হাঁড়ি পাতিল ভান্ড। 

শাসনের 
ভয় তার 
নেই মোটে একদম, 
আদরের বলে 
সবে 
ভালোবাসে হরদম। 

আমাদের 
খুকুমনি 
আছে বড় আদরে, 
এই ঘর 
ওই ঘর 
থাকে সদা সাদরে। 








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন