ছায়াতট
আজ আর মেনে নেই, কোথায় ছিল আমাদের
জন্মভিটে, আদিম জলরেখা-
শুধু মনে আছে, বোধিপাহাড় পেরিয়ে
আমরা যেখানে জল আনতে যেতাম
সেখানে ফুটে থাকত গুচ্ছ গুচ্ছ রঙিন ফুল,
রাত্রির রেখে যাওয়া জ্যোতস্নালেখা...
পাথুরে রাস্তা ধরে অনেককাল হাঁটতে হাঁটতে
একদিন খুঁজে পেলাম এই ছায়াতট,
মনেহল যেন, এখানেই ছিল আমার খেলাঘর, নতুন ব্রম্মান্ডে যাওয়ার আগে এখানেই হয়েছিল আমার হাতেখড়ি,
নেওয়া হয়েছিল যুদ্ধজয়ের শপথ...
সিন্ধুতট
গভীর থেকে তুলে আনলাম কিছু নুড়িপাথর
বৃষ্টিদাগ-দগ্ধদাগগুলি মুছে সাজিয়ে রাখলাম টেবিলের ওপর,
আমার দিকে স্থির চোখে তাকিয়ে থাকল ওরা
অভিমানে দূরে চলে গিয়েছিল যারা...
বদলেছে মন, বদলেছে শরীরী আদল
তারপরও ওরা চেনা চোখে তাকালো আমার দিকে
খুঁজে দেখল সিন্দুক, পুরনো দিনের মখমল—
এই সিন্ধুতটে আমার জন্মের পর থেকেই
চারপাশে চলছিল যত ধ্বংসলীলা
সেই ইতিহাস থেকে ফিরে এই যে আবার নদী হওয়া, তার ছবি আঁকবে কোন চারুকলা!
এ'জীবন
কারো কাছে অতিরঞ্জিত এ'জীবন
কারো কাছে সাদামাটা
যে যা ভাবে ভাবুক, আমার জীবন ঘোরে
বনফুল থেকে বেলেঘাটা...
তোমরা যে স্বরগমে গাও গান
আমি গাই তার বিপরীতে
আপন খেয়ালে গেয়ে যাই
বৈশাখ থেকে গাঢ় শীতে...
কেউ কারো নই বুঝেছি আগেই
তোমরা বোঝনি বলে আজও মন
বেঁধে রাখো মায়াবী ডালে, দ্যাখো
আমি আর হইনা উচাটন...
রঙিণ ঘরে রঙিণ সেজে থাকে যারা
তাদের দলে আমি নেই
আমার ভেতর যত ফুল ফুটে থাকে
জীবন ভাসে তাদের রঙ-সুগন্ধেই...
বিশ্রাম
ডিঙা নিয়ে ঘুরিফিরি এদেশ-ওদেশ
সন্তোষপুর থেকে চাঁদসদাগরের বাড়ি
ডিঙায় চাপানো থাকে একরাশ ভোর
সঙ্গে কিছু মরসুমি ফুল, রাগ দরবারী...
কতযে বসন্ত গেল এপার-ওপার করে
স্বপ্ন এসে কেড়ে নিয়ে গেল কত ঘুমের আরাম
এখনো পাইনি খুঁজে শোকহীন সেই গ্রাম
যেখানে বাসনা চেয়েছে তাঁর শেষ বিশ্রাম...
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmal. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন