দেবাশীষ ঘোষ
------------------
------------------
মৃত্যু অঙ্ক
বুকের মধ্যে শব্দ শুনি
একটু খানি,
বন্ধ রাস্তা সরীসৃপ।
শব্দ শুনি অঙ্ক কষার
অঙ্ক দেখার
মৃত্যু মিছিল হিস্ হিস্।
দলে দলে গায়ে-গায়ে
শহর থেকে গাঁয়ে
ছিল মানুষ মানুষ ঠিক ঠিক।
ঘন্টা কেটে দিন
আবার একটা দিন
অন্ধ পথ অন্ধ বাঁচা হিম হিম।
লাল সূর্য জ্বালিয়ে
উঠুক আবার সব পুড়িয়ে
নতুন ভোরের দমকা বাতাস
মাঝে মাঝে
মাঝে মাঝে মন কেমন করা
সুখ পাই।
মাঝে মাঝে সুখ আর অসুখের
মাঝে থাকি।
মাঝে মাঝে অসুখের পাশে পাশে
রিন্ রিন্ শব্দ।
মাঝে মাঝে পাশে থেকে দুরের গন্ধে হাহুতাস মন।
মাঝে মাঝে শরীরে শরীর খোঁজে
অযত্ন খেলা।
মাঝে মাঝে খুঁজেই হারাই
হারাই বোধ।
মাঝে মাঝে শুধু মাঝে মাঝেই
সূর্যোদয়
আমার বাড়ির সব আলো আমি নিজে নেভাই,
আর প্রতিদিন ভাবি ,
এতো আলো রোজ জ্বালাই।
ওই দুরে কাঁঠাল গাছের ফাঁকে রাস্তার আলো জ্বলে,
তাকে কোনোদিন ফিরেও দেখিনি,
দুরছাই! সিমেন্টের পোস্টে তার
জড়ানো একটা মাত্র আলো।
এখন ছাদের কিনারে বসে
দূরে পুট করে একটি শব্দের
অপেক্ষায় থাকি।
ও পাড়ার কালো লোকটা
পুট শব্দ করে আলো জ্বালালো-
-আলো জ্বললো অন্ধকার
ভেদ করে-
-আলো জ্বললো জলের ছায়ায়-
- আলো জ্বললো কাঁঠাল পাতার
গা- গড়িয়ে আমার মুখে চোখে আর ...
ঘাড় কাত করে ধ্রুবতারা কালপুরুষের মিট্ মিট্ জ্বলা দেখি
জীবনের সব অন্ধকার-
দলা পাকাতে পাকাতে পৃথিবী
পরিক্রমা করছে--
হে মানুষ, মানুষ বন্ধ কর এই চলা-
বন্ধ কর অন্ধকারের এই পৃথিবী
ভ্রমণ ।
বন্ধ কর অন্ধকারের সব নড়াচড়া-
বন্ধ কর অন্ধকারের দ্বার-
আলো- শুধু আলো দাও
এতো আলো, শুধু আলো-
আরও আলো জ্বলুক
অন্য বিদেশ
আমি কখনো বিদেশ দেখিনি,
আমার কাছের বিদেশ,
পাশের বিদেশ,
দূরের আর উল্টো দিকের বিদেশ।
একটা গোলার্ধে হাত রেখে
অন্য গোলার্ধে চোখ রাখি,
আর ভাবনায় চোখ রেখে মন,মনই।
মন মিশে যায় বিদেশিতে--
ওই রকম সাদা মানুষ, কালো মানুষ
আর অনেক দুরের লাল মানুষ।
হাত রাখি, চোখ রাখি, মনও...
রক্তোস্রোতগুলো একইরকম,
দুঃখগুলো একইরকম, ভালোবাসাগুলো বোধহয় একইরকম।
আমার পড়ার টেবিলের সামনে
একটা ভূমধ্যসাগরের একটা ছবি ছিলো,
রোজই দেখতাম, দেখতে দেখতে
নিজের হয়ে ছিলো —
আমার নিজের একটা তেঁতুলতলা ছিলো,ঝুলেপড়া কামরাঙা গাছ ছিলো, বড় গাছের মোটা শিকড়,
ছিলো দু-দিকে শান বাঁধানো সব
উজাড় করা ঘাট।
গাছতলা,মোটা শিকড়, শান বাঁধানো ঘাটে আর আমি যেতে পারিনা। এমনকি যেতে পারিনা
নিজের চোদ্দপুরষের ভিটেতে।
মাঝ রাতে বুক কাঁপে, অন্য আকাশের নিচে শুয়ে দেখি
বাঁ-হাতের তর্জনীর মাথায়
কালির দাগ।
দাগটাই আমাকে বিদেশি বানিয়েছে।
আমার কোনো পাসপোর্ট নেই
নিজের চেনা দরজায় পা রাখার।
আজ আবার পা রাখার জন্য
হেলে পড়া পতাকাটাকে একবার
বাঃ। অনেক দাগ কবি!!
উত্তরমুছুন