সুধাংশুরঞ্জন সাহা
ঠিকানাবিহীন ঠিকানা
প্রিয় শব্দরা যত দ্রুত ঠিকানা খুঁজে পায়
ভালোবাসা ঠিক ততটা না ।
কেউ মানুক আর না মানুক, আদতে
ভালোবাসার অনেক হ্যাপা ।
বারেবারে ঠিকানা বদলেও তার হদিশ মেলা ভার।
মহানগর থেকে মফস্বলের আল,
রাস্তা থেকে গলি, গলি থেকে উপগলি,
আর খুঁজতে খুঁজতে রাত্রি নেমে আসা...
ততক্ষণে হৃদয়ে ঘন কুয়াশা ।
গাছের আশেপাশে ভুরি ভুরি আগাছা
এতোসব সহ্য করে তবে ভালোবাসা...
সে এক কন্টকিত ঠিকানাবিহীন ঠিকানা ।
আমার প্রিয় বর্ণমালা
আমার বুকে কিছু বৃষ্টি, কিছু কবিতা
আর কিছু বর্ণমালা আঁকা আছে ।
আঁকা আছে অরণ্যের কিছু আর্তনাদ,
নদীর কিছু চিৎকার অথবা বাতাসের কিছু হাহাকার ।
আঁকা আছে মৃত্তিকার কিছু অপমান
মাতৃভাষার বুকফাটা আবেগ ।
আকাশে মেঘ ঘন হলেই
আমার চোখে প্রিয় বর্ণমালা ঝেঁপে আসে কান্নায়...।
বিভ্রান্তি
মনে কোথাও কি গোপনতাটুকু লেগে আছে?
ললাটে, নয়নে, হাতে কিংবা ঠোঁটে
কোথাও কি ছোঁয়াটুকু লেগে আছে ?
প্রথম বসন্ত, প্রথম শ্রাবণ
কিংবা প্রথম হেমন্তের অরণ্যে
কোথাও কি ছায়াটুকু লেগে আছে?
ঘন কুয়াশায় ঢাকা মুখে
সবই কি বিভ্রান্তি ! হায় বিভ্রান্তি !
সময় অসময়ের বিবাদ
যারা স্বপ্নকে নিপুণ শব্দে আঁকে
কিংবা নানা রঙে স্বপ্নকে রঙিন করে,
আমি সেরকম যাদুশিল্পী নই
আমি শুধু সাদাকালো ছবি আঁকি,
মূক বধিরের ।
চোখে নয়, যারা স্বপ্ন বোনে মনে ।
বেহালা অন্ধ বিদ্যালয়ের রাস্তা ধরে
হাঁটতে হাঁটতে মাথার ভিতর এক ব্যর্থ কবি
পাগল চাকার নিচে পিষ্ট হয়
সময় অসময়ের বিবাদে
বিচিত্র মানচিত্র
হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন পাতায় লেগে থাকা আতঙ্কের পূর্বাভাস,
আর ডুপ্লেক্সের ঘোরানো সিঁড়ির রহস্যআলোয়
কোথাও কি কোন পারস্পরিক দ্বন্দ্বের
জ্যামিতি আছে ? নাকি এ এক বিচ্ছিন্ন কলোনি !
বনসাই বসবাসের বিচিত্র মানচিত্র।
যার পরিচয়লিপিতে কোন তারিফ নেই ।
শিকড়ে লেগে নেই কোথাও মাটির অস্তিত্ব ।
বোধের সীমানায় নেই সাঁকোর উচ্চারণ ।
শুধু প্রচ্ছদে লুকনো মেঘে মুঠো মুঠো স্বপ্ন,
আর স্বপ্নের উড়ান ।
খুব ভালো কবিতা। কবি ও সম্পাদক মহাশয়কে অভিনন্দন।
উত্তরমুছুন