।। প্রতিদিন বিভাগ।।
।। মে সংখ্যা।।
।। প্রতিবাদী কবিতা -১২।।
নতুন সূর্যের নিচে
সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী
বদলে গেছে সেই দিন—
যখন টোকাই মানে ছিল শুধু ধূসর অস্তিত্ব,
উপেক্ষা আর অনাদরে কাটানো কঠিন সংগ্রাম।
দিন ফিরেছে—
সময়ের ঘড়ি ঘুরে সেই অবহেলিতদের হাতে আজ ক্ষমতা,
তাই, সেও আজ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে
সমাজের প্রথম সারিতে।
"চাই ভাত, চাই রুটি;
চাই বস্ত্র, চাই বিদ্যা, চাই স্বাস্থ্য;
চাই বাঁচার অধিকারও!"
জোরালো কণ্ঠে ভেসে আসে দৃপ্ত মিছিলের রণধ্বনি।
পথঘাটে আজ আর কেউ তাদের দেখে মুখ লুকায় না,
যেন সমাজের ঘুম ভেঙেছে আজ।
নোনা ধরা প্রাচীরে লেগেছে কঠিন আঘাত,
টোকাইয়ের চোখে আজ অন্য এক পৃথিবীর মানচিত্র।
টোকাই এখন সমাজ-শিক্ষক,
সংগঠক, স্বপ্ন-স্রষ্টা—
শুধু নিজের জন্য নয়,
তার আশপাশের প্রতিটি মুখের জন্য সে আজ বদ্ধপরিকর।
যারা একদিন অবহেলার ভারে ভেঙে পড়েছিল,
আজ তারা একতাবদ্ধ।
সে গড়ে তুলছে পথশিশুদের পাঠশালা,
গড়ছে শ্রমিক ইউনিয়ন—
অধিকারের স্তম্ভে এক নবীন সমাজ।
টোকাইয়ের সংগ্রাম আজ আদর্শে পরিণত,
তার দাবির সামনে নত পুঁজির খড়্গ।
প্রতিটি দেয়ালে আঁকা তার মুখ,
তার দ্রোহী কণ্ঠ—
নেই ভয়, নেই আপোস,
আছে দৃঢ় বিশ্বাস, ভিন্ন প্রত্যয়—
যা দিয়ে এতদিনের শোষণের প্রাচীর ভাঙা গেলেও,
পুঁজির কালোছায়া ছিল সুদূর প্রসারিত।
তাই, দেরিতে হলেও শাসকের চৈতন্য ফিরেছে।
আজ নতুন সূর্যের নিচে
টোকাই শুধু একটি নাম নয়—
সে ইতিহাস, সমাজের নতুন দ্রষ্টা।
যে প্রমাণ করে—
প্রান্তিকতা থেকেও
গণমানুষের নেতা হওয়া যায়, দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া যায়,
নতুন ভোর গড়ে তোলা যায়,
হওয়া যায় সমাজ-রূপকারও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন