অঙ্কুরীশা-র পাতায় অন্য ক্যানভাসএর ২০তম বছর উদযাপনের বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে...আজ শুরু হলো দুই বাংলার অনলাইন গল্প উৎসব~"স্বল্প কথার গল্প'"।উদ্বোধক হিসেবে পেয়েছি স্বনামধন্য কথা সাহিত্যিক সম্মাননীয় তপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে। বিশেষ অতিথি গল্পকার হিসেবে পেয়েছি সম্মাননীয়া মৌ মধুবন্তী এবং সপ্তদ্বীপা অধিকারী কে।
ইচ্ছে-অনিচ্ছে
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়
এক-একদিন ইচ্ছে করে আকাশের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত টহল দিয়ে যাচ্ছে যে সাদা মেঘের দল, তাদের সঙ্গে গল্প করি দু'দণ্ড। এক-একদিন ইচ্ছে করে সবুজ মাঠের ভিতর লাফিয়ে বেড়াতে থাকা ঘাসফড়িংদের সঙ্গে দীর্ঘ ভাব জমাতে। কখনও ইচ্ছে জাগে ঘুমের ভিতর মন ভালো করে দেওয়া স্বপ্ন দেখি, জেগে উঠে জাবর কাটব সেই স্বপ্নের। একদিন ভেবেওছিলাম একটা টাবুরে নৌকোয় উঠে ঘুরে দেখি নদীর দীর্ঘ গতিপথ। একদিন আলট্পকা উঠে বসতে চেয়েছিলাম বহু রাজ্য পেরোতে থাকা কোনো ড্রাইভারের পাশের সিটে।
ইচ্ছের এরকম দীর্ঘ তালিকার পাশে কিছু অনিচ্ছেও তো থাকে মানুষের।
সেই অনিচ্ছেগুলো বরং অপ্রকাশিতই থাকুক।
সেই অনিচ্ছেগুলো কোনও একদিন বুনো ফুলের মতো রাস্তার দুপাশে ফুটে রঙিন করে রাখবে পৃথিবীটা।
দিকের কাছে কিসের প্রশ্ন
মৌ মধুবন্তী
হাতিটা বসে আছে বনের কিনারে। বনটা বড় নাকি হাতি?
ক্যামেরা হাতে সে ভাবছে কেন হাতিটা চুপচাপ? তার মনের ভেতর কি চিন্তা চলছে? মানুষ কেন হাতির ভাষা বোঝে না?
তার পাশেই তো বড় একটা উইলো গাছ।গাছ কি কথা বলছে? মাথা নেড়ে নেড়ে গাছ কাকে ডাকছে? ক্যামেরাকে নাকি হাতিকে স্বান্তনা দিচ্ছে। হাতির কিসের ব্যথা গাছ বুঝি বুঝতে পেরেছে? প্রশ্নের ঝড়ে গাছের পাতা উড়ে যাচ্ছে হাইওয়ের এপাশ থেকে ওপাশে, কিন্তু প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কোন? পাতা ফিরে আসছে না। মানুষ চলে গেলে আর ফিরে আসে না।
চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের এক পরমানন্দ কবি , জলবায়ু, কবি, নিঃসীমের চরাচরে কোন বন কি আছে যে তাকে দেবে নিবিড় ছায়া, ভালোবাসার, মায়া, কিংবা কবিতার অসংখ্য গৌরবোজ্জ্বল শব্দ!
হাতির ছবিটা তুলে সে চলে গেলো হাইওয়ের দিকে।
বাতাস ও বেঁকে গেলো…
অগস্ত্যযাত্রা
সপ্তদ্বীপা অধিকারী
কলেজ যাতায়াতের সময় প্রতিদিনের মতোই আজো মেয়েটি বলল---" ভালো আছো?"
বাঁধ না মানা খুশিতে আজ সায়নী ভেসে যাচ্ছে।তাই আজ সে জিজ্ঞাসা করল---" তুমি রোজ আমায় কুশল জিজ্ঞাসা করো।কিন্তু সত্যি বলছি,চিনিনা তোমায়!"
মেয়েটি বলল---" অরূপের সাথে গতকালই তোমার বিয়ে পাকা হয়ে গেছে! মানে এনগেজ মেন্ট হল।ওই অরূপের আমি প্রাক্তনী। কুমারী মা।সত্যতা প্রমাণের দায় আমার নয়!"
বলে হাত ধরে থাকা পুচকু ছেলেটাকে কোলে তুলে নিল এবং হনহন করে হেটে চলে গেল।
সায়নী দাঁড়িয়ে পড়ল।সামনের দিকে আর এক চুলও এগোতে পারলো না সায়নী।দিনের পর দিন,বছরের পর বছর সায়নী সেই মাঝপথেই দাঁড়িয়ে আজো।কোনো বসন্তের বাতাসে ওই চুল ওড়ে না আর! বারো মাসই তাঁর কাছে বিষন্ন বিকেল।পাথর হয়ে যাওয়া চোখ দুটো মেলে রয়।চুপচাপ।ঘরে ফেরা তার আর হলো না এ জীবনে!
সায়নীরা জানে না,তাঁদের এই অগস্ত্য যাত্রার জন্য আসলে বিশ্বাস আর ভালোবাসাই দায়ী--- কোনো পুরুষ নয়!
খুব ভালো লাগলো। তপন বন্দ্যোপাধ্যায় এর গল্পের আমি অনুরাগী কিন্তু সপ্তদীপা অধিকারী ও মৌ মধুবন্তীর গল্পও খুব বসলো লাগলো।
উত্তরমুছুনসিদ্ধার্থ সাঁতরা
সত্যিই ইচ্ছেগুলো কেন জানি না লেখকের সাথে মিলে গেল।🙏
উত্তরমুছুনসুন্দর সব গল্প। অভিনন্দন অনেক।
উত্তরমুছুনঅসাধারণ গল্প👍👍👍👍👍সবাইকে অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।।।।
উত্তরমুছুন