স্রষ্টার সৃষ্টি
আশ্চর্য ঘটনা এক দেখলাম কাল সন্ধেকালে
সূর্যাস্তের লাল রং নদীর ঢেউয়ে কিছু লেখে
সেই লাল ঝিলিমিলি যেন কিছু অক্ষরের মালা
আসলে কবিতা সেটি সূর্যদেব গিয়েছেন রেখে
দিনের পাখিরা ফেরে ডানা নেড়ে যে যার আলয়
বৃক্ষকাণ্ডে তারা সব গান লেখে ছন্দ-মিল-লয়
সেই গান গায় ভােরে আমি কিন্তু তখনও জাগিনি
জেগে উঠে ভাবি এটা কোন রাগ কিংবা রাগিণী
দিঘিটার জলে ওই পদ্ম এক টকটকে লাল
চারপাশে পাতাগুলি বৃত্তাকারে ঘিরে আছে তাকে
দুটো টিয়া উড়ে এসে দোল খায় পদ্মপাতায়
প্রকৃতি নিজের মনে এরকম কত ছবি আঁকে
কেউ কি লক্ষ্য করে প্রকৃতির এত কারসাজি
আমি এক অপােগণ্ড আড়চোখে নজর রাখছি
প্রকৃতি সৃষ্টি করে কত কিছু আপন খেয়ালে
পদ্য লেখে, গান করে, ছবি আঁকে, আকাশ সাথী।
অলংকরণ- বিমল মণ্ডল
পথের দিশা
পথের কি আর অন্ত আছে,
পথ চলে যায় পথের মতাে
আমিও খুঁজছি কোথায় শেষ
হাঁটতে থাকি ইতস্তত
পথিক কাউকে শুধােই গিয়ে,
‘কোনখানে শেষ, জানেন মশায় '?
হাসল সে জন, 'সব মানুষই
পথ খুঁজে যায় জীবদ্দশায়'।
অলংকরণ- বিমল মণ্ডল
সিঁড়ি
দেখতে পাচ্ছাে একটা লম্বা সিঁড়ি
ঘাড় অনেকটা উঁচু করেও জানতে পারছ না তার শেষ ধাপ কোথায়
তবু প্রথম সিঁড়িতে পা রাখাে
হয়তাে একটু টলে উঠবে পা
বুঝতে পারছ না তােমার পাশে কেউ আছে কি না
সামলে নিয়ে পা রাখাে দ্বিতীয় ধাপে
তখনও টালমাটাল পা
তুমি খুঁজছাে আশেপাশে আর কেউ আছে কি না
তৃতীযের পর চতুর্থ ধাপে পা রাখার সময় মনে হল
আশেপাশে দু-চারটে ধুপধাপ পায়ের শব্দ
তুমি কাউকে দেখতে পাচ্ছাে না
তবু পা রাখাে পঞ্চম ধাপে
শব্দগুলাে একটু প্রখর হচ্ছে।
তারপর ষষ্ঠ পা
আশেপাশেই শুনছ শব্দগুলাে, কিন্তু চোখ পড়ছে না কাউকেই
ক্রমে সপ্তম, অষ্টম, নবম, দশম...
কেউ না কেউ আছেই পাশে নইলে কাঁধে কাঁধ ঠেকে যাচ্ছে কেন
হঠাৎ কি হড়কে গেল পা, থামলে কেন হঠাৎ
এমন দু'চারবার হড়কে গেলেও আবার সামলে নিয়ে উঠতে হয়
একাদশ পেরিয়ে দ্বাদশে রেখেছ পা
কারও সঙ্গে কি দেখা হয়ে গেল নইলে কেন শ্লথ হয়ে গেল গতি
এয়ােদশ, চতুদশ, পঞ্চদশ...
কী হল হঠাৎ, পড়ে গেলে নাকি
ওঠো, আবার পা রাখখা, চরৈবেতি, চরৈবেতি, চরৈবেতি...
যদি বিশ্বাস রাখাে
নিশ্চয়ই একসময় কোথাও না কোথাও শেষ হবে সিঁড়ি
যেখানে তােমার গন্তব্য।
এর নাম জীবন।
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন