দুঃসময়ের কবিতা -১৪
অসীম ভুঁইয়া
১.
মৃত্যু
মৃত্যু কারুর একার সম্পত্তি নয়
যে, গনগনে আগুনের বলয়ে ঢুকে-
আত্মহত্যার হুমকি দেবে
আর বলবে, 'আমার মৃত্যুর জন্য তুমিই দায়ি।'
মৃত্যু এক সমাহিত নীতিকথা
যার ভেতর সর্বাত্মক বিচারক প্রতিনিয়ত
জন্ম পড়ে নেয়
যেমন কাকভোরে আলোপোড়া পতঙ্গরা
নেশা ভেঙে স্তব্ধতার গাঁটছড়া বাঁধে, ঠিক তেমনি।
২.
কথা
কথার রূপভেদ ভাবতে ভাবতে বিমর্ষ হয়ে পড়ি।
কথার ভেতর কখনো অভিমান, অভিসার, অভিমিনতি
কখনো বা নিপুণ জালের বিন্যাস, ফাঁদ!
কখনো আবার সন্ধের দিকে সমুদ্রের সূর্য আহার
কথা 'নৈঃশব্দ্যের প্রেম', ছেড়ে যাওয়ার ইশারা
আর হলুদ পাখির ডাকে ফেরার ইঙ্গিতও
কথা মৃত্যুময়তার 'সোনার কাঠি'।
জন্মবোধের নিরলস প্রবহমানতা...
কথা আরো কত কী! কতশত বালুকাবেলা!
আমাদের এরই ভেতর বাঁচার অন্বেষা
পথ ভেঙে ভেঙে ঢেউ ভুলে ভুলে
সূর্যোদয়ের দিকে হেঁটে যাওয়া, ভেসে যাওয়া এবং
মিশে যাওয়া এক অমোঘ আকর্ষণের সাথে।
৩.
ঘুম
ঘুমোতে ইচ্ছে করে না আর
কারণ ঘুমের মধ্যে তো অকারণ নীরবতা
কত কত ভাবনা-অভাবনা ও কাটাছেঁড়ার
রোদরঙা নুড়িগুলি তখন খেলা বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়।
ঘুম তো এক চিন্তা-চেতনাহীন নিঃসাড় প্রবাহ।
এক জীবনে এত অন্ধকার ও তার উত্তরণের কথা
ভাবতে ভাবতেই সময় বড় কম পড়ে যায়
স্বল্প বুদ্ধি স্বল্প হৃদয়ের হার্ডডিস্কটা
বারবার হ্যাং করে যায়।
চিন্তক বড়ি তো মুসুর দানার মতো
রান্না করলেই ডাল ভাত
আর ফেলে দিলেই এঁটোপাতা
এদের দিয়ে একটা পূর্ণসংখ্যা লেখা যায় না কখনো।
ঘুম তো আসবেই ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রেক্ষিত ভেঙে
নাহলে আনন্দ ও বিষাদের ঠোঙামোড়া স্বপ্নগুলো কীভাবে নখ ফুটবে কাগজের শরীরে !
গোপনতা সময়েরই এক ভগ্নদূত
তাই এ জাগরণ অনন্ত বোধের সন্ধানে-
ঘুরে মরবে এক চিমটে আলো নিয়ে।
আরও পড়ুন 👇👇
https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/06/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_7.html
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন