দুঃসময়ের কবিতা-১৫
তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য
১.
পরতে পরতে জমাট সংসার
সেই ময়েটির সব গল্পের প্রসব রান্না ঘরেই।
গরম তেলে ছ্যাঁক করে ওঠে লঙ্কা ফোড়ন
এই তো মৃদঙ্গ বাজে যেন তালে তালে মেতে ওঠে কালের রাজা। পেঁয়াজ কাটতে কাটতে কান্না ভেজা চোখ।
পেয়াজের ঝাঁঝ লঙ্কার আঘাত ছাড়া নেই তার ব্যক্তিগত শোক।দুবেলা হাড় দুখানা জ্বালিয়ে
রান্না হয় বেশ রসিয়ে। কেউ কেউ বলেন ঝাল কম।
মনে মনে মেয়েটি বলে সব ঝাল চুরি গেছে মুখে মুখে। সমুদ্রের পাড় সাজানো বালির সংসার।বারুদে শ্বশুরবাড়ি যাওয়া ছিল খুব দরকারি। মেয়েটি বিয়েতে পরেছিল আগুন রঙা শাড়ী।
২.
হে ঈশ্বর
তোমার আসনে বসে বারবার আমাকে ভরাতে চেয়েছি।শূন্য থেকে পূর্ণ আবহমান যতনে তুলে রাখি পুণ্য।তোমার আধারে আমাকে ধারণ করেছি।
তোমাকে তো ভাবিনি কখনো। আত্মীয়তা যে আত্মার, ঈশ্বর কেবলই তার।অন্ধকার হলে আলো জ্বালি।। আলো পেলে সব ভুলে নিজেকে রঙ করে যাই। আমাকে যে চালনা করে সে কোথায় বাস করে? আমার ধ্বংসের আগে পরে অন্ধ কী সে জন? যে জন বেঁচে দেয় অচেনা সংশয়ে! ভয় হয় কোনো কিছু সত্য নয়, কিছু নয় মিথ্যা।জীবন এক দীর্ঘ কবিতা। সব অলংকার ছেড়ে পড়ে আছে অভিনয় যাপন।ব্রত করি দেবতার কুড়িয়ে রাখি ভুল থেকে ফুল সাজাবার স্বপ্ন । সংসার সম্পর্ক বিপণন রাজ্যপাট আপন মন্দিরে বাঁধা দেবতা। অবসাদ জমে শ্রাবণ মেঘের কোলে।হে ঈশ্বর ভাবিনি তো তোমার কথা।যত ব্যথা ভুলে মুখ তোলে নিভৃত চরণ প্রণয় ব্যাকুল স্বভাব।দিইনি কোন দাগ জ্বালিনি অক্ষর চিরাগ।
আরও পড়ুন 👇👇
https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/06/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_33.html
তন্দ্রার কবিতা দুটির মধ্যে একটি গোপন অভিমান উঁকি মারে রান্নাঘরের আড়াল থেকে । সংসারের জাঁতাকলে চাপা পড়া ইচ্ছে পূরণের করুণ গোঙানি পাঠকের মন বিষণ্ণ করে । পুরুষের আস্ফালন লজ্জায় নত হয় । আয়নায় দেখে নারীর মুখ ।
উত্তরমুছুনজননী জায়া ভগিনী । দেবতা এসে চিনিয়ে দেন স্বরূপ ।
তন্দ্রার কবিতার মধ্যে একটা পবিত্র ভাব থাকে । পূজার আবেশ থাকে । তার কবিতা পড়লে পাঠক নিজের ভেতরে নিজেকে ছুঁতে পারে । আর এখানেই
কবিতাগুলি পূর্ণতা লাভ করে ।