লেবেল

শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১

আজকের দীর্ঘ কবিতা ।। পরিচিত ও অপরিচিত — শ্রাবণী বসু।। Ankurisha ।। E.Magazine ।। Bengali poem in literature ।।

 





  আজকের দীর্ঘ কবিতা 


পরিচিত ও অপরিচিত

শ্রাবণী বসু


নামহীন এক ছোট্ট গ্রামেতে

 ছোট্ট নদীর ধারে,

গড়েছিল ওরা বসতি সেখানে 

ক-টি পাড়া একাকারে।


ছিলোনা তাদের বিলাসিতা কোনো

না ছিলো সুখের বাসা,

দুইবেলা ওরা ফসল ফলাতো

ওরা মাঠের দেবতা, চাষা।


শীতের উঠোন সোনালী ফসল

আনন্দ ভরপুর,

চড়ুই শালিখ পোষ্য পাখিরা

মাতিয়ে রাখতো দুপুর।


বর্ষার মাঠে লৌহ শরীর 

কাদা-জলে বুনে ফসল,

আকাশভাঙা বৃষ্টি ভিজতো,

আনন্দে শতদল।


দুঃখে সুখে মিলেমিশে ছিল

এপাড়া ও পাড়া সব ,

শত অভাবেও ভাবের অভাবে

কাঁদেনি তো শৈশব!


পৌষ পার্বন ,টুসু পরবে

গ্রামবাসী এক হয়ে,

পালন করতো উৎসবগুলি

মলিনতা যেতো ধুয়ে।


গ্রামের শিশুরা এক পাঠশালে

 এক সুরে নামতায়।

ভূগোল বইয়ের পাতায় পড়ে,

চাঁদ, গ্রহ ,তারকায়।


এমনি করেই বছর মাসেরা

লিখেছে সালতামামি,

'ওর' কাছে 'সে' খুব প্রিয়জন

'তার' কাছটিতে 'আমি'।


এমনি করেই একের জন্য

অপরের ছিল টান,

বছরের পর বছর এভাবে

ভরে উঠেছিল গান।


কিন্তু কী হলো হঠাৎ করেই

কালো  কালো দিন এলো,

কোরোনা অসুখ মৃত্যু মিছিলে

গ্রামগুলি ভরে গেল।


মানুষ ছিলো বন্ধুর মতো,

হঠাৎ অচেনা সব,

কেউ কারো আর আপনার নয়,

মৃত্যুর ওঠে রব।


ছোটো নদীজলে স্নান ,পান নয়

ভাসছে হাজারো লাশ,

বেওয়ারিশ এদিক -সেদিক

দেখছে নীরব আকাশ।


এতদিন যারা নিজের মতো

কাছে টেনে নিতো হাত,

আচমকা সব অ-পরিচিত

দিনমানে এ যে রাত!


মারি রোগ এসে গুলিয়ে দিলো,

ভুলিয়ে দিয়েছে সব,

আপনার মতো ছিলো যে মানুষ ,

সে দেহ এখন শব।


সম্পর্কের সুতোয় কখন

কিভাবে যে পড়ে টান,

মুহূর্তে সব অচেনা লাগে,

মৃত্যু ছুঁড়লে বাণ।


----------------- ------------------------







৫টি মন্তব্য:

  1. সীমাহীন কৃতজ্ঞতা। অঙ্কুরিশাই-পত্রিকা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠুক।অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

    উত্তরমুছুন
  2. সীমাহীন কৃতজ্ঞতা। অঙ্কুরিশাই-পত্রিকা জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠুক।অনেক শুভেচ্ছা রইলো।

    উত্তরমুছুন