লেবেল

শনিবার, ১৮ জুলাই, ২০২০

নির্বাচিত কবিদের কবিতাগুচ্ছ ।। রনি অধিকারী




স্মৃতির সমাধি


মাথার ভেতরে আজ টান-টান ক’রে
জলের সাহস ভেদে তোমাকেও চাই-
মগজে গভীর খেলা, স্মৃতিগুলো পাই;
তোমার বাড়ির পথে চলে যাবো ধীরে।
ইতিহাস খুলে যাবে এমনই কিছু...
তৃষ্ণায় চলেছি আজ হেঁটে অকারণ
ঘ্রাণগুলো ঘুরে-ফিরে স্মৃতির মরণ;
মধ্যরাতে বয়ঃসন্ধি জোনাকির পিছু।

নুয়ে পড়া অনুভূতি নীলিমায় মিশে
জ্যামিতির দিনরাত্রি অস্থির হৃদয়
গোপন নৈঃশব্দ্যে আঁকা, কিছু পরিচয়;
ভেতরে-বাহিরে আজ নীলকণ্ঠ বিষে।
কাটা-ছেঁড়া হৃৎপিণ্ডে জীবন শৈবাল
স্মৃতিগুলো জমে থাকা, ফোটে জ্বলজ্বল।




   কবিতার প্রথা ভাঙি


রাত্রি শুরু। -এই চোখে নীল নীল ক্ষত
অভিসারী নিশাজল অকারণ ছোঁয়।
শায়িত শরীর ক্লান্ত। ক্লান্তি, ঘুম, স্বপ্ন...
স্বপ্নের স্রোতেই লিখি হাজার কবিতা
অতিশয় অনুগত প্রথা ভাঙি প্রথা।
চিত্রকল্প নিমেষেই মিশে যায় দেহে
ইতিহাস খোঁড়াখুঁড়ি প্রেম-প্রবণতা
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা চলে স্বপ্নের আধার
অন্ধকারে জড়াজড়ি শোকার্ত সময়ে
মধ্যরাতে কবিতার প্রথা ভাঙি প্রথা।


 অচেনা অধিবাসী


ধূসর ধোঁয়া একটি নারী
আজন্ম আকাঙ্ক্ষায় লালিত জন্ম
অচেনা অধিবাসী।
রাতের গুহায় বনচর থামে
হৃদয় মুচড়ে স্বপ্নকে ভাঙে।
ক্রমশ উষ্ণতা আলোকে ছোঁয়
ওমের প্রেরণায় রোদ্দুরকে ছোঁয়।





  বিলাসী বসন্ত


সভ্যতার সীমারেখা হয়ে যায় অনায়াসে পার
স্তব্ধ অসাড় শরীর সেলুলার বেজে ওঠে অঝোর অবিরাম
আজ আর কোনো জীবনানন্দ দেখবে না ঐ যুবকের সাথে
সুরঞ্জনা-নীলাঞ্জনা কিংবা মাধবীলতার গোপন অভিসার
ঐ অভিলাষী মানবের সাথে সভ্যতার সেলুলার ফোনে
হাজার কথোপকথন ধ্রুপদী সংলাপে অঢেল সময় যাবে
রক্তচক্ষু অথবা ঈষান্বিত হৃদয়ে আজ আর কোনো জীবনানন্দ দেখবে না
সুরঞ্জনা-নীলাঞ্জনা কিংবা মাধবীলতার গোপন অভিসার
ত’বে স্পন্দিত হৃদয় আর এক হৃদয়ে
ছুঁয়ে যাবে শাদা শাদা বৃষ্টির পসরা
প্রাণবন্ত শূন্যতায় রঙিন বাটনে আঙুলের দ্রুত স্পর্শ 
হতে পারে মুঠোফোন ডায়াল প্রক্রিয়া
যেখান থেকে শুরু সেখানেই শেষ শেষের শুরু আবার শুরুর শেষ
ক্রমশ মিটে যায় আশা প্রয়োজনের সব গোপন অভিসার
মূলত ‘নাম্বার ভাঙার মধ্যেই শুরু হয় অনন্ত রাত্রির সংলাপ
অঝোর শ্রাবণ থেকে আর-এক শ্রাবণ’

চেতনার চূড়ায় বাস্তব আজ বিলাসী বসন্ত
হয়তো এখনই আসবে প্রেমের দলিলপত্র





   অভিশাপের মহাকাল
 

কত সুখী হ’বে তুমি যদি চেনা ভাষায় প্রকট
নক্ষত্র কিরণে রাত্রি লুপ্ত ক’রে দিও একেবারে
সতত আমি যে খুঁজি শাদা আর নগ্ন শূন্যতারে!

ত’বে ঘোর অন্ধকার সে নিজেই হ’য়ে ওঠে পট
যেখানে আমার চোখ জন্ম দেয় হাজার সংখ্যায়
সে-সব অতীত সেই চেনা চোখ এখনো তাকায়।

খুঁজি না আর কোথাও বাসা কোনো ক্ষুদ্র অন্তরাল
নে ত’বে নে আমায় টেনে অভিশাপের মহাকাল।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন