অণুগল্পের আড্ডা -২১
গন্ধ
দুরন্ত বিজলীকিশলয় এখন সত্তর। এখনও বেশ সচল। এই বয়সে কলকাতা-দিল্লি ঘুরে বেড়ায়। সাহিত্যের তাগিদে ছোটাছুটি। সে বলে, 'টেনশন না থাকলে বেশ ভালো থাকা যায়। যেখানের যা বোঝা সেখানেই ফেলে আসা উচিৎ।' মুখে সব সময় হাসি।
সেদিনও সকালে কলকাতা প্রেসক্লাবের একটি পত্রিকা প্রকাশ অনুষ্ঠানে যাবার জন্যে মহিষাদলে ট্রেণে চড়ে বসেছে। ট্রেণ বেশ ফাঁকা। জানালার ধারে বসল। তারপর আজকের খবরের কাগজ খুলে পড়তে লাগল। ট্রেণ এক এক করে স্টেশন পেরিয়ে যাচ্ছে। তমলুক স্টেশনে একজন এসে তার পাশে বসল। খবরের কাগজে এমন মগ্ন যে ঘুরেও দেখল না কে বসেছে। কিছুক্ষণ পরে মনে হল পাশের যাত্রী নড়াচড়া করছে। একটা চেনা গন্ধ নাকে এসে লাগছে। খবরের কাগজ পড়তে পড়তে মনে করতে চেষ্টা করল, এই গন্ধটা এত চেনা মনে হচ্ছে কেন ? ঘুরে তাকালো পাশের যাত্রীর দিকে। আরে এতো মহিলা! চেয়ে আছে। চোখে দুষ্টুমিষ্টি হাসি। বয়স প্রায় ষাট। তবে সৌন্দর্যের ছাপ এখনও স্পষ্ট। গন্ধ। তুলিকা। ছাত্রী। কলেজের দিন। ওদের বাড়িতে টিউশন পড়াত।
- তুলি- তুলিকা?
- হুঁ।
- আরে, তোমার কপাল ফাঁকা?
- গত বছর করোনায়...
- আ- হা !
- তোমার?
- আছে। তাই তো ফুলে ফেঁপে আছি।
- ভালো থেকো। তুলিকার চোখে জল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন