যুদ্ধ বিরোধী কবিতা -২৮
সাতকর্ণী ঘোষ
১.
ইউক্রেন আমার নাম
যে শিশু জন্ম নিল শরণার্থী শিবিরে
সে যুদ্ধ জানে না
সে রক্ত জানে না
সে মৃত্যু জানে না
সে জানে মায়ের কোল
বুকের দুধটুকু তার পরম খাদ্য
সে যদি বড়ো হয়
চাইব বড়ো হোক
সে শুনবে ঘর ছাড়ার কথা
খাদ্য বস্ত্রের হাহাকার কথা
ধ্বংস আর আগুনের কথা
মনে মনে সব ' সে ' গুলো
সৈনিক হয়ে উঠবে
তারা যুদ্ধ দেখবে নিজের রক্তে
তারা যুদ্ধ করবে নিজের হাতে
সমস্ত শিশুর নাম ইউক্রেন হবে
তখন পুতিন পারবেন নিজেকে ক্ষমা করতে
২.
বসন্ত আসেনি এখনো
যদি বসন্ত এসেছে বলো
তবে বলব রাশিয়ায় ফোটেনি ফুল
ইউক্রেন শীতের চাদরে ঢাকা
হলুদ পাতার ফাঁকে বারুদ গন্ধমাখা
এখানে পলাশ এখানে শিমুল
মহুয়ারা লালে লাল
সূর্যও বেশ হাসছে দু'গাল
বলি শোনো অযোধ্যা শোনো শোনো শান্তিনিকেতন
ইউক্রেন শুধু নয় রাশিয়াতেও
কিছু পলাশ শিমুল পাঠাও
লাল হলূদ হাসিতে বসন্ত আসুক
সব শিশুরা ফুলে ফুলে উড়ুক
সব নারী- পুরুষ প্রেম নিয়ে
আর গান নিয়ে
যুদ্ধ যুদ্ধ লড়ুক
বন্দুক থেকে বুলেট নয়
কামানের গোলা নয়
বেরিয়ে আসুক ফুলের তোপ
ওই সবখানে বসন্ত এলে
তবেই না আমাদের বসন্ত
সুর পাবে রঙ পাবে
পাবে প্রেম সর্বত্র
৩.
মানুষ বড় কাঁদছে
তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও...
সে সব ভুলে অস্ত্র নিয়েছ তুলে
অশ্রুবন্যায় রক্ত ভেসে যায়
মানুষ কোথায় খুঁজি
ডাইনে বামে শুধুই লাশের সারি
ফুল কুড়োবো ফুল কুড়োবো
কোথায় আপনি মালি!
চোখ দিয়ে তার আগুন উপচে পড়ে
নিজেও জ্বলে জ্বালায় অন্য কেও
জ্বলতে জ্বলতে নিজের বাড়ি এলে
ঘর পুড়ে যায় চমকে আগুন গিয়ে
কোথায় মানুষ কোথায় দুহাত বাড়াও
দাও বিলিয়ে প্রেমের ঝরনাধারা
এখনো যারা মনে আনেনি বন
তারাই দাঁড়াও হাতে রাখো দুই হাত
আমরা এখন গহীন অন্ধকারে
আলোর জন্য উৎসমুখ খুঁজি
ভাঙা ভাঙা মানুষগুলো দিয়ে
গড়বে চলো শান্তির এক নীড়
আগুন শোনো আর ধ্বংস নয়
গোলাবারুদ বিক্রি বন্ধ হোক
মাটির উনুন ভাত ফোটাবো বলে
হাঁড়িও দেখ আগুন করছে খোঁজ
বাগান ভরে ফুলের হাসির গান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন