স্বাধীনতার৭৫
মুক্ত গদ্য —১৯
স্বপ্ন দিয়ে তৈরী
বিকাশ ভট্টাচার্য
অবশেষে তেরঙা দেশ এলো অঙ্গচ্ছেদে।গঙ্গা-পদ্মা আর সিন্ধু-সরস্বতী হলো অশ্রুনদী। যে ভূ-মা বোধ জন্মেছিল সিন্ধু উপত্যকায়,আসমুদ্রহিমাচলে,কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীরে,
সেখানে ইউনিয়ন জ্যাক ওড়ে না। ওড়ে তেরঙা। সরকারি দপ্তরে, ইস্কুল-কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনকি জেলখানার উঁচু পাঁচিলের মাথায় ওয়াচ টাওয়ারে এখন তেরঙা ওড়ে। ওড়ে সেইখানে---আলিপুর সেন্ট্রালে, প্রেসিডেন্সি তিহারে সেলুলারে। পঁচাত্তর বছরে পা দিয়ে পোশাক বদলে তারা এখন সংশোধনাগার। এখনও কারা তবে যাওয়া-আসা করে এইসব খাঁচার ভেতর? শিকল পরার ছলে যাঁরা সেসময় যেতেন তাঁরা তো নয় নিশ্চয়ই। ক্ষুদিরাম নয়, ভগৎ সিং নয়, বীণা দাস নয়। তবে কারা ? স্বাধীন দেশেও তবে যেতে হয় পরাধীন পিঞ্জরে ! কারা যায় ? কারা এত ভালোবাসে পিঞ্জরের আলো-বাতাসহীন অন্ধকার চৌখুপি ? স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর পরেও বিদ্বান সর্বত্র রাজপথে গান্ধীমূর্তির নিচে। ফুটপাতও জেগে থাকে সারাদিন সারারাত অশ্রুসজল। ভিতরে আগুন পোষে।
পঁচাত্তর বছরের লালিত যে স্বপ্নদেশ সে এখন স্মৃতি দিয়ে ঘেরা। সে স্বপ্নদেশ এখন আর কোথাও খুঁজে পাওয়া হয়তো সম্ভব হবে না,তা'বলে ' কী আশায় বাঁধি খেলাঘর ' গাইতে গাইতে বিবাগী হওয়ারও কোনো কারণ নেই। বেশ কিছু মাথা উঁচিয়ে বলবার মতো কথা অবশ্যই আছে। বরং সেসব গরিমার শব্দমালা ' আমি জগৎ প্লাবিয়া বেড়াব গাহিয়া আকুল পাগলপারা '। পঁচাত্তর বছরে ঘরে-বাইরে আমাদের কুর্নিশ জানাবার মতো যথেষ্ট উপাদান তো আছেই।
খুব ভালো ও যথার্থ লেখা। ভাষার বাঁধন খুব সুন্দর।
উত্তরমুছুন