লেবেল

বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই, ২০২২

ধারাবাহিক প্রেমের উপন্যাস (পর্ব-২০।।) ... এবং ইরাবতির প্রেম - গৌতম আচার্য।।Ankurisha।। E.Magazine।। Bengali poem in literature।।

 




ধারাবাহিক প্রেমের উপন্যাস (পর্ব-২০)

... এবং ইরাবতির প্রেম
গৌতম আচার্য



খুব সহজেই সত্যেনের বার্থ ব্যবস্হা হয়ে গেলো।। তা পেতে কোন অসুবিধা হলো না।। শুধু পকেট থেকে গেলো পাঁচশো টাকা।। টি টি সাহেব কিছুতেই রাজি নন্।। এখন নাকি পিক্ সিজন চলছে।। বার্থের খুবই ডিম্যান্ড।। কথাটি যে একেবারে অমূলক নয়, তা টের পেয়েছে সত্যেন।। কয়েকজন তো একশো, দুশো টাকা দিয়ে মাটিতে কাগজ পেতে শোওয়ার অধিকার পেয়েছে।।  কিছু উৎসাহী তরুণ ও যুবক গেটের ধারে তাদের অবস্থান পাকা করলো।।

ট্রেন ছুটে চলেছে।। সত্যেন তার বার্থে শুয়ে শুয়ে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করে চলেছে ইরাবতির সঙ্গে।। ইরাবতি সত্যেনের আবদার রক্ষা করতে মাঝে মাঝে নিজের ছবি তুলে পাঠাচ্ছে সত্যেনকে।। সত্যেনও ইরাবতির বিভিন্ন রকম ছবি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠছে।। শুধু যে কথা ইরাবতির সত্যেনকে বলা হয়ে ওঠেনি, সেটি এখনও ইরাবতি "না বলাই" রেখে দিয়েছে।। সত্যেন যতো বার সেই কথা জানবার জন্য ইরাবতিকে অনুরোধ করেছে, ইরাবতি কেবল তার এক মুখ হাসির ছবি পাঠিয়েছে।।

সত্যেন আবার চ্যাট করলো, "তুমি কি কথাটি সত্যি আর বলবে না সিদ্ধান্ত নিয়েছো"? এবার ইমোজিতে একটি হাসির পোস্ট করে ইরাবতি লিখলো, "মহাশয় কথাটি জানলে তোমার আনন্দের কোন শেষ থাকবে না।। কিন্তু তাতে আমার কি লাভ হবে? বলতে পারি, কিন্তু তার জন্য আমার পুরস্কার চাই।। এবার তুমি বলো, তুমি তাতে রাজি আছো"? সত্যেনও বেশ মজা করে জমিয়ে লিখলো, "আরে তেরে লিয়ে ম্যায় জান্ দে দুঙ্গি, তো, ক্যা প্রাইজ প্রাইজ বোল রাহা হ্যায়"? কথাটি শুনে ইরাবতি বোধহয় বেশ খুশিই হলো।। একটি থাম্পস্ আপ চিহ্ন দিয়ে সত্যেনকে উৎসাহিত করে প্রশ্ন করলো, "কিন্তু এখন বলবো কি করে, তুমি ট্রেনে আছো, আর সকলে ঘুমাচ্ছে।। ফোনে তো কথা বলা মুশকিল"।।

সত্যেন লিখলো, তুমি হোয়াটসঅ্যাপে লিখে পাঠাও।।
-- ধ্যুৎ! এ্যতো ভালো কথাটি তোমাকে বলবো।। আর তোমার কি রি-এ্যাকশন হয় সেটি জানবো না?
-- আবার অজুহাত।।
-- না স্যার, আমার ডান হাত আর বাঁ হাত আছে।। এ ছাড়া আর কোন হাত নেই।।
-- তাহলে বলছো না কেন?
-- বললাম না, তোমার কি রি-এ্যাকশন হয় সেটি জানতে হবে।।
-- দ্যাখো ম্যাডাম, তুমি কিন্তু ভালো করছো না।।
-- আমি এমন একটি কথা বলবো, তুমি আনন্দ- তে দিওয়ানা হয়ে যাবে।। তোমার সেই তাৎক্ষণিক যে আনন্দটি হবে, তা আমাকে পুরোপুরি এনজয় করতে হবে।।
-- তুমি আমাকে টেনশনে ফেলে দিচ্ছো।।
-- লক্ষীটি।। টেনশন কেন করবে? আমি একবারও বলবো না বলেছি কি? আমি নিজে তোমাকে বলবো বলেছি।। এটি এমন একটি কথা, যা বলবার জন্য আমি নিজেই মুখিয়ে আছি।। আর এটিও জানি যে, তুমি শুনলেই তোমার রি- এ্যাকশন অন্য রকম হয়ে যাবে।। আমি শুধু তোমার সেই রি- এ্যাকশনটি ফিল্ করতে চাইছি।।
-- ওকে।। আজ আমরা তো আর ঘুমোচ্ছি না।। ঠিক সূর্য উঠবে আর তুমি আমাকে বলবে।।
-- তুমি কি ক্ষেপেছো নাকি?
-- কেন? ক্ষেপবো কেন?
-- আজকেও সারা রাত জাগবো?
-- তাতে কি হয়েছে?
-- তুমি জানো না কি হয়েছে?
-- সত্যি বলছি, আমি বুঝতে পারছি না।।
-- এবার ঘুমিয়ে পড়ো।। বুঝতে হবে না তোমাকে।।
-- বলো না প্লিজ।। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে।।
-- শয়তান।। পুরো আটচল্লিশ ঘণ্টা ঘুমাতে দাওনি।। আবার বলছো আজ রাতে জাগবে?
-- বেশ করেছি।। আজকেও ঘুমাতে দেবো না।।
-- আমি সত্যিই মরে যাবো এবার।। মাথা যন্ত্রনায় ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।। এবার তুমিও ঘুমিয়ে পড়ো আর আমিও।।
-- তুমি এমন অ্যান্টি- রোমান্টিক কেন?
-- আটচল্লিশ ঘণ্টা জেগে থাকার পরও আমি অ্যান্টি- রোমান্টিক?
-- ইয়েস ইয়েস ইয়েস।। তুমি অ্যান্টি- রোমান্টিক।।
-- তোমার পায়ে প্রণাম।। এবার ঘুমিয়ে পড়ো লক্ষীটি
-- ওকে।। কাল কিন্তু ঠিক পাঁচটায় ফোন করবো।।
-- না না।। আটটা।।
-- ওকে।। শুভ রাত্রি।।
-- শুভ রাত্রি।।

মোবাইল বন্ধ করে সত্যেন পাশ ফিরে শুয়ে পড়লো।।

চলবে...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন