।।প্রতিদিন বিভাগ।।
সেন্টু রঞ্জন চক্রবর্তী-র কবিতা
১.
বৃষ্টি
ধারাপাতের ধারার মতো
রিমঝিমিয়ে বৃষ্টি,
টিনের চালায় কে নাচে রে
কতই না সে মিষ্টি।
গাছের পাতা নাড়ে মাথা
কি কথা কয় কারে,
কেউ বুঝেনা কেউ শুনেনা
একদম চুপিসারে।
পায়রা যতো ইচ্ছে মতো
বাকুম বাকুম ডাকে,
চুড়ুই ছানা ঘরের কোনে
তাকিয়ে দেখে মাকে।
মা বসে নেই ব্যস্ত ভীষণ
ধরবে ফড়িং ঘাসে,
ফিঙে পাখি ঝিঙে লতায়
ফন্দি করে বসে।
টুনটুনিদের টুনটুনানি
দোয়েল পাখির গান,
কান পেতে রই কি যে মধুর
নেচে উঠে প্রাণ।
বৃষ্টি এলে অনাসৃষ্টি
ছড়া কাটার ধুম,
বৃষ্টি ধারার তালে তালে
খোকার গালে চুম।
২.
স্মৃতির কংঙ্কাল
সমুদ্র উঠেছে ফুলে
ঢেউয়ে পাল দেরে তুলে
বন্ধ থাক ক্ষানিকটা তরী পারাপার,
ঐ যে মাল্লারা ডাকে
বিপদ সংকেত মুখে
চারদিকে কালো মেঘ ক্ষতি আশঙ্কার।
জোড়ছে বইছে ঝড়
বুক কাপে থরথর
উত্তাল অতলান্ত মায়াবী জলধি,
দুকূল ভাসিয়ে চলে
অশ্রুসিক্ত নোনা জলে
অশান্ত গর্জন তার শুনি নীরবধি।
কূল নাই কিনার নাই
ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই
অসীমান্ত বিস্তীর্ণ তটভূমিহীন,
মাস্তুল ভেঙেছে কার
দুর্ভাগ্য দুর্ভাগার
বিষাদের বিবর্ণ রঙে আকাশ রঙিন।
বুকের ভিতরে ক্ষত
জেগে আছে অবিরত
মরমে মরমিয়া কাঁদে কোন সে বিরহী,
অন্তরের অন্তপুরে
তানপুরার সুরেসুরে
বিধুর সংগীতে গায় রহিরহী।
আজন্ম যন্ত্রনা লয়ে
সকল যাতনা সয়ে
বয়ে নেয় পৃথিবীর সকল জঞ্জাল,
সান্তনা কোথাও নাই
নিভৃতে অন্তর ছাই
ভালোবাসা বুঝি তাই স্মৃতির কংঙ্কাল।
৩.
ধন্য সে দেশ
মাটির বুকে শয়ন পেতে
ঘুমায় যারা রাতের বেলা,
শান্তি এসে তাঁদের বুকে
খেলায় সুখে আপন খেলা।
স্বপ্ন দেখায় চাঁদ তারারা
আকাশ জুড়ে ছড়িয়ে আলো,
কষ্ট মিশায় মাটির সাথে
ঘুছায় মনের আঁধার কালো।
গগনভেদি অট্টালিকার
দিন গুনেনা বসে বসে,
গায়ের ঘামে জীবন গড়ে
নাম লিখে নেয় ইতিহাসে।
এমন সরল মানুষগুলির
খোঁজ খবর কেউ রাখেনা,
লড়াই করেই বেঁচে থাকে
কারো কাছেই মুখ খোলেনা।
পরের হিতে নিজর জীবন
উজার করে দেয় বিলিয়ে,
ভোগ বিলাসের ধার ধারেনা
সুখী থাকে অল্প নিয়ে।
এমন সোনার মানুষ জন্মায়
যে দেশের মায়ের কোলে,
ধন্য সে দেশ ধন্য মানুষ
মাটি তাঁদের যায়না ভুলে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন