লেখা
কে যেন নিজের হাতে মুছে দিচ্ছে লেখা ।
লেখার বদলে রেখে দিচ্ছে এক চকচকে ছুরি ।
জানালাটা বন্ধ করে দিল ।
কেউ নেই ঘরে । লিখতে বসেছি । আর এই দৃশ্য ।
কি হতে পারে, ভাবছি । লেখার টেবিলে
খুন ? কে করতে পারে এই কাজ ? দেখছি না তাকে ।
দেখি, ছুরি এগিয়ে আসছে ।
শরীরে, না, ব্রেনের ভেতর বয়ে যাচ্ছে ঠাণ্ডা স্রোত ।
মনে পড়ে গেল,
লেখক নিহত হলে লেখা বেঁচে যায় !
ছায়া
ভাঙা আয়নার ছায়া কুড়োতে এসেছি এই দেশে ।
তোমার আঁচল আজ পেতে দিও, মেয়ে ।
ছায়াগুলি জড়ো করে রাখব সেখানে । ধার দিও
তোমার অণিমা । খুব কাজে লাগবে তা ।
সহজে পারি না । তুমি কি বাড়াবে হাত ?
ছায়া কুড়োবার ছলে এই সঙ্গ মানবে না লোকে ।
বলবে, বুড়োর ভীমরতি । ছিঃ ছিঃ ! থুথু দেবে গায়ে ।
তোমার প্রেমিক যদি রাগ করে, তাকে বলে দিও,
ছায়া কুড়োবার ফাঁকে বৃষ্টি নেমেছিল !
গতজন্ম
অন্ধটির হাত নেই, আর সে মূলত
খঞ্জ ও বধির । তবে বোবা নয়, বলে,
গান গাইছে চাতালে বসে ।
সে গানের সুরে উল্কাপাত হল আজ ।
ধ্রুবতারা দিক ভুলে এসেছে দক্ষিণে,
তার সঙ্গে সপ্তর্ষিমণ্ডল ।
জোয়ারভাটার কথা ভুলে বাবুঘাটে
গঙ্গা উঠে এসেছে অন্ধের কাছে, তাকে
দেখে, মনে হল, শ্রোতা নয়,
সে, আসলে, মেছো পাড়ার বিধবা বৌদি।
দূরে বসে, এক বাউল গায়িকা
গলা সাধছিল একা একা ।
অন্ধগীতিপ্রণয়ের মত গায়িকার
দেহ থেকে, ঐ সুরের টানে
ঝরে পড়ছিল লালা, থুথু, ক্লেদ সহ
তার গতজন্ম ।
ডাকবাক্স
হারিয়েছি লাল ডাকবাক্স,
তুমি না কি আমাকে আঁকছ ?
চিঠি নেই, কতদিন হল ?
সুদূর আকাশ তুমি, বল ।
আমার ছবিটি খুঁজি রাতে,
ডাকবাক্স ঘোরে কার হাতে ?
বাজার
বাজারে এসেছি । কি কিনব ?
মাৎসর্য, মোহ, মদ, মাংস কিনেছি ।
রইল যা, তা ঐ স্বপ্ন । বাসি,
শূওরের মত, কাটা ও ছড়িয়ে রাখা ।
তুলে নিই কিছু ।
কলমি শাকের মত সবুজ সে, আশা,
তাও নিই । তামসিক বলে,
খানিকটা লোভ কিনে ফেলি ।
এসেছি বাজারে । গৃহস্থের সংসারে
প্রকৃত ফোড়ন ছাড়া সকল অচল ।
মিথ্যে সেই তেজপাতা । কিনি ।
ঈর্ষা কিনি, ঝাল হবে তাতে ।
নুনের বদলে কিনে ফেলি আমি কিছুটা ছলনা ।
আর কিছু বাকি রয়ে গেল, যাজ্ঞসেনী ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন