সাতকর্ণী ঘোষ
অপেক্ষা
আকাশের গায়ে সূর্যের অন্তিম আলো ধীরে ধীরে ম্লান হচ্ছে। অর্পণের আজ ফেরার কথা। করোনা এক্সপ্রেস নিয়ে আসবে তাকে। ওই তো অর্পণ আসছে বাপ আমার কেমন আছিস বাবা।
অর্পণ শুধু হাত নাড়ে কাছে যাবার অধিকার যেন হারিয়েছে সে... একটি কথা মাকে সান্ত্বনা দেয় দেখা হবে চোদ্দ দিন পর...
অলঙ্করণ- বিমল মণ্ডল
পরিযায়ি
কোরেনেন্টাইনে আছে আজ দশ দিন হল। শারীরিক কোনো সমস্যা এখনো ধরা দেয়নি। বসন্ত কৃষ্ণ ফল্গু এক ঘরেই আছে। আজ একটু তিন জনেই বেশ চনমনে। খোসমেজাজে গল্প জুড়েছে। তারা যে নিজের দেশে আছে ভাবতেই গায়ে কাঁটা দেয়। বসন্তের কথায় কৃষ্ণ বলে কি আর করবি বল আমরাতো ফুটবল। সবাই যেভাবে লাথি মারছে। আকার না বদলালেও দল বদলে যাচ্ছে। আর আমাদের অবস্থা করুণ থেকে করুণতর হচ্ছে...
অলংকরণ- বিমল মণ্ডল
চাবিকাঠি
আর ভালো লাগছে না তোমার অাবদার রাখতে রাখতে হাপিয়ে উঠছি তার সঙ্গে তো রয়েছেই যত অর্ডার -- আর পারিনা বাবা। স্ত্রী বকুলের কথায় রমেণ কোনো উত্তর দেয় না চা চুম্বন করে বলে আহা কী চা বানিয়েছ-শোনো আজ মাছের কালিয়াটা আমি রাঁধব।
আ মরে যাই কি কথা শোনালে - তা ভালো অভ্যেস করে রাখো কয়েক মাস পর তো আবার। আবার... ও বুঝেছি। রমেণ টেবিলে পরে থাকা চাবিকাঠিটির দিকে বিস্ময়ে চেয়ে থাকে।
অলংকরণ- বিমল মণ্ডল
অচল
এই এসো খেয়ে নাও আর কতক্ষণ বসে থাকব। রাখো তো তোমার খাবার ওই তো শাক সেদ্ধ আর ভাত। বাবলুর ঝাঁঝি শুনে রমলা বলে কেন এমন করছ জানইতো যেটুকু সঞ্চয় ছিল সব শেষ। রেশনের সামান্য চালে কি আর চলে।
বাবলু ঘরে টাঙানো কৃষ্ণের ছবির দিকে জোড়হাতে বলে ঈশ্বর তুমিও ঘরবন্দি! রমলা বাবলুর মাথার চুলে বিলি কেটে বলে এখন খেয়ে নাও রাতে কিছু পাবে । বাবলু রমলার দিকে তাকিয়ে থাকে ভাবে যদি কিছু হয়ে যায় এখন তো...
অলংকরণ-বিমল মণ্ডল
ঝড়
এ এক ভয়ানক দুর্যোগ মহামারির সাথে আমফান কী করে যে বাঁচি। এই ত্রিফল ছেয়ে আর থাকা যায়। সামসেরের কথায় বিলে বলে আমারও একই অবস্থা কবে যে সময় ঘুরবে। আচ্ছা বিলে বলতো কবে আমাদের সময় ছিল। ভোটের পর ভোট হয়েছে আমাদের পরিবর্তন হয়নি। ঝড়ে বন্যায় খরায় আর এই মহামারি বিভ্রান্ত হয়েছি।
তুই শুনেছিস সামু গতরাতে তুমুল ঝামেলা। আমফানের টাকা নাকি সব নিজেদের নামে বেনামে নেতা কর্মীরা আত্মসাত করেছে। বলিস কি? – হায় আল্লা আমাদের কি হবে...
সৃষ্টি আপনার...
অভিমত আপনার...
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন