লেবেল

শনিবার, ১০ জুলাই, ২০২১

রবিবারের গল্প ।। সম্পর্কের শূন্য বাগন — মনোজ ভৌমিক।। Ankurisha ।। E.Magazine ।। Bengali poem in literature ।।

 




রবিবারের গল্প 



সম্পর্কের শূন্য বাগন

 মনোজ ভৌমিক 



আন্তরিকতা যখন হৃদয় আঙিনার সব কূল ছাপিয়ে যায় তখন তা রক্তের সম্পর্কের থেকেও ঊর্দ্ধে বিচরণ করে। অন্তরের প্রতিটি অনুভূতি সেই আন্তরিকতার বেদীমূলে অনুরণিত হয় । 



অরুন্ধতীদেবীর তৈরী শ্রী-হারা বাগানে দাঁড়িয়ে  অরিত্রের চোখ থেকে টপটপ করে বিষাদের অশ্রু ঝরে চলেছে।অকস্মাৎ চন্দ্রাবলীকে দেখে,ওকে জড়িয়ে পাগলের মতো হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো অরিত্র।অরিত্র শাশুড়ীমাকে অসীম শ্রদ্ধাভক্তি করতো। চন্দ্রা জানলেও নিজেও ভেবে উঠতে পারেনি অরিত্র হৃদয়ের অকৃত্রিম আন্তরিকতাকে। 


—দেখো চন্দ্রা, মা আমাকে কত ভালোবাসতেন!  এই বাগানের আম-জাম-কাঁঠাল-জামরুল-জলপাই-নারিকেল-খেজুরগাছগুলো কেমন উদাস চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! ওরাও ওদের অভিভাবককে হারিয়ে ফেলেছে।

চন্দ্রার মুখে ভাষা নেই। অশ্রুসিক্ত চোখে অরিত্রকে জাপটে ধরে। আর কত কী ভাবতে থাকে । দুপুর গড়িয়ে আসে। বৌদি রমলার ডাক কানে আসে, 

-- বেলা যে গড়িয়ে এলো ঠাকুরঝি...

জ্ঞান হওয়ার পর থেকে অরিত্র মাতৃস্নেহের গভীর স্পর্শ অনুভব করেনি। বিয়ের পর শাশুড়ীমা অরুন্ধতীদেবী অরিত্রকে সাত বৎসর যাবৎ নিজ সন্তানতুল্য গভীর স্নেহ-মায়া-মমতায় ভরিয়ে রেখেছিলেন।একবারও বুঝতে দেননি অরিত্র মাতৃহারা। চাকরি থেকে মাঝে মাঝে ছুটি নিয়েই স্ত্রী চন্দ্রাবলীর সাথে চলে আসতো শাশুড়িমায়ের কাছে , ছুটি কাটিয়ে ফিরে যেত। গত বছর ভরা শ্রাবণে অরুন্ধতীদেবী সময়ের রোগে আক্রান্ত হয়ে ইহলোক ত্যাগ করেন। সেই থেকেই অরিত্র যেন কেমন হয়ে গেছে। চন্দ্রা ও শালাবাবুর অনেক অনুরোধে আজ শ্বশুরবাড়িতে পদার্পণ।আজ জামাইষষ্ঠী... স্মৃতি বিস্মৃতির আন্দোলনে গভীরভাবে আন্দোলিত হতে থাকে অরিত্র হৃদয়। অকস্মাৎ অরিত্র চিৎকার করে ওঠে, 

—মা...

তারপর ঝপকরে মাটিতে বসে পড়ে।সন্ধ্যা নেমে আসে বাগানের বুকে সূর্যের উদয়াস্তের নিয়ম মেনে।অরিত্র হারিয়ে যায় স্মৃতির কুজ্ঝটিকাময় অন্ধকারে।








আরও  পড়ুন 👇🏾👇🏾




http://wwwankurisha.blogspot.com/2021/07/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_10.html



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন