দুঃসময়ের কবিতা-৬৬
ডঃ রমলা মুখার্জী
মৃত্যু মিছিল
সোনার দেশে মারণ অসুখ বাড়িয়ে দিল লক্ষ বেকার...
অতিমারীর করাল থাবা ক্রমেই নিচ্ছে ভয়াল আকার।
দুর্ভিক্ষ দুয়ারে হাসে, মানুষ চোখের জলে ভাসে-
আতঙ্ক আর মৃত্যুভয়ে পৃথিবী আজ মরছে ত্রাসে।
"কোলাহল তো বারণ হল", কথা তো নয় কানে কানে-
মৃত্যু মিছিলে স্তব্ধ মানুষ, করোনার মারণ বানে।
রেস্তরাঁ আর হোটেলওয়ালার কপালেতে ভীষণ শনি,
বাহির দ্বার রুদ্ধ আজ, রুদ্ধ যত বিকিকিনি।
ছোট বড় ব্যবসা-পত্তর, সর্বস্তরেই সর্বনাশ -
এখন পেটের প্রবল ক্ষুধা ঘাড়ে ফেলছে দীর্ঘশ্বাস।
যে মেয়েটা মাজতো বাসন, ছেলেটা ধুতো চায়ের কাপ,
দিন আনি দিন খাই-এর ঘরে নিরন্নের অভিশাপ।
বস্ত্রবিপনী, প্রসাধনীর নেই তো কোনো কেনাকাটাই,
কারখানায় বন্ধ তালা, শ্রমিক জবাই, কর্মছাঁটাই।
ক্লান্ত শ্রমিক ফিরছে ঘরে দূরের পথে রাস্তা হেঁটে...
শ্রান্ত পথিক নিদ্রা-কাতর, মালের গাড়ি মাড়িয়ে ছোটে।
সাংস্কৃতির মৌনব্রত, কলাকুশলী, শিল্পী মরে-
দুর্ভিক্ষ নেমে আসে একে একে সবার ঘরে।
মারণ রোগ ছাড়ে না তো ধনী কিংবা গরীবজনে,
শিশু হারায় মাকে তার, বোঝে না তাই আঁচল টানে।
টোটো, অটো, ট্যাক্সি চালক ঘরে বসে মাথায় হাত -
বাস, ট্রাক, আকাশ, জল সব যানই উল্টে কাৎ।
পর্যটন শিল্পগুলির জানি না কি তার ভবিষ্যৎ,
মানুষ প্রাণে বাঁচলে তবেই পাড়ি দেবে দূরের পথ।
একই চিত্র শহর গ্রামে, দেখছি বসে অহর্নিশ-
আতুর পাশে থাকছে যারা, জানাই সেলাম, শত কুর্নিশ।
পঞ্চাশ আর ছিয়াত্তরের মন্বন্তরেও মরিনি যখন,
অতিমারী শেখাবে সাম্য, ভেদাভেদ নয়, সবাই আপন।
মৃত্যুর সাথে সংগ্রামী সাথী, বুকে বাঁধো অমিত বল...
সবায়ের তরে সবাই আমরা, মুছে ফেলো চোখের জল।
আরও পড়ুন 👇🏾👇🏾
https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/07/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_8.html
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন