হেমন্তের সকাল- ১
রবীন বসু
১.
হেমন্তের অভিপ্রায়
গ্রামের হলুদ মাঠে শুয়ে আছে কুয়াশা যখন
ক্লান্ত চাষী তার গায়ে ছুঁয়ে দেয় হাত অমসৃণ,
ফসলের সমারোহে কৃষানির ভরে গেছে বুক
স্বপ্নে স্বাচ্ছন্দ্য ভাসে, উড়ে যায় সব ম্লান দুখ।
আমার কুয়াশামাঠ ওই দেখ নত শুয়ে আছে
হেমন্তের নষ্টঘ্রাণ রিক্ততার সে এক প্রকাশ,
তবু যে প্রাচুর্য হাঁটে দীর্ণ অভাব গ্রামের কাছে
মানুষের প্রত্যাশার বর্ণময় সেইসব অবকাশ।
বিস্তীর্ণ এই প্রান্তরে দেবকন্যারাও খেলা করে
সমস্ত চাতুর্য দেখি নাগরিক অক্ষর বিন্যাসে,
হিসেবি বাঁধন সব কারুকার্য কী ছায়া যে ধরে
কেমনে ধর্মের কল দিনরাত নড়ে যে বাতাসে।
বাতাসে শকুনডানা ঘিরে ধরে আমাদের প্রত্যহ
প্রতিদিন বিভেদ দেখি হররোজ মন ভেঙে কাঁচ,
কাঁচের সূক্ষ্মতায় কাটে সম্পর্কের ভিত অহরহ
তবু কেন উদাসীন এলোমেলো বোধের সে আঁচ।
আঁচ যত গনগনে ততটাই তীব্র হয় উত্তাপ
সব ক্রোধ অভিমান তীব্র অগ্নিবর্শী অভিশাপ
সভ্যতাকে গিলে খাবে, তাকে বাঁচিয়ে রাখা দায়
হেমন্ত-কুয়াশা যেন এঁকে রাখে নিজস্ব অভিপ্রায়!
২.
নবান্ন উৎসব হবে
এই যে রঙের আকুতি নিয়ে উঠে এলো হেমন্ত-সকাল
বিষণ্ণ বাতাস তাকে সান্ত্বনা দিল; নিস্তেজ রোদের ডানা
কম্পমান ভবিতব্য লিখে রাখে আসন্ন শীতের স্থবিরতা;
তারপর গাঢ় হয় মধ্যাহ্নদিন, অতিক্রান্ত বিকেলের মায়া
সন্ধ্যায় রহস্য নিয়ে উড়ে যায় বাদুড়ের সারি পরস্পর
অন্বেষণ ত্রস্ত হলে জ্বলে ওঠে জোনাকির আলো ম্লান;
সুদূরে শঙ্খের ধ্বনি, আশাহত বধূটির সকরুণ মুখ
লক্ষ্মীর পদচিহ্ন পড়ে থাকে ধুলোমাখা অভাবী অঙ্গনে
হেমন্ত বিদায় নিলে নবান্ন উৎসব হবে শস্যের প্রান্তরে!
আজ থেকে শুরু হল অঙ্কুরীশা ই ম্যাগাজিনে শুধু কবিতায়... হেমন্তের সকাল। আপনিও আপনার সেরা লেখাটি এই বিভাগের জন্য দুটো কবিতা ( ইউনিকোড /অভ্র) মেল বডিতে টাইপ করে পাঠিয়ে দিন। মনে রাখবেন আপনার এই লেখাটি অঙ্কুরীশা-য় সম্মানের সাথে প্রকাশিত হবে।
লেখা পাঠান —
মেল— ankurishapatrika@gmail.com
সুন্দর পোস্টার। আন্তরিক ধন্যবাদ আর অভিনন্দন জানাই সম্পাদক মহাশয়কে 🙏❤️
উত্তরমুছুনখুব সুন্দর দুটি কবিতা। হেমন্তের প্রাচুর্যের মাঝে, মাঝে মাঝেই উঠে
উত্তরমুছুনএসেছে শূন্য গোয়াল শূন্য আঙিনা, কঠিন সময়।