হেমন্তের সকাল-১৪
দীপক বেরা
১.
বার্ধক্যের তুলসীতলা
শারদোৎসবের কৌলিন্য পিছনে ফেলে হেঁটে চলেছি..
বুঝতে পারি, ভিজে যাওয়া বিষণ্ণতায়
মহত কিছু মুহূর্তের হঠাৎ একা হয়ে যাওয়ার দুঃখ!
হেমন্তের শিশিরতায় অল্প অল্প শীত পড়া মায়ারোদ
বিছিয়ে পড়েছে আমাদের রোজকার জীবনের
কাদা মাটি ভালোবাসার এই মৃদু-মন্থর প্রান্তিক মফস্বলে।
ঠাকুমার শীর্ণ শরীরে জড়ানো জীর্ণ আলোয়ান
তাঁর গল্প কাহিনি থেকে আজও জেগে ওঠে
হাপরের শব্দময়তায় উত্তপ্ত কামারশালার কিছু গল্প।
শারীরিক যন্ত্রণা আর বার্ধক্যের তুলসীতলায় তবু,
আজও জ্বেলে রেখেছেন অনির্বাণ—
হেমন্তের সন্ধ্যেবেলায় আকাশ-প্রদীপের শিখা ক্ষীণ...
বাকি সব অনুজ্জ্বল, সময়ের গতিশীলতায় ক্রমশ বিলীন!
২.
একটা সম্ভাবনা
বেলাশেষের সূর্যটা লাল আলো ছড়ায়,
সেই আলোতে একবার ফিরে তাকাই—
অশ্বত্থ বটের ছায়াঘন ভুবনডাঙার রাস্তায়।
উৎসব হুল্লোড়ে শৈশব কৈশোর গেছে
একে একে হাত ধরাধরি করে,
নিহিত উত্তাপ ছড়িয়ে তারুণ্যের লাবণ্য,
সেও হেঁটে গেছে পায়ে পায়ে হেমন্তের বনে।
কিছু কিছু ব্যথা থাকে শরীরে
কিছু দুঃখ-বিষাদ থাকে মন ও মননে
জামরুলের পাতার ফাঁক দিয়ে পিছলে আসা
জ্যোৎস্নার আলো যে বড় ক্ষণস্থায়ী,
আকাশে কাল ছিল কোজাগরী পূর্ণিমার চাঁদ
আজ কৃষ্ণপক্ষ এসে দাঁড়িয়েছে দরজা খুলে।
হেমন্তের ধানকাটা ভোরের আলো
আর, আমাদের বয়স, কেবলই গড়িয়ে যাচ্ছে
প্রতিটি বছরের নবান্নের উৎসব ছুঁয়ে ছুঁয়ে,
...একটা সম্ভাবনার দিকে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন