।। প্রতিদিন বিভাগ।।
।। জুন সংখ্যা।।
বিষয় - গল্প ( ৪০০ শব্দের মধ্যে) —১১
রবীন্দ্রনাথ
অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়
অধ্যাপক মহাশয় কথাচ্ছলে ছাত্রদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছিলেন আমাদের জীবনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ যে কতটা প্রাসঙ্গিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না । তিনি তাঁর কবিতার মাধ্যমে আকারে ইঙ্গিতে অনেক অজানা তথ্য পরিবেশন করে গিয়েছেন কিন্তু প্রকৃত পর্যালোচনার অভাবে সেগুলো এখনো অনাবিস্কৃতই হয়ে আছে । এই দুর্ভাগা দেশে তাঁকে কেউই চিনলো না । উত্তর প্রদেশে স্কুল পাঠ্য পুস্তক থেকে তাঁকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে । অথচ কীমাশ্চর্যম্ তিনি যদি এ্যামেরিকা বা ইউরোপের কোন শহরে জন্মগ্রহণ করতেন তাহলে তাঁর জনপ্রিয়তায় কোন খামতি থাকতো না । এই দেশে ক’জন রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে চর্চা করেন বা রবীন্দ্র সঙ্গীত শোনেন বলতে পারো ?
কিন্তু যে যাই বলো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ আমাদের কাছে অপার বিস্ময় এই কথা একবাক্যে স্বীকার করতেই হবে ! একটা উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করি অর্থাৎ তিনি এখনো কতটা প্রাসঙ্গিক আমাদের জীবনে -- বাংলা ও বিহার রাজ্য দুটোকে একই মায়ের দুই মেয়ে বলা যায় কারণ ব্রিটিশ আমলে অবিভক্ত বাংলার অন্তর্গত ছিল বিহার প্রদেশ । ছট পুজো উপলক্ষে বিহারে থাকে দুই আর বাংলায় থাকে তিন দিন ছুটি । কেন জান ? তোমরা রবীন্দ্রনাথ রচিত “দেবতার গ্রাস” কবিতাটি স্মরণ করো । উত্তর পেয়ে যাবে । রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন – “সে থাকিবে সুখে মার চেয়ে আপনার মাসিমার বুকে” । বলা বাহুল্য বিহার প্রদেশের মানুষরা বিহারের চেয়ে বাংলায় বেশি সুখী । তাঁরা বাঙালিদের চলন্ত লোকাল ট্রেন থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাইরে ফেলে দেওয়ার অধিকার রাখেন । তাঁরা বাংলায় স্নেহময়ী মাসির আদরে পরম নির্বিঘ্নে কালাতিপাত করছেন । আর সুযোগ পেলেই বড়বাজারে গণধোলাই দিচ্ছেন বঙ্গ সন্তানদের অথচ কোন প্রতিবাদ নেই । পশ্চিমবঙ্গবাসী বাঙালিরা কেবল কবিতা আর লিটিল ম্যাগাজিনের জন্ম দিতেই ব্যস্ত ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন