উন্মুক্ত কবিতাগুচ্ছ —১৩
রূপক চট্টোপাধ্যায়-র কবিতা
১.
বুঝলে বৃন্দাবন,
বুকের ভেতরে এই অসুখ টুকুই বাঁচিয়ে রেখেছি!
নয়নে নয়ন দিয়ে দেখি
ব্রজসুন্দরী গাগরি কাঁখে যমুনায় যায়
জোৎস্না ধোয়া শরীর। লম্বা বেনী। ঘাঘরা ঘোর
মেঘলা আকুতি, কেতকীরা দলে দলে শ্রাবণ সাজায়!
আমি কি বুঝিনা? তবু এই কটা অক্ষর পেরিয়ে
তার দিকে বসন্ত ছুঁড়ে দেবো
সে মেঘমল্লার আমার নেই। তাই কালো ছোঁড়াটা
এসে আমায় শুধু বর্ণমালা তাঁর নট নুপুরের ধ্বনি
রেখে ফিরে চলে যায় আনমনে। আমি চেয়ে থাকি!
২.
স্কুল ব্যাগ ফেলে রেখে। একটা ঝড়টেনে আনে
আকাশ থেকে। কিছু না বললেও
কথাবতী এসে শুধুই বকবক করে।
কিছু মাথায় ঢোকে কিছুবা নিথর বিন্ধ্যাচল!
দুঃখ কলোনির সমবয়সী পুরুষরা এসে
বিড়ি ধরায়। কাশে । গল্প করে। আমি চায়ের
কাপ বাড়িয়ে দিতে দিতে দেখি
সবাই নিজেদের লুকিয়ে ফেলেছি,খোলায়!
শামুক হয়ে, আড়াল হয়ে, অসুখ লুকিয়ে
এভাবেই আমাদের নাটক চলে
শেষ অঙ্কের
পর্দা না পড়া পর্যন্ত!
৩.
এই যে বুকে ছোরা গেঁথে ঘুরে বেড়াই
অথচ তোমরা দেখতে পাওনা
এর নামেই ইচ্ছামৃত্যু! এর নামেই
নিভু নিভু ছায়াপথে ঝড়ের মৌন পথচারন,
লুব্ধক হীন রাত কহিনী পার হওয়ার অভ্যেস!
তবু মাঝে মাঝে
তারা সুন্দরীর ত্রিনয়ন জ্বলে। আলোহয়
বস্তিপাড়া, রেল কলোনি, শাঁখা পরে এলোকেশী!
নদীহয় ডুলুং কিশোরী! এর পর তীব্র চৈতী শেষে
দেখি, বিকেল বালিকা ফেরে স্কুল ব্যাগ পিঠে
আর
বুকের ছোরাটা কার নরম গোলাপি হাত হয়ে যায়!
৪.
বমি থেকে একদিন ঘেন্নার জন্ম হয়েছিলো,
আর বদ পুরুষের নোখর থেকে
আলজেরিয়ার, সোমালিয়া, সুদান!
কিছু ঈশ্বর এখানেই থেমে থাকেন নি
সমুদ্র মাখা শতছিন্ন গেঞ্জির ভেতর
লৌহটান পেশির খাঁজে খাঁজে শ্রম দিয়ে
বললেন - যাও তুমি শ্রমিক হও!
অথচ কি আশ্চর্য
কিছু মুখচোরা পুরুষ
তখনও শুধুই প্রেমিক হতে চেয়েছিলো!
বাংলা কবিতা গুলিকে ইংরাজী ভাষায় অনুবাদ করে প্রকাশ করা হচ্ছে কেন, ঠিক বুঝলাম না।
উত্তরমুছুন