লেবেল

বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১

ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস (পর্ব-৮)।। ট্রেকিংয়ের পথে রহস্য — অনন্যা দাশ।। Ankurisha ।। E.Magazine ।। Bengali poem in literature ।।

 




ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস (পর্ব-৮)

ট্রেকিংয়ের পথে রহস্য 

অনন্যা দাশ 


ভজার গাড়িটা করে রক হাইওয়েতে উঠে পড়ল। আজকে প্রচুর ড্রাইভিং হয়ে গেছে। সকালে যেতে দু’ঘন্টা আবার প্যাট্রিককে নিয়ে ফিরতে দু’ঘন্টা। তারপর ও নরফোকে থেকে গেলেই পারত কিন্তু খারাপ লাগছিল যে, সে গ্রান্টের জন্যে অঙ্কন ভজাকে ওখানে টেনে নিয়ে গেল অথচ ওকেই কিনা ফিরে আসতে হল আর ওরা রয়ে গেল। এদিকে ওর নিজের গাড়িটা একটু ঘড় ঘড় শব্দ করছিল তাই সে ফিরে গিয়ে গাড়িটাকে গ্যারেজে দিয়ে ভজার গাড়িটা নিয়ে আবার আসছে গ্রান্টের গ্রামে। কিন্তু গ্রান্টের পরিবার আর আত্মীয়স্বজনের ব্যবহারেও ও বেশ ক্ষুব্ধ। ওরা কিনা গ্রান্টের বন্ধু, এত দূর থেকে ওকে সম্মান জানাতে গেছে আর তারা ওদের সঙ্গে যাচ্ছেতাই ব্যবহার করছে। গ্রান্ট ছেলেটা বড়ই চুপচাপ টাইপের ছিল। মানে এমনিতে হয়তো হাইকিং বা ট্রেকিং নিয়ে হাজারটা কথা বলে দেবে কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে কোন আলোচনাই সে করত না। সে যদি কিছু বলত তাহলে হয়তো ওর পরিবারের লোকজনের বাজে ব্যবহারের কিছু অর্থ বুঝতে পারা গেলেও যেতে পারত।

ঘন্টাখানেক যাওয়ার পর রক বুঝল তাকে ফলো করা হচ্ছে। একটা কালো রঙের জিপ ওর পিছন থেকে নড়ছে না। সেটা আরো পরিষ্কার হল যখন গাড়িতে তেল ভরার জন্যে একটা ছোট গ্রামের পথের এক্সিট নিয়ে একটা পাম্পে গিয়ে তেল ভরালো। তখনও জিপটা ওর সঙ্গেই থাকল। রক তেল নিল কিন্তু কালো গাড়িটা তেল নিল না শুধু রাস্তার অন্য দিকে দাঁড়িয়ে রইল। আবার সে বড়ো রাস্তায় ফিরে যেতে তারাও চলে এল। অনেক কঠিন পরিস্থিতিতে অনেক দুর্গম পাহাড়ি পথ অতিক্রম করেছে সে। অনেক বার জঙ্গলে জন্তু জানোয়ারের সামনে পড়েছে কিন্তু কখনও নিজেকে এতটা অসহায় মনে হয়নি। রকের বিশ্বাস মানুষই সব চেয়ে হিংস্র জীব আর মানুষই মানুষের সব চেয়ে বেশি ক্ষতি করে।  

কী মনে করে রক অঙ্কনকে ফোন করল। সব শুনে অঙ্কন ভজাকে ব্যাপারটা বলে তাকে ফোনটা দিল।   

ভজা বলল, “ভয় পেও না রক। কিছু একটা চলছে। ঠিক কী বুঝতে পারছি না। তবে ওরা যদি একটা নিরাপদ দূরত্বে তোমার পিছনে আসতে থাকে তাহলে ঠিক আছে। এখানে চলে এসো তারপর দেখা যাবে। ডিনারের জন্যে পিজা কিনে রেখেছি। আর আমাদের ঘরে একটা এক্সট্রা খাট দিয়ে গেছে ওরা, তাই আমরা রেডি। নতুন কিছু তথ্য জানতে পেরেছি। এলে বলব। সাবধানে চালিও, পিছনের গাড়িটাকে পাত্তা দিও না।”  

ভজা আর অঙ্কনের সঙ্গে কথা বলে কিছুটা আশ্বস্ত হল রক। তাও গাড়ি চালাতে চালাতে সামনের আয়নার দিকে দেখতে চেষ্টা করতে লাগল। জানতে ইচ্ছে করছিল যে যারা ওর পিছু নিয়েছে সেই লোকগুলোকে কেমন দেখতে। খুব একটা কিছু বোঝা গেল না। লোকগুলোর মাথায় টুপি, চোখে ইয়া বড়ো বড়ো সানগ্লাস। ওরা ইচ্ছে করেই ছদ্মবেশ ধরে বসে আছে যাতে ওদের মুখ না দেখা যায়। স্পিড লিমিট পঞ্চান্ন থেকে বেড়ে পঁয়ষট্টি হয়েছে দেখে রক অ্যাক্সিলেটারে চাপ দিল। গাড়িটা গোঁত্তা মেরে এগিয়ে চলল।  





চলবে...


এই ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাসটি প্রতি শুক্রবার অঙ্কুরীশা-র  পাতায় প্রকাশিত হবে। আপনারা সবাই পড়ুন ও মতামত জানান। 





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন