দীর্ঘ কবিতা।।
শিমুল নামের মেয়েটির হাসি
সুধাংশুরঞ্জন সাহা
জানি, খেলা শেষ হলে
ঘর ভেঙে যায় ।
খেলা এক আদিম প্রতিভা ।
একা চৈত্রমাস সর্বনাশা নয় ।
আষাঢ় শ্রাবণ জানে বাকি সব।
আলগা মাটি, শিকড়চ্যুত ঘাস,
মরা নদী, মজা ঝিল ভেসে যায়।
তুমি আমি আমরাও ভিজে যাই,
আপাদমস্তক।
বৃষ্টির এমন ক্যারিশমা !
হে মেঘকিশোরী, তুমি আমার হারানো প্রেম।
বাতিল সফর মুছে বোনো নতুন গানের কথা।
গিটারে বাজুক ভিন্ন স্বর ।
(২)
বুকের উপর ভেসে আসে মেঘলা আকাশ,
ঘনঘন বিদ্যুৎ চমকায় ।
বাজ পড়ে মুহুর্মুহু ।
কান্নার রোল ওঠে কোথাও ।
আহা ! জীবন, আহা ! ঘরসংসার ।
কে বন্ধু, কে শত্রু,
আর কে বা কারা প্রতিদ্বন্দ্বী,
সব মিলেমিশে একাকার।
(৩)
জল নেমে গেলে ঘুমন্ত রাস্তাও
জেগে ওঠে ফের ।
যাবতীয় দোষারোপ মুছে দিয়ে
চোখের পলকে বদলে যায় আবহাওয়া ।
নিরুপায় মানুষ ঘরে ফেরে আবার ।
রন্ধনশালায় খুন্তি নাড়ে দুবেলা ।
অরণ্যে যায় মধু সংগ্রহে
চাক ভাঙতে গিয়ে মৌমাছি হুল ফোটায়
অথবা ভীমরুলের তাড়া খায় ।
শীতের জীর্ণ গল্প প্রেম হারায় ।
পাঁচকানে রটে নিষাদ-উপমা।
(৪)
জলে নামিনি ততোটা ।
তবু, ঢেউ আমাকে ভেজায়,
ভাসায় আমাকে বারবার ।
শীত ফুরোতে না ফুরোতেই
অন্ধকারের ক্ষত মুছিয়ে,
দুমুঠো গরম ভাতের দুঃখ ভুলিয়ে,
আগুনের উৎসব শুরু হয়
পলাশের রঙে, শিমুলের ইশারায়।
কিশোরী পায়ের শব্দে
নরম রোদ্দুর ফুঁসে ওঠে মনে ।
(৫)
অক্ষম নই তবুও
অবিশ্বাস্য অন্ধকারে ডুবে থাকি।
যোগ বিয়োগের শূন্য রাতে
নদীতে বিস্তারিত জোছনা খেলা করে ।
প্রতিশ্রুতি দ্রবীভূত হয় জলে ।
মনখারাপের ফাগুনদিন,
ভুলে যাওয়া বকুলবীথি,
কিংবা শিমুল নামের মেয়েটির হাসি
কতটা চওড়া হলে নিঝুম বিকেল
দ্রুতগতির বাইকে চেপে
বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারতো,
রাত্রি ছাড়া সে খবর কেউ রাখে না ।
(৬)
আজ এসব কথা উসকে দেয় আলোর বিভ্রম,
অনন্ত মায়ার এক বহমান নদী ।
অবয়বহীন সেই রূপে শুধু
রহস্য আর বিস্ময় ।
অপেক্ষার এক চক্রব্যূহে
সত্তার নিবিড় জাগরণ ।
আত্মখননে উঁকি মারে কেবল
শিমুল নামের মেয়েটির হাসি... ।
-------------------------------------------------------------------------------------
এই বিভাগে মৌলিক ও অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
ankurishapatrika@gmail. com
-------------------------------------------------------------------------
ভালো লাগল বেশ
উত্তরমুছুন