কবি ও সাহিত্য পুরস্কার
বিকাশ দাস (মুম্বাই)
কবি...
কবিতা বাঁধার জন্য নদী খোঁজে সমুদ্র খোঁজে
সমতলে বিশালদেহি পাথুরে পাহাড় খোঁজে
গাছগাছালির পোয়াতির গর্ভে আনন্দ খোঁজে
আঙুলে আঙুল ঠেকিয়ে তৃপ্তি-বিহান খোঁজে।
কবি জানে...
স্রোতস্বিনী সময়ের সধবা যাপনে যৌবনের কাঁপন আছে
কামনার কিনারে কিনারে অভিমান ভাঙার নিশান আছে
আলিঙ্গনের ভাঁজে ভাঁজে চুম্বনের নিষ্পাপ নিশ্বাস আছে
মাটির প্রতিমায় প্রাণের শিহরণ তুলে বাঁচার বিধান আছে।
খালি পেটে বিড়ির ধোঁয়ায় ঠোঁট পুড়িয়ে তমসার তিলে তিলে
নারীর নাভির উপরের অংশ আর নীচের অংশের খাঁজ নিংড়ে
অজস্র কবিতার রসদ নিয়ে ফিরে আসে কবিতার গর্ভানাবিলে
আঙুলের সংশ্রবে রমণীর সুষমা ডুবিয়ে শব্দের নিঃশব্দতা চিরে ।
সূর্য পুড়ে পুড়ে
রোজ ছাই হবে
ছাই উড়ে উড়ে
রোজ সূর্য তবে।
মানুষ বিশ্বশান্তির তল্লাশ পেতে থাক
কবি দুঃখ-কষ্টের হোঁচট খেতে খাক
কবিতার মোহে অন্তরঙ্গ সঙ্গী থাক।
মুখভারি আকাশ শূন্যতার দিনেও বসন্তের ধুলো ছড়িয়ে ঘাসে ঘাসে
কবি প্রেয়সীর ঠোঁট চুমে প্রেরণার আঁচ কুড়িয়ে নিতে সংসারে আসে।
যেদিন কবিতা দেশের পাতায় উঠবে কবির পরিচয় উপচে
রুপোলী পর্দায়
আর কিছু কবিতা মুখথুবড়ে থাকবে অবহেলা অন্ধকারের
অন্বিষ্ট গর্দায়।
কবি কি জানতে পেরেছে নারীর রহস্যের ফাঁস ?
ফিরিয়ে আনতে জীবনের আকাশকুসুম মান্দাস ?
এ’পৃথিবী
লোভের লাভে,পাপের পুণ্য শাপে
ঘৃণার শোকের উন্মত্তার আদপের ধাপে
দুঃখ-কষ্ট-কান্না চেপে থাকা সংক্ষিপ্ত জীবন নয়।
হেসে উড়িয়ে চলে যাওয়াই জীবনের বেলা আনন্দময়।
কবি দিনরাত্রি
শুধু সাহিত্য পুরস্কারের লোভে
লজ্জা করে না লজ্জায় চুবিয়ে কবিতাকে দিতে বিবসনা।
বার বিলাসিতার শয্যায় খোয়াবে
জমে থাকা শব্দের ঋণ চুকিয়ে দিতে এক টুকুও চিন্তামগ্না।
কবির
উত্থান পতন বলতে শব্দের বিন্যাসে দু’চোখ দৃষ্টিভুলো
শব্দে ডোবে শব্দে ভাসে শব্দের শবে সর্বনাশের চুলো।
কবিতার বিবাহবাসরে আলো নিভিয়ে জানলা খুলে আকাশ দেখা
কত দেশ ভাগ হয়েছে কেটে মাটির বুকে রক্ত আঁচড়ের রেখা।
একদা
ভালোবাসার আসা যাওয়া দিব্যি ছিলো মিলিয়ে যাওয়া বুকে বুকে
কুপির আলোয় ছোট্ট সংসার সংরাগের মাটি মেখে সুখে দুঃখে ।
কবিতা যেন কোন জন্মেও ফুল হয়ে না ফোটে
কীট পতঙ্গের সঙ্গী হয়ে গন্ধের গভীরে না ছোটে।
কলমের স্পর্শে কবিতার কাব্যগাথা থাক নিভৃতে
পরিশ্রমী মানুষের ঘ্রানে শ্রমের মর্যাদা চিনে নিতে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন