লেবেল

মঙ্গলবার, ১৪ জুলাই, ২০২০

নির্বাচিত ছড়াগুচ্ছ।। সুজন সাজু



জানতে হলে

দাদুর সাথে গল্পে মাতে
দুষ্ট খোকা মিষ্ট,
হাসি মুখোয় সোহাগ ঝরে
কী আদুরে শিষ্ট।   
জানতে মিষ্ট জিগ্যেস করে 
কত্তো কী দাদুরে,
রাতের বেলায় আসে কেন
কলা খেতে বাদুড়ে?
চড়ুই কেন বাসা বাঁধে
আমাদের ঘর চালে,
পানি পড়ে আকাশ থেকে
কোন সে জনা ঢালে?
পুকুর ভরা অনেক মাছে
কী আনন্দে খেলে,
ক্যামনে ওরা হয় যে বড়ো 
কোথা খাবার মেলে?
দিনের বেলায় সূর্য ওঠে 
চাঁদের আলো রাতে,
কে দিলো দায়িত্ব তাদের 
কার ক্ষমতা হাতে?
প্রশ্নের পরে প্রশ্ন করে
দাদুর নাতি মিষ্ট,
কেমনে দেবে উত্তর এসব 
ভাবনা দাদুর পিষ্ট।   
মাথার উপর হাত বুলিয়ে
নাতিরে কয় দাদু,
জানতে হলে পড়তে হবে
এসব কিছুর যাদু।   




দোয়েল ও বিড়াল 


দোয়েল পাখি শিষ বাজিয়ে
নাচায় খুশির পুচ্ছ, 
হাওয়ায় দোলে সোনালি ধান
সাজিয়ে থাকা গুচ্ছ।  
এদিক ওড়ে ওদিক ঘোরে
ঘাস ফড়িঙের ছানা,
অই সুযোগটা নিচ্ছে লুফে
খাচ্ছে দোয়েল খানা।
দূরের থেকে বন বিড়ালে
দেখছে চুপি কান্ড,
ফন্দি আঁটে ধরবে দোয়েল
পুরবে খেয়ে ভান্ড।
চালাক দোয়েল টের পেয়েছে 
নামে না ধান ক্ষেতে,
ধৈর্য হারায় বন বিড়ালে
উঠল ভীষণ চেঁতে।  
মুসকি হাসে দোয়েল তখন
পুচ্ছ নাচায় জোরে,
বন বিড়ালে রাগের ছোটে
ধানের ক্ষেতে দৌড়ে। 


বোকা দাদী

নাতি, পিছনে ওটা কী
হাতি, ভয় লাগে না?
কিসের ভয়, সাহসী আমি
অই হাতি রাগে না। 

দাদী বলে, ওরে বাপরে
কত্তো বড়ো হাতি,
এক নিমিষে অক্কা পাবো
দেয় যদি রে লাথি।

নাতিয়ে কয় বোকা দাদী
বুদ্ধি গেল বেঁকে,
ভয় পেলে অযথা তুমি 
হাতির ছবি দেখে।  


  পাখির ছড়া

চিঁকুত চিঁকুত সুর করিয়ে
এদিক সেদিক ঘুর ঘুরিয়ে
খেলে বেড়ায় ফিঙে,
মাচায় লতার ঝিঙে,
খুশির ঢঙে পুচ্ছ নাচায় 
ঢিং ঢিঙা ঢিং ঢিঙে।

কুটুম পাখির হলদে শাড়ি
রাঙা ঠোঁটে লাগে তারই
রূপ লাবণ্যে বেশ,
মুগ্ধতার নেই শেষ, 
ডাল সবুজে গান ধরিলে
জাগে আনন্দ রেশ।

বুলবুলিটা মেললে পাখা
দৃশ্যে ভরে আদর মাখা  
ফুলে যখন বসে,
হর্ষ জাগায় রসে,
রসে মানে পুলকে ঢেউ
হৃদ কাননে চষে।  



   ফুল ও পাখি
             
অই দেখ না হাসছে পাখি ফুল কলিতে বসে,
ফুলগুলিও সাথী হয়ে আড্ডা জমায় রসে।
দিনে দিনে ভাব জমিলো পাখির সাথে ফুলের,
এমন সখ্য হলো যেন চৌদ্দ জনম কুলের।
ভোরের সকাল নিত্য পাখি ফুলের কাছে ছোটে ,
ফুলও যেন মুখ খুলিয়ে পাখির জন্য ফোটে। 
মন খুশিতে ফুল পাখিয়ে রঙ্গ মেলায় ভাসে।
খুনশুটিতে মাতে না কোন কাটায় পাশে পাশে।    
দিনের শেষে ঠিক যখনি রাতের আঁধার ফিরে, 
পাখি তখন উড়াল মারে নিজের গড়া নীড়ে।
এমন করে দিন কেটে যায় বন্ধু ফুল ও পাখির, 
কত্তো ভাবের আদান প্রদান সোহাগ মাখামাখির।  
দিনের পরে দিন গড়িয়ে অটুট থাকে বাঁধন, 
হঠাৎ একদিন ক্ষণ সকালে আসলো পাখির কাঁদন।   
কারণ তখন পাখি দেখে ফুলটি গেছে ঝরে,  
এমন প্রিয় সখার জন্য প্রাণে কী আর ধরে?   
শোক রোদনে অস্থির পাখি দূর অজান্তে হারে, 
প্রাণের সখা ফুলের স্মৃতি ভুলতে কি আর পারে?



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন