কবি শামসুর রাহমানের প্রয়াণ দিবসঃ- শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনে- বিমল মণ্ডল
বাংলাদেশের মাটি, মানুষ ও হৃদয়তন্ত্রীতে বেঁধে আত্মোপলব্ধিকে কাব্যের মূর্ছনায় মানুষের কাছে যিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন,তিনি আধুনিককালের অন্যতম কবি শামসুর রাহমান। কবি শামসুর রাহমান স্বদেশের মানুষের কাছে যেমন আদৃত,পশ্চিমবাংলার ও বাংলাভাষার কাব্যপ্রিয় মানুষের কাছে তেমনই সমাদৃত।
শামসুর রাহমান বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মাহুতটুলিতে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঢাকার ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএ পাশ করেন। ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।
শামসুর রাহমান প্রথম কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সাংবাদিক হয়ে। তিনি একটা দৈনিক ইংরেজি পত্রিকা "মর্নিং নিউজ''- এর সহসম্পাদক পদে কাজ কাজ শুরু করলেও পরে সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ছিলেন।কর্মসূত্রে কবি বিশ্বের বহু দেশ ভ্রমণ করে ছিলেন।
কবি শামসুর রাহমানের কাব্য সম্ভারের পরিধি অনেক বড়ো।তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হলো -
১.প্রথম গান
২.দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে
৩.রৌদ্র করোটিতে
৪.বিধ্বস্ত নীলিমা
৫.নিরালোকে দিব্যরথ
৬.নিজ বাসভূমে
৭.বন্দী শিবির থেকে
৮.দুঃসময়ে মুখোমুখি
৯.একফোঁটা কেমন অনল
১০. প্রতিদিন ঘরহীন ঘরে প্রভৃতি।
কবি শামসুর রাহমান তাঁর কবিতার জন্য 'আদমজি পুরস্কার','জীবনানন্দ পুরস্কার' প্রভৃতি নানান পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন।কবি বাংলার মাটি ও মাতৃভাষাকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবেসে ছিলেন।এই মাটির মায়া ছেড়ে ভালোবাসার সম্পদ রেখে মানুষের হৃদয় নিয়ে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ১৭ই আগস্ট কবি অমৃতধামে গমন করেন। তাঁর আজ সেই মৃত্যু দিন। তাঁর চরণে আজ জানাই বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি -
"...প্রাগৈতিহাসিক
পানি প্রত্যুষের
গাল বেয়ে নেমে আর গাছের সবুজ
চোখ থেকে খ্রীস্টপূর্ব দুঃখীর অশ্রুর মতোই
টপ টপ করে শিশিরের জল।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন