বড় ব্যাগ ছোট ব্যাগ
ঝন্টুচরণ এজলাসে এসে তাকিয়ে জজের পানে
বুঝতে পারে না এ কেসের মানে তার দোষ কোনখানে ।
জজ শুধালেন ঝন্টুচরণ বল দেখি ঝেড়েকেশে
অকারণে ঐ গোবেচারাকে ধরে ঘুঁষি দিলে জোরে কষে।
কোন দোষ নাই শান্ত নিরীহ মাছ খায় সোজা করে
তাকে তুই ফেলে এমন প্যাঁদালি ব্যাটা যদি যেত মরে।
চড় থাপ্পড় লাগালি জোরসে ব্যাটাকে মারলি মাঠে
যত চেষ্টাই করতিস তুই ঝুলাতাম ফাঁসিকাঠে ।
ঝন্টু বললো চাকরি আমার সরকারি বাসে ঘোরা
ভাড়াটা চাইতে বের করে আনে বড় ব্যাগ আনকোরা।
তার পেট থেকে মাঝারি একটা তার মাঝে আরও ছোট
তার মাঝে দেখি আরও একখানা দেখিনিতো কোন নোটও।
পরের টার্মে হলাম হাজির কটা টাকা পাবো বলে
গিয়ে দেখি সেই বড় ব্যাগটাই রাখা আছে পদতলে।
চাইতেই টাকা মাঝারি ব্যাগটা বের হলো তার থেকে
ছোট ব্যাগটাতো তখনও ভেতরে দেখাই যায় না তাকে।
ভীষণ রেগেই জজসাব কন আমাকে পাগল পেলে
কই লস্কর বার করে আনো দাও মার নীচে ফেলে।
সেই থেকে শুধু ছোট বড় ব্যাগে কান হলো ঝালাপালা
সারা দিনটাই মাটি হলো আজ কানেও লেগেছে তালা।
হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে বলে জজসাব মহারাজ
ধৈর্য্য শুধুই বড় বেশি কম বুঝে গেছি আমি আজ।
পাঁচ মিনিটেই এত রাগারাগি তালা লেগে গেল কানে
বুঝুন তা হলে ঘন্টা পাঁচেক চেয়েছি ব্যাগের পানে।
আমি বলি তবে আসি ঘুরে ফিরে টাকা নেবো যদি পাই
ফিরে এসে দেখি ভিডিও রিপ্লে আগেকার ঘটনাই।
আমি যত বলি কটা তো পয়সা তাও ফ্রিতে নয় চাওয়া
বড় ছোট শুধু ব্যাগ চক্করে পয়সাই হলো হাওয়া।
একই ভাবে চলে বড় ছোট ব্যাগ তারপরে আরও ছোট
নাহি জেনে বুঝে ফাঁসালো আমাকে কেস দিলো সুও মোটো।
জজ নেমে এসে এজলাস থেকে ঝন্টুর হাতে ধরে
সব অভিযোগ বাতিল করেছি দিও মোরে ক্ষমা করে।
ভোটের প্রমান
ঝন্টুচরন সকাল সকাল ভোটের বুথে গিয়ে
ভোটটা দিয়েই ফিরবে ঘরে বাজার ব্যাগে নিয়ে ।
ধরলো তাকে পার্টির ক্যাডার বললো ভোটটা দিতে
ভোটটা দিয়েই ঝন্টুচরন দাঁড়ালো রাস্তাতে ।
বললো এসে ক্যাডারগুলো ভোটটা দিয়েছো কি
বিশ্বাস আর করবো কাকে সবই এখন মেকি।
মানুষ এখন চালাক ভীষণ যায় না তাকে বোঝা
কথায় কাজে ফারাক বড়োই বিষয়টা নয় সোজা ।
আমি কিন্তু তেমনটা নই যা বলি তাই করি
প্রমাণ আছে জানিয়ে দিলো ব্যালট হাতে ধরি।
তোমরা সবাই কি ভাবছো বয়েই গেল তাতে
বিশ্বাস করবে না জেনেই প্রমান রেখেছি হাতে ।।
প্রানায়ামে সময় নষ্ট
প্রানের বন্ধু দুইজনে মিলে হানিমুনে গেল পুরী
মজাটা সবাই ভাগ করে নিয়ে একই সাথে ঘোরাঘুরি ।
বেশ কটা দিন এদিকে ওদিকে মন্দির কোনারকে
মনের ভীষণই মিল হলে তবে এমনটা হয়ে থাকে ।
থাকাও তাদের এক হোটেলেই পাশাপাশি দুটি ঘর
জানালা দিয়েই সমুদ্র দেখে অপূর্ব সুন্দর।
খাওয়া দাওয়া শেষে বিদ্যুত নাই সবাই বসেছে লনে
ঘুম ঘুম চোখে সবাই ভাবছে ঘরে যাই কতক্ষণে ।
অন্ধকারেই ঝন্টুচরন বৌয়ের হাতটা ধরে
গুটি গুটি পায়ে কোন রকমে পৌঁছে গিয়েছে ঘরে ।
ঘরে ঢুকে বৌ ঢুলু ঢুলু চোখে শুয়ে পড়ে এলোচুলে
প্রানায়াম আজ করেনি কর্তা একদমই গেছে ভুলে ।
প্রানায়াম শেষে কর্তা যখনই গিয়েছেন বিছানাতে
কারেন্ট এসেছে ঘর আলোময় দেখছেন দুজনাকে ।
বন্ধুর বৌ এসেছে এ ঘরে তার বৌ ঐ ঘরে
গিন্নি বদল হয়েছে আঁধারে না জেনে কেমন করে ।
লজ্জায় স্বামী চাইছেন ক্ষমা বন্ধু বৌয়ের কাছে
হয়েছে তো ভুল দুই তরফের কি আর করার আছে ।
তাড়াতাড়ি যান গিয়েই দেখুন ঘরের পরিস্থিতি
এতক্ষণে তো হয়েই গিয়েছে যা হবার ছিল ক্ষতি ।
এই কদিনেই চিনেছি ওনাকে বলে দিই আমি স্পষ্ট
আমার কর্তা প্রানায়াম করে সময় করে না নষ্ট ।।
বিয়ে নয় কেন
সন্ধেবেলা বন্ধুর বাড়ি তাহারই মেয়ের বিয়ে
পৌঁছিয়ে গেছি একটু আগেই পোষাকে মান্জা দিয়ে।
ঝন্টুর বৌ সামনে আমার ঝন্টু পেছনে চলে
নাদুস নুদুস চেহারা বৌয়ের শাড়িতেই কথা বলে।
দামি শাড়ি গায়ে কিছুটা মাটিতে ঝাঁট দেয় অবিরত
কাপড়ের খুঁটে বেঁধে গেল পাটা নয়কো ইচ্ছাকৃত।
মুখ নাই তুলে বললেন ওরে অভদ্র ছোটলোক
চোখের মাথাটা এখনই খেয়েছো,চোখেতে গ্লুকোমা হোক।
সারাদিন শুধু বসে বসে খাওয়া বলদের মত দেহ
সারা পৃথিবীতে আমি ছাড়া আর বৌ তো জুটেনি কেহ।
পেছনে তাকিয়ে আমাকে দেখেই জিভ কেটে যেন কালী
চাইলেন ক্ষমা স্বামী মনে করে দিয়েছেন যত গালি।
ভাবলাম আমি আমার কারনে বেচারা শুনলো কটু
চোখেতে তাকিয়ে বুঝলাম আমি এ ব্যাপারে তিনি পটু।
সেই থেকে আর বিয়ে করবার জাগেনিকো মনে সাধ
বুঝে গেছি আমি বিয়ে করলেই জীবনটা বরবাদ।
দ্যাখ না কেমন লাগে
হাইস্কুলের বড়দিদিমনি ব্যাংকের খিড়কিতে
তিন’শ টাকার চেক খানি কেটে বললেন টাকা দিতে।
তিন শত টাকা হবেনা এখানে পাঁচ হাজারের কম
এ টিএম থেকে নিতে হবে টাকা ব্যাংকেরই এ নিয়ম।
টাকা আছে যত আমার খাতাতে দিন সব একবারে
এমন ব্যাংকে রাখবো না টাকা সময়ে যে দিতে নারে।
ব্যাংকের বাবু খাতা খানি দেখে বললো মোদের ঘরে
এতগুলো টাকা ব্যাংকেই নাই পাবেন কেমন করে।
আপনি বরং দেখা করে যান শাখা মালিকের সাথে
আপনার টাকা ব্যাবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে যাতে।
তাহলে বলুন কতখানি টাকা একবারে দেওয়া যাবে
তিন লাখ টাকা একবারে কেউ নিলেই সে টাকা পাবে।
তিন লাখ টাকা লিখে দিয়ে চেকে দিলে কাউন্টারে
ক্যাশিয়ারবাবু টাকা গোছালেন ছোট বড় নোট ধরে।
বললেন তিনি টাকা বুঝে নিন ছাড়লে কাউন্টার
কম যদি হয় একবার গেলে দেওয়া যাবে নাকো আর।
দিদিমণি নিয়ে সমস্ত টাকা গুনলেন একে একে
তিন শত টাকা বার করলেন নোট বান্ডিল থেকে।
বললেন দাদা দয়ার সাগর একটু কষ্ট করে
আমার খাতাতে সমস্ত টাকাটা দিন এইবার ভরে।
মনে মনে তিনি বললেন নিজে ভাবিস কাজের আগে
পড়লি তো তুই নিজের ফাঁদেই দ্যাখ না কেমন লাগে।
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান।
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন