করোনার বিচ্ছেদ
তোমার সাথে শুধুই কথা এখন
স্পর্শ পাবার স্বপ্ন বুকে বেঁধে
ঘরবন্দি বেশ কিছুদিন হলাম
মহামারির বিশ্বজুড়ে ত্রাস
তৃতীয় এই বিশ্বযুদ্ধ এক
শুধুই এখন ফোনে কথা বললাম
জেনো এসব ঘুমের ঘোরে দেখা
ঘুম ভাঙলেই সূর্য কথা বলে
গাছে গাছে উঠবে নেচে পাখি
এখন না হয় দেশকে ভাবলাম
আশেপাশে যারা পরিজন
সবাই যেন সন্দেহতে তাকায়
পাশ কাটিয়ে মুখ ঘুরিয়ে বলে
আছো কেমন বন্দিজীবন ঘরে
জানি তারও অবস্থানে সে-ও
ঘাড় ঘুরিয়ে সতর্ক করলাম
যেখানে রোদ্দুর পৌঁছায় না
যেখানে রোদ্দুর পৌঁছায় না
সেই সব অদেখাগুলো হাতছানি দেয়
আকর্ষক হয়ে ওঠে--- অন্ধকারগুলো
আমরাও হারিয়ে যাই অন্ধকারে
এই সময় যখন সতর্কতা চায়
ঘুম ভাঙিয়ে প্রদীপ জ্বালায়
তখন কেন চুপটি থাকো আর
নিজের সাথে মিশতে ভয় পাও
এখন মুখে টুকরো কাপড় ঢাকা
চেয়ে থাকে শুধুই দুটি চোখ
বাদবাকি সব গোপন অঙ্গ মতো
দেখার জন্য আকুল ব্যাকুলতা
নানান রঙে নানা সাজে মানুষ
মুখের ওপর ফেলবে পর্দা বাহার
ফ্যাশন হয়ে উঠবে এই 'মাস্ক'
যেকোনো শুভ-অশুভ অনুষ্ঠানে
যেখানে আছি রোদ্দুর ঘন বাস
সেখান থেকেই অন্ধকারের চাষ
মানুষ আমরা এখন থেকে জেনো
আঁধার ছেনে গড়তে হবে আলো
একান্ত জীবন সংলাপ
অনন্ত বিস্ময়ে আছি সময় এখন
প্রকৃতির রুদ্র প্রতাপ আর ভয়ঙ্কর অসুখ
জীবন ডুবিয়ে অন্ধকার তুলে দেখায়
আলো কত মায়াখেলা জানে
এমন জীবন ভেবে নিয়ে দেখো আকাশ
সেখানেও জমা আছে মেঘের বিলাপ
তুচ্ছ এ সুখ আর শান্তির কারাগার
প্রতিদিন ডুবে থাকি অন্ধকার আধার
একদিন ভোর হবে আকাঙ্ক্ষিত দিন
জীবন বদলে উঠে সাজাবে সংসার
তখন তুমিও এসো দূরত্ব ভুলে
অন্ধকারে ফোটাব ফুল শুভ্র আলাপে
এই দেখো হাটখুলে দরজা রেখিছি
অভাব রেখেছি সরিয়ে দু-হাতে
আলাপনে সব সংগীত বাতাস ভাসাবে
তুমি এলে তুমুল আনন্দ বিছাবে।
ক্লান্ত ভারত আমার
ক্লান্ত পরিযায়ী ভারত ফিরছে
আর এক ক্লান্ত ভারতবর্ষে
একটা ভারতের মধ্যে এতগুলো ভারত
আজ স্বচক্ষে মানুষ দেখছে
আমরা এক জাতি এক প্রাণ বলি
এক দেশ বলি বলি ভারতীয়
অথচ এই মহামারী না এলে
গোপনই থেকে যেত সব কৌশল
এত খণ্ড ভারত এত খণ্ড তার মানসিকতা
সমস্ত গণতন্ত্রকে পথে নামিয়ে ফেলে
হাঁটছে সুদূর মুম্বাই থেকে বাংলা
হাঁটছে সুদূর উত্তর থেকে দক্ষিণ
হাঁটছে সুদূর পূর্ব থেকে পশ্চিম
এ-অনন্ত হাঁটা একমাএ নিজের বাড়ির দিকে হাঁটা
এতদিন যারা জানত এই দেশ আমার বাড়ি
সব ভুল ভেঙে গিয়ে তাদের সূর্য নিয়েছে পশ্চিম
পথ হাঁটছে আমার একান্ত ভারতবর্ষ
পথে মরছে আমার ভোট দেওয়া ভারতবর্ষ
পথে ক্লান্ত পথিক আকাশের দিকে অবাক উচ্চারণে
বলে চলে... এতগুলো ভারত আছে জানতাম না
তুমি মহামারী এসে চোখ খুলে দিলে
বুঝলাম আমার শোবার একান্ত দীর্ণ ঘরটি
একমাএ ভারতবর্ষ
অন্য বাড়ি
তোর জন্য একটা বাড়ি আছে
আকাশ বাড়ি নাম দিয়েছি তার
বাড়ির ভেতর অনেকগুলি ঘর
বাল্যবেলার স্মৃতি সেথায় ভাসে
লতায় পাতায় আমরা ক'জন পরম
ভাগ করে নিই অন্ধসময় যখন
খেলতে গিয়ে হারিয়ে গেছি কত
আজও হারাই নিজেই নিজের ভেতর
কেউ খোঁজেনা সেদিনগুলোর মতো
ভেতর ভেতর বড্ড যুদ্ধ বাঁধে
রক্তক্ষয়ে নদীর রং লাল
লাশের পর লাশ সাজিয়ে বসি
যেন আমি যোগী পুরুষ হই
শ্মশানচারী এমন আচরণে
বাল্যবেলার সুখস্মৃতি ছুঁই।
আপনার অপ্রকাশিত গদ্য ও পদ্য পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail. com
খুব ভালো লাগল। ব্লগজিনও খুব আকর্ষণীয়। অভিনন্দন।।
উত্তরমুছুনসুন্দর ভাবনার বহিঃপ্রকাশ
উত্তরমুছুনঅন্য বাড়ি... ভাবায়, নিয়ে যায়..
উত্তরমুছুন