নামা-ওঠার মাঝখানে
মাস্টারের মেয়ে হয়ে লোকের ঘরে ঝি-গিরি করিস,কত নামবি আর!
দাদা মুখ ঝামটা দিয়ে বুটের শব্দ তুলে চলে গেল।অথচ বাবা মারা যেতেই যেন-তেন-প্রকারেণ এক পঙ্গু লোকের সঙ্গে বিয়ে দিয়েই তাড়িয়ে দিয়েছিল শ্যামাকে।
কুড়িতলায় ফ্লাটে মুমূর্ষু অসহায় বৃদ্ধা।ছেলে প্রতিষ্ঠিত প্রবাসী।সব আছে,শুধু মায়ের জন্য সময় নেই! ঔষধ খাওয়ার পর বৃদ্ধা চোখের জলে বলে উঠল,ছেলে না হয়ে,যদি তোর মতো একটা মেয়ে হত!
এই কথাটি লিফটে শ্যামা ভাবছিল,তার মনে হল,সে নামছে না,উঠছে...
নামের জন্য
---কী নাম?
---আজ্ঞে, সানাই সর্দার।
---কার সানাই তুই? বিসমিল্লাহর নাকি সেই বেধবা রসমালাইয়ের?
বুঝতে অসুবিধে হল না সানাইয়ের।শিক্ষিত অফিসার কী ঈঙ্গিত করছেন।
--বিধবাকে বিয়ে করা তো অপরাধ নয়,এ তো আইন।
---নিকুচি করেছে আইনের.. শালা সোমত্ত মাগির জন্য দরদ উথলে উঠছে,সব ফল কি পূজার?
--আপনার নাম তো বিদ্যাসাগর ঘোষ
--হা,কী করবি? নালিশ ওপরতলায়?
---না,ভাবলাম,শুধু নামে কিছু হয় না!
গল্পের বিকেল
গল্পের শেষের নীচে কেউ পড়ে না!
গঙ্গার ধারে একটি সুবৃহৎ অশ্বত্থ গাছ।তার নীচে সিমেন্টের তৈরি বসার জাগয়া।বিকেলবেলা। সেখানে নন্দিনী একটি হলুদ শাড়ি ,মাথায় রজনীগন্ধার ফুল,হাতে সোনার একটি বালা,কপালে লাল টিপসহ প্রতিদিনের মতো আজও বসে আছে।
শুভঙ্কর কথা দিয়েছে সে আসবেই..ফতুয়ার পকেট থেকে বের করে শোনাবে নতুন কবিতা...
নন্দিনীর কর্মমুখর জীবন।কত ব্যস্ততা।কিন্তু এই বিকেলটা শুধু শুভঙ্করের জন্য। হয়তো বিকেলটাই,এই অপেক্ষাটাই শুভঙ্কর।
বি.দ্র. গত দশবছর আগে একটি পথ দুর্ঘটনায় মারা গেছে শুভঙ্কর।
কবি
দুধসাদা গাড়িটি একটি গাঁয়ের রাস্তার ঠিক ঢোকার মুখে থামল।
হেঁটে এলেন সুপর্ণকান্তি।এই সময়ের বাংলা কবিতায় যার নাম লোকে এক ডাকে চেনে।রাজ্যে বা দেশের প্রায় সকল পুরস্কার করায়ত্ত। তিনি কোথায় চলেছেন?
সঙ্গী ভক্ত নবীন কবি হতবাক।
একটি পোড়ো বাড়ি।ভেতরে ঢুকেই এক প্রায় অন্ধ হয়ে যাওয়াকে বৃদ্ধকে বুকে জড়িয়ে বললেন,সুবলদা,আপনার কবিতার বইয়ের দারুন রেসপন্স, এই নিন,কুড়িহাজার টাকা।
নবীব কবি আশ্চর্য। এ তো আবার কী? এ তো মিথ্যে! ফিরেতে ফিরতে
সুপর্ণকান্তি শুধু বললেন,এঁকে দেখেই কবিতা লেখা শুরু করি,শুধু কবিতার জন্য আজ নিঃস্ব, এ আমার গুরু প্রণামী।
বাতাসের কল
একমাত্র পুত্র রাতারাতি বিয়ে করে ঘরে ফিরল।
দরজায় পুত্রবধূর মুখ দেখে দোর্দন্ডপ্রতাপ রাজনৈতিক নেতার মুখ শুকিয়ে গেল! এত বড় ফাউল প্লে তার সঙ্গে হবে, সে ভাবতেই পারেনি!
এমন কোনো অন্যায় কাজ তার দ্বারা হয় না,সে নিজেই বিশ্বাস করে না!কেউ প্রতিশোধ তো দূরের কথা,টুঁ শব্দ করতে পারেনি!
ছেলে শুধু রক্তচোখে বলল,সবকিছু কি গায়ের জোরে,টাকার জোরে শেষ করা যায়?এ শেষ হলে,আমি শেষ..
নেতাটির যেন পায়ের তলার মাটি সরে গেল।তার নির্দেশে তারই সাঙ্গোপাঙ্গ মেয়েটিকে তারই বাগানবাড়িতে সাতদিন ধরে রেপ করেছিল!
বাতাসের কল...
যেকোনো বিভাগে অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
মতামত জানান
bimalmondalpoet@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন