।। প্রতিদিন বিভাগ।।
।। প্রতিবাদী কবিতা -৪।।
যে চাঁপা অকালে ঝরলো
প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী
১.
আজ ভোরের আকাশে এত কেন মেঘ
সূর্যটা গেছে ঢেকে,
একি অকারণ , নাকি বিষম বিপদ
উত্তর খুঁজে চলেছি,
নীড় ছেড়ে পাখি শূন্যতে ডানা
ওড়ে না তো আলো মেখে
কোথায় আলো, কিভাবে হারালো
কিছুটা আমিতো বুঝেছি।
আমাদের ঘরে বিপদের হানা
সব থাকি ভয়ে ত্রস্ত
মেয়েটাতো গেছে চাকুরির স্থলে
এখনও ফেরেনি বাড়ি,
বিকাল গড়ায় সান্ধ্য আঁধারে
চিন্তা তো মনে মস্ত
রাস্তায় হাঁটি শুধু তারা গুনি
কেন ফেরে না সে তাড়াতাড়ি!
রাত্রি নিঝুম সাঁই সাঁই রব
রাস্তা কুকুর দখলে
দূর থেকে ভাসে বুনো পাখি স্বর
মনে সুর তালে বেতালে,
সময় -বুকেতে বড়ো গুরুভার
কতো চিন্তায় আশা ছলে
সমাজ এখন মোটে ভালো নেই
দুঃস্বপ্নরা জল ঢালে।
২.
রাত কেটে ভোর পুব হয় লাল
দিন হলো সবে শুরু
মনেতে বিষাদ নির্ঘুম রাত
মুঠাফোন থাকে স্তব্ধ
কত ফুল ফোটে পাখি গান গায়
নাচে দুই চোখ আর ভুরু,
পাষাণের মতো চিন্তার জট
করেছে ভীষণ জব্দ।
সারারাত ধ'রে কতনা ভাবনা
সেই স্বপ্নের মেয়েবেলা
কত যে আদর কত স্নেহ দিয়ে
গড়েছি তাজা এ মূর্তি ,
বাবা ও মায়ের শত চুম্বন
ওর হৃদয়ে তে ছিল মেলা
তাকে নিয়েই তো নিবিড় বাঁধন
তাতেই চিত্ত পূর্তি।
শিক্ষাঙ্গনে তার বিপুল কীর্তি
নিবিড় মেধার মিলনে
মানবসেবাই ছিল তার ব্রত
হয়েছে মহান ডাক্তার,
সমাজবৃত্তে কত প্রতিষ্ঠা
কাঙ্ক্ষিত গুরু চলনে
হিংসুটে যারা ক্রূর আক্রোশে
শুধু দোষ খুঁজে ফেরে তার ।
৩
হয়তো অনেক পাপের খবর
চাঁপা ইঙ্গিতে জেনেছিল
কোন আগ্রহ কিছুতে ছিল না
অবিরাম সেবা ছাড়া ,
যারা শয়তান সমাজ বিরোধী
তাকে শত্রুই মেনেছিল
সেই কালরজনীর নিভৃতে একাকী
ছিঁড়েখুঁড়ে খেলো তারা ।
মৃত্যু তাকে গ্রাস করে নিল
নারকীয় ক্ষুধা শেষে
ফোটা সেই চাঁপা সুরভি বিলিয়ে
ঝরে গেল ধিক লজ্জায়,
লাখ লাখ চাঁপা রোজই তো ফোটে
কড়া ব্যঙ্গের হাসি হেসে
এ হেন জাতির কি পরিণাম
কি লেখা অস্থি মজ্জায়!!
দেশে ওঠে ঝড় তুমুল মাতাল
একটা আওয়াজ 'জাস্টিস '
যে যন্ত্রণায় চাঁপাটা ঝরেছে
সব ক্ষিপ্ত আবেগে কাঁপছে
মানবতা আজ আইনের কাছে
দাবি প্রতিটা অহর্নিশ যে
যারা ধর্ষক, খুনী জল্লাদ
দেখি সব বুক যেন ফাটছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন