অমর একুশে -৫
দুরন্ত বিজলী
১.
কাঁটাতার
এই ছুঁয়েছি গঙ্গার জল
এই ছুঁয়েছি পদ্মার,
মেঘনা যমুনা ভাগীরথী
আর রূপনারায়ণ ও দামোদর।
জল ছুঁয়ে তো চিনতে পারি
বাংলা আমার গঙ্গা-পদ্মা,
বাংলা আমার কলধ্বনি
শব্দ দিয়ে সাজানো এপার ওপার।
শব্দ মানে ভাষার ফুল,
ভাষা এলেই ভাষাজননী।
ভাষামায়ের কথা এলেই চোখে নামে
গঙ্গা পদ্মা মেঘনা ভাগীরথী।
জলের ওপর ভেসে যায় রক্ত,
রক্ত স্রোতের শব্দে বেজে ওঠে
"ও আমার সোনার বাংলা,
আমি তোমায় ভালোবাসি"।
রক্ত আমাদের মনে করিয়ে দেয়
"ও আমার দেশের মাটি
তোমার পরে ঠেকাই মাথা"।
এ কাদের রক্ত?
আমাদের বারবার মনে করিয়ে দেয়
ভাষার জন্য ভেসেছিল যারা
আন্দোলনের জোয়ার জলে
তাদের আজ মনে পড়ে,খুব মনে পড়ে।
কাঁটাতার বড্ড বেশি বেদনাময়।
ভাষা তো বাতাস, মানে না বাঁধন বাধা,
প্রয়োজনে তীব্র গতিতে আছড়ে পড়ে
এপারে ওপারে।
২.
অশ্রু ও অক্ষরে
নদী ও ভাষার সাথে এত পরিণয়,
জমা আছে কত কথা কত পরিচয় ...
নদনদী বয়ে চলে সমুদ্র সঙ্গমে,
কথাগুলি মিশে চলে একুশ জঙ্গমে...
একুশ এই দিনটি তো প্রতিমাসে আসে,
বুকে ছেঁকা লাগে কেন ফেব্রুয়ারি মাসে?
নদীর স্রোতে ভাসে শহিদের রক্ত,
অশ্রু ও অক্ষরে ব্যথিত ভক্ত।
ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাক স্মৃতি তবু উজ্জ্বল
একুশ এদিনটি তো চোখে আনে জল।
একুশ মানে বেদনাময় অক্ষর-আলো
ভাষাজননীর কোলে শহিদ জ্বালালো।
শহিদবেদিতলে মাথা ছুঁয়ে তাই
শপথের বাণীটুকু আজ বলে যাই—
" আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি,
আমি কি ভুলিতে পারি?"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন