ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস (পর্ব-১)
ট্রেকিংয়ের পথে রহস্য
অনন্যা দাশ
অঙ্কনই জোর করে ভজাকে নিয়ে গিয়েছিল অকশানটাতে। উদ্দেশ্য ভজাকে দিয়ে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনাবে। ভজাকে সে অতি কষ্টে ঠেলে ঠেলে ড্রাইভিং লাইসেন্সটা করিয়েছে। সেটাও অবশ্য একটা গল্প। প্রথমবার মোটে কয়েক ঘন্টা গাড়ি চালানোর প্র্যাকটিসের পরই কেল্লা হতে হয়ে গেছে মনে করে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। সেবার ফেল করে যেতে প্রায় প্রতিজ্ঞা করে ফেলেছিল যে আর কোনদিন ড্রাইভিং টেস্ট দিতে যাবে না! শেষে অঙ্কন উঠে পড়ে লেগে নিজের গাড়িতে করে প্র্যাকটিস করাতে দিব্যি পাশ করে গেল। কিন্তু লাইসেন্স পেয়েও ভজার গাড়ি কেনার দিকে কোন ঝোঁক নেই। কিছু বললেই বলে, “কেন? তোর উচ্ছেটা তো রয়েছে, আমাকে আবার গাড়ি কিনতে হবে কেন?” টয়োটা করলা না কিনে হন্ডা সিভিক কিনল অঙ্কন বলে সেটাকে উচ্ছে বলে ডাকে ওরা।
অঙ্কন মেকি রাগ দেখিয়ে বলে, “তাহলে আমি কী সারাটা জীবন তোর ড্রাইভার হয়েই কাটাবো? আজ এখানে নিয়ে চল কাল ওখানে! চল চল কোন বদমাইশের পিছনে ধাওয়া করতে হবে! তোর জন্যে ওই সব করতে গিয়ে আমি পুলিশের কাছে কত টিকিট খেয়েছি জানিস?”
ভজা আর কিছু ভেবে না পেয়ে মিনমিন করে বলল, “সেই সব ফাইনে যা লেগেছে আমি তো তোকে দিয়ে দিয়েছি!”
“উফফ টাকাটা বড়ো কথা নয়! তুই লাইসেন্স যখন পেয়েছিস তখন এবার তোকে একটা গাড়ি কিনতেই হবে ব্যাস! কেভিন একটা ভালো অকশানের সন্ধান দিয়েছে। ওখানে প্রচুর সস্তায় গাড়ি পাওয়া যায়। আমরা কালই সেখানে যাব।”
ভজা গজর গজর করতে লাগল, “ঠিক আছে, তুই যখন বলছিস তখন যাবো কিন্তু বেশি খরচ করতে পারব না বলে দিচ্ছি। কলকাতা যেতে হবে নভেম্বরে। বঙ্কুর বিয়ে আছে। তখন বিস্তর খরচ হবে।”
“সে ঠিক আছে দেখতে তো ক্ষতি নেই। যদি সুবিধাজনক কিছু পাওয়া যায় তো কিনবি। ভালো কিছু না পেলে কিনতে হবে না। আমি না হয় তখন আরো কিছুদিন তোর ড্রাইভারি করব। এমনিতেও দুজনে একই জায়গায় গেলে তো আর লাগবে না। তোর নিজের গাড়ি থাকলে যদি ভোরবেলা কোথাও যেতে হয়, মানে যখন আমি ঘুমোচ্ছি তখন তোকে আর দাঁত কিড়মিড় করতে হবে না দিব্যি নিজে নিজে চলে যেতে পারবি!”
অগত্যা ভজা রাজি হয়ে বলল, “ঠিক আছে টাইমটা জেনে নিস। আর আপাতত তোকেই ড্রাইভার হয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
সেটা শুনে অবশ্য অঙ্কন দাঁত বার করে হাসল। ওরা দুই বন্ধু ফরেনসিক কাইনেসিওলজি নিয়ে পড়তে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। অঙ্কনের দিদি সোনালি যে কলেজে রেসিডেন্সি করছে সেই কলেজেই। ভজা ওরফে ভবানন্দ জালান আর অঙ্কন মিলে এটা সেটা টুকটাক রহস্যের সমাধান করে স্থানীয় পুলিশ বিভাগের সঙ্গে বেশ ভালই বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলেছে।
ক্রমশ...
প্রতি শুক্রবার প্রকাশিত হবে ধারাবাহিক রহস্য উপন্যাস - ট্রেকিংয়ের পথে রহস্য
আপনারা পড়ুন ও মতামত জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন