দুঃসময়ের কবিতা—৩৬
বিপ্লব গঙ্গোপাধ্যায়
১.
জল হাওয়ার মেয়েটি
কষ্টকে ডাল ভাত বানিয়ে
গিলে ফেলতে চেয়েছো বারবার।
এই জল হাওয়ার ভেতর মেলে দিয়েছো
নিজের ডালপালা ।
মাটিতে পা রেখে মাথা উঁচু রাখার নাম বৃক্ষ।
তুমি বৃক্ষ হতে চেয়েছো শুধু
পাতায় পাতায় সবুজ ভালোবাসা
কোষে কোষে অক্সিজেন
সবার জন্য
তবু ওরা তোমাকে বৃক্ষ ভাবতে পারল না
মানুষ ভাবতে পারল না
এমনকি জল হাওয়ার মেয়েও না
শুধু ভাবল রক্ত আর মাংসের রমনী।
২.
কৈশোর
পায়ে পায়ে ছুটে যাচ্ছে লম্বা সফরের গান
এই চঞ্চলতাটুকু কেউ তুলে রাখবে আশ্চর্য শিকেয়
এমন ভাবার কথা নয়
তবু দেখো আগুনের পাশ দিয়ে চলে গেছে নদী
আর গালে হাত কেউ তলিয়ে যাচ্ছে
জলের অতলে
এই বুঝি ভেসে উঠবে ডুবে যাওয়া দিন।
৩.
ব্যাকরণ
তোমার কি দায় ছিল বিবেকের ব্যাকরণ মেনে
যা লিখেছো
বিশুদ্ধ আগুনে রোজ পুড়িয়ে নেওয়া এই
দিনলিপি?
যুক্তির শৃঙ্খলা দিয়ে পায়ে পায়ে
বেড়ে ওঠা গাছ
তার ডাল ছেঁটে দিয়ে লিখে ফেলা সহজ প্রণালী
রাস্তার গায়ে কোন ব্যাকরণ নেই
গাছের শেকড়ে শুধু মাটির আহ্বান।
এই যে আকাশ লেখো, মন চায়
এর কোন সংবিধান নেই
কেবল বেড়ে ওঠা শাশ্বত আনন্দের গান।
৪.
আর্তি
জন্মের মুঠোয় ধরা যে আনন্দ মাটিতে রেখেছো
পথের ধুলোয় তাকে খেলাচ্ছলে
কোথায় হারালে ?
তার জন্য অস্থির ভ্রমণ
তার জন্য গভীর সন্ধান
ভেসে যাচ্ছে কারুকার্যময় এই দুরন্ত ডানায়
দুর্বিষহ ভুলে যাওয়া স্মৃতিতে ফেরাও পথ
সচকিত আলোর উত্থানে।
৫.
জল বিষয়ক
জলের কথাগুলি জলের মতো সহজ নয়
জলের কথাগুলি সরকারি উঁচুতলা থেকে নিচে গড়িয়ে আসে না ।
জলের কথাগুলি সমোচ্চশীলতা ধর্ম মানে না একদম ।
রুখামাটিতে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকাচ্ছে যে মানুষ
সে জানে জল কত জটিল।
আরও পড়ুন 👇👇
https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/06/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_84.html
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন