লেবেল

রবিবার, ১১ অক্টোবর, ২০২০

অঙ্কুরীশা-র পাতায় প্রকাশিত অন্য ক্যানভাস-এর দুই বাংলার গল্প উৎসব "স্বল্প কথার গল্প।"



অঙ্কুরীশা-র পাতায় অন্য ক্যানভাসএর  ২০বছর উদযাপনের বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে... শুরু হয়েছে দুই বাংলার অনলাইন গল্প উৎসব "স্বল্প কথার গল্প''।উদ্বোধক হিসেবে পেয়েছি স্বনামধন্য কথা সাহিত্যিক সম্মাননীয় তপন   বন্দ্যোপাধ্যায় কে। বিশেষ অতিথি গল্পকার হিসেবে পেয়েছি সম্মাননীয়া মৌ মধুবন্তী এবং সপ্তদ্বীপা অধিকারী কে। আজ উৎসবের ২য় দিনে আছেন দুই বাংলার দুই বিশিষ্ট গল্পকার বিনোদ মন্ডল এবং বাবুল আনোয়ার। আপনাদের সাদর আমন্ত্রণ। উৎসবটি উপভোগ করুন। আপনাদের লাইক ও কমেন্ট এ আমাদের এই চলার পথ সুদৃঢ় হোক,এই আশা রাখি। 


 শুভেচ্ছান্তে-

 সিদ্ধার্থ সাঁতরা                      

সভাপতি,উৎসব কমিটি।

 বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায়,

 সম্পা,অন্য ক্যানভাস।

 যুগ্ম আহ্বায়ক: মিতালী ত্রিপাঠী ও রীতা বেরা।




   






খাবার

বিনোদ মন্ডল 







চোদ্দো বছরে বার চারেক ঘরহারিয়ে এখন অনেকটা ধাতস্থ বানভাসি ঝন্টু। ঝন্টু হাঁসদা। গাঙের জলে এবারও তার ছিটেবেড়ার ঘর,  ভাঙা লাউ-মাচার পাশে সমাধিস্থ। ফুলমতি আর তিন বছরের ছেলে সাগুনকে নিয়ে করমে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিল। বন্যার খবরে নিজে ফিরে এসেছে। বিছানাপত্তর, হাঁড়িকুড়ি, চালমুড়ি সব গেছে। ঘরে একদানা খাবার নেই। কাদার সর জমে আছে মেঝে ও উঠোনে।টানাহেঁচড়া করে ঘরের বাঁশগুলো সোজা করতে লেগে পড়ল সে। পাশেই পঞ্চায়েত প্রধান প্রদীপ সরেনের পাকাবাড়ি। দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে সে। 

প্রতিবেশী নগেন, বিপিন,  ও রতনরা এসে হাত লাগালো। ঘন্টা কয়েকের চেষ্টায় ঘরটা খাড়া করে ফিরে গেল যে যার ভিটেয়। এবার মুখে হাসি ফুটলো ঝন্টু হাঁসদার। দু একদিন পরে ঘরে এসে যাবে তার ইপিলবাহা... ফুলমতি আর সাগুন। ভিজে চৌকির কোণায় বসে গামছায় বেঁধে আনা মুড়ি খেল সে। এবার উঠোনে গামছাটা ঝেড়ে দিতেই ভুক্তাবশেষে ঝাঁপিয়ে পড়ল সাত ভাই পাখিরা। জলের খোঁজে চাপাকলের কাছে গেল সে। অচল। জল নেই। প্রধান প্রদীপ সরেন তারদোতলা থেকে একটা জলের পাউচ ছুড়ে দিল নীচে। নে,খা। মুখ ফুটে বলবি তো। বুকে তেষ্টা, মুখে লাজ ! জলটা শেষক করে হাসলো ঝন্টু। মুখে রা নেই। দ্বিধা সরিয়ে প্রশ্নটা করেই ফেললো প্রদীপ -ফুলমতি কবে ফিরবে রে ঝন্টু ?







স্টেশনের বাঁশি

বাবুল আনোয়ার







তড়িঘড়ি করে স্টেশনে পৌঁছালো হৃদয় হাসান। এটাই ঢাকা যাওয়ার শেষ ট্রেন। আরেকটা ট্রেন অবশ্য আছে। তা আসবে রাত দশটায়। তাই পাঁচটার এ ট্রেনটি ধরতে না পারলে বিপদ। স্টেশনে গিয়ে হাফ ছেড়ে বাঁচলো। যাক এখন সাতটা,সাড়ে আটটার মধ্যে সে ঢাকা যেতে পারবে। সরাসরি হাসপাতালে যেতে আর আধা ঘন্টা লাগতে পারে। এক ধরনের স্বস্তি অনুভব করে। বেশ গরম পড়েছে। টিকিট কেটে স্টেশনের যাত্রীদের জন্য নির্মিত ছাউনিতে বসে পড়ে সে। এক ঝলক দমকা বাতাসে শান্তির পরশ শরীরকে স্পর্শ করে। এখুনি ট্রেন এসে পড়বে। ট্রেনের আগমনী বাঁশি বাজছে। যাত্রীদের মধ্যে সাজ সাজ রব। কিছুক্ষণের মধ্যে এক জোড়া চোখ দৃষ্টি কাড়ে তার। ট্রেন আসে।  শুরু হয় ট্রেনে ওঠার প্রতিযোগিতা। সেও লাইন ধরে কসরত শুরু করে। হুইসেল বাজে। পরিচিত, অতি আপন, হারিয়ে ফেলা সেই চোখের আলো আবার হারিয়ে যায়। স্টেশনের বাঁশি বাজে, বেদনার বিরূপ  উল্লাসে!






1 টি মন্তব্য: