—————————————
সন্দীপ কুমার কপাট
--------------------------
একটি প্রজাপতির জন্য
বকুলের কথা মনে পড়ে তোমার
যে ধন্য হয়েছিল একটি প্রজাপতির জন্য
আজ তার ভীষণ অসুখ!
সন্ধে তাকে আর ছুঁতে পারে না এখনসকাল যেন চৈত্রখরা জীবন
তবুও প্রজাপতির স্বপ্নে সে আকাশপানে উন্মুখ।
তোমার বকুলের কথা বলছি,শোনো...
যে চোখের উপর চোখ রেখেছিল একটি প্রজাপতির আশায়
হতাশায়,তার তুলসী উঠোন এখন আগাছায় সম্ভার!
শঙ্খধ্বনি নেই সেখানে, আলোও জ্বলে না সেখানে
সেখানে জোনাকি আর নিশাচর পাখির সহাবস্থান
তবুও প্রজাপতির স্বপ্নেই বেঁচে থাকা,এই তার অহংকার!!
আমফান
প্রকাণ্ড এই বটবৃক্ষ মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে
ভূলুণ্ঠিত শতাব্দী দুই পর।
তার শাখা-প্রশাখায় ইতিউতি অজস্র ইতিহাস
আমফান ঝড়ে শেষ খবর!
প্রকাণ্ড এই বটবৃক্ষের ছায়ায় শাশ্বত যার আবাস
এই ঝড়ে সেও শেষ!
আপনজনের মতো বৃক্ষের শাখায় থাকতো যে বলাকা
তারও নেই কিছুই অবশেষ!
মানুষ যে কবে দেখেছে এই আমপান ,কে জানে
এই ঝঞ্ঝাই বুঝিয়েছে নিমিত্ত জীবনের এই মানে।
শস্যহারা, সর্বহারার হাহাকার ওঠে মাঠে ময়দানে
গৃহহীন, কেউবা স্বজন হীন অদ্ভুত এই আমফানে!
আলো
বর্ষামঙ্গল মেঘ এনেছে আকাশে
ফিনফিনে বাতাসে কদম ফুলের সুবাস
তোমার আবাসে উড়ছে হলুদ শাড়ির আঁচল
যেন দিনের শেষের গোধুলির আলো!
সেই ভালো, ক্ষণিক কদম ছায়ায় দাঁড়াই এসো
এসো, কৃষ্ণকলি গাই, মেঘবৃষ্টি খেলায় হারাই ৷
পিচ্ছিল পথে যুগল পেলব পা
ষোড়শী বেলার জীবন যেন আলোক রাশির মেলা |
সম্বিৎ ফিরতেই পলক ফেলে দেখি
দিনের আলোয় স্বপ্ন এ সব নাকি ৷
বর্ষামঙ্গল , যা তুই ফিরে যা
শরৎ শিউলি রাখিস তবে উঠোন জুড়ে পা!
ভালোবাসা
সময় সময় বদলে যায় নানা রং
সবুজ গাছের শাখায় শাখায় গিরগিটি যেমন ৷
প্রস্ফুটিত পলাশ ঠিক থাকে সত্যের আঙিনায়
ঠিক থাকে রোদমাখা রক্ত শিমূল নিজস্বতায় ৷
পরিযায়ী পাখিরা ঘরে ফেরায় উন্মুখ
ঘর নেই, খাবার নেই, তবুও উপচে পড়ে সুখ ৷
মাঠে ময়দানে বিস্তর বিশ্রামে ওরা কারা
কাজ নেই, লকডাউন, হয়তো ওরা সর্বহারা!
পথেপ্রান্তে নীতি নির্ধারণ নিত্য নৈমিত্তিক
জীবনযাপন দ্বান্দ্বিক, হিসাবনিকাশে কে ওই ঋত্বিক ৷
রাষ্ট্র যেথায় বিপদ্গামী আশা নিরাশার উল্লাসে
সেথায় বদলাতে পারে দুর্বিপাক মানুষ যদি মানুষকে ভালোবাসে!
বিশ্বাস
ফেলে আসা দিনগুলো খড়কুটো নয়
সময়ের আঁচে সেঁকে নাও
দেখবে , জীবন কত মধুর , কত স্বপ্নময়!
ঘরের ভিতর বেঁধেছো যে ঘর
সেথায় সূর্য ওঠে, সন্ধ্যে নামে
নিয়ত বাতাসের ধ্বনিত মর্মর!
তবুও, বিশ্বাস যেন বিবর্ণ তুলসী উঠোন
ফেলে আসা দিনগুলি স্বার্থশূন্য -
হাতের উপর হাত যেন উত্তাপ যাপন!
মরীচিকার উল্লাসে বদলে নিলে যেই
ঘরের ভিতর চূর্ণ-বিচূর্ণ , ঋদ্ধ ঘর
উদাসী হাওয়ায় হারিয়ে মুক্তি, জীবনের খেই!
অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
অভিমত জানান
bimalmondalpoet@gmail.com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন