সময়ের ঊর্ধ্বে
একি দেখছি বিশ্বময় অদৃশ্য এক দানবের বর্বরতা।
হাজার বছর আগে এসেছিল তাড়া করে তুর্কিরা
এসেছিল কালাপাহাড়, এসেছিল ঝড়, মহামারী
তাড়া করেছিল বর্গী, নক্ষত্রের স্রোত অগাধ অগাধ।
তবুও জীবন বাঁচে ফুটপাতে থেতলে যাওয়া দুর্বার মতো-
গায়ে ঘা শুকোতে শুকোতে শুরু হয় মনের ঘা।
তবুও জেগেছি আমরা, দূর আকাশের নক্ষত্রের মতো
গভীর সমুদ্রে তৈরি হওয়া বুদবুদের মতো।
এখনো তাড়া খাই পঙ্গপালের...
এরপর কত-শতবার লোভ দেখিয়েছে...
অদৃশ্য, নগ্ন কোনো হাত। মিশরের রাজকন্যার পালঙ্কের মতো আজও টিকে আছি,পানের বাটার মতো…
এখনো ধ্বংসস্তূপের ভিতর অক্ষত কতগুলো প্রাণ;
জল নেই, আলো নেই, ভাষা নেই, শুধু একটু প্রাণ...
চোখগুলো হলদে নীলাভ বিষের মতো–
কী চায় বা চায় না; বোঝা যায়, যায় না বা,
ক্ষুধার্ত বিড়ালের মতো গা ঘষে পায়ে পায়ে
এ কোন সময় এখন ?ধৈর্য ধরে অপেক্ষা ;শুধু অপেক্ষা।
হৃদয় দিয়ে
তোমার যত শক্তি থাক না কেন
পাথর উপর থেকে পড়ছে দেখে সরে যাও,
নচেৎ তুমি ধূলিসাৎ হবে।
কিন্তু ভালোবাসায় চোখের জল না থাকলে
অকালে ঝরে যাবে।
মা
নতুন বছর এলে মাকে বেশি বেশি মনে পড়ে।
সকাল হলে আমাদেরকে বিছানা থেকে তুলে
পড়তে বসতে বলতো
‘বছরের প্রথম দিন যেমন যাবে
সারা বছর তেমনি যাবে’
দুপুরে পুকুর থেকে ধরা
মাছের ঝাল আর পোস্ত রান্না করতো মা-
সে রান্না এখনো যেন মুখে লেগে আছে।
সন্ধ্যার সময় মা বানাতো পিঠে ,
সরু-চাকলি, পাটিসাপটা, কত কি...
সবাইকে খাইয়ে মা বলতো...
‘এবার তোরা শুয়ে পড়, আজ ভাত হবেনা,
মায়ের উপর কোনো কথা বলা যেত না- শুয়ে পড়তা।
আজ মা বৃদ্ধ, দু'চোখে ভালোভাবে হয়তো দেখতে পায় না
কিন্তু যখন নতুন বছর শুরু হয়
মা ঠিক বুঝতে পারে, কেমন যেন হয়ে যায়;
কিছু না পারার বেদনায় চঞ্চল হয়ে ওঠে,
কি যেন বলতে চায় ।
না বলা কথা আমি বুঝতে পারি।
মা নাই পারুক ভাল রান্না ,
নাই পারুক পিঠেপুলি তৈরি করতে ,
মা যে এখনো আছে আমাদের মাঝে...
তাই আজ আমরা এত সুন্দর
পৃথিবী আজ মন্দির, মন আজ এত পবিত্র।
আবেগ
যতবার আকাশ দেখি ততবার উদাস হয়ে যাই।
ওগো প্রিয়ে-
যতবার তোমায় দেখি ততবার যন্ত্রণা ভুল যাই।
নারী নয়, মানুষ
‘ নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার
কেহ নাহি দিবে অধিকার
হে বিধাতা...'
কেউই অধিকার দিতে চায় না,ছিনিয়ে নিতে হয়
বলা যতটা সহজ করা ততটাই কঠিন
যারা বাস্তব বোঝে, সমাজ বোঝে
তারা জানে কতটা কঠিন এ কাজ।
হে নারী তুমি কন্যা, জায়া, জননী
যে হাতে গড়েছো সন্তানকে
খাইয়েছ বুকের দুধ
সে কেনো দেবে না সুযোগ ?
সে কেনো গড়েছে প্রাচীর নারী ও পুরুষে-
শুধু ভালোবাসা নয় শক্ত হও মনে ও প্রাণে
জ্বলে ওঠ ,বলে ওঠ ,গর্জে ওঠ
বল আমরা নারী নয়, মানুষ
আমরা মানুষ ।
আলো
কতগুলো নক্ষত্র পতন হয়ে গেল আমার মাথার উপর।
বুঝবো কী বুঝবো না কোনো দিন জানি না
তবুও যেটুকু বুঝেছি তাও এ জীবনে কম নয়
মাথার ভিতর সব এলোমেলো হয়ে যায় বুঝে ওঠার আগেই ।
এ নক্ষত্রগুলোর একদিন শক্তিশালী আলো ছিল
ভাষাও ছিল;মুখ ছিল ,চোখ ছিল-
তবুও থাকতে পারেনি অক্ষত,অমর
একদিন পড়তেই হল খাদে ,মৃত্যুর মুখে
সব থেকেও যারা সর্বহারা তাদের একটি কথাই
আজ মহামূল্যবান,পৃথিবীর কাছে
কারণ তারা যে মহামানব, নক্ষত্র
অপ্রকাশিত লেখা পাঠান
অভিমত জানান
bimalmondalpoet@gmai. com
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন