।। প্রতিদিন বিভাগ।।
।। এপ্রিল সংখ্যা।।
।। অণুগল্প (মুক্ত) -২৪।।
ছোকরা
দিলীপ রায়
দাদু ব্যাগ দুটো আমাকে দিন ?
কেন ? ব্যাগ দুটো দেব কেন ? তোমাকে তো চিনি না !
আমি ব্যাগ দুটো বয়ে আপনার বাড়ি পৌঁছে দেবো । ব্যস্ এইটুকুই । এতে চেনাচেনির কী দরকার ?
দিন-কাল ভাল না । এই বয়সে আমি আর ঝুঁকি নিতে পারবো না !
কীসব আবোল-তাবোল ভাবছেন । যেটা বলছি সত্বর করুন ।
তারপর আবার বলল, আপনি খুব বিরক্তকর মশাই ! কোথায় যেচে উপকার করতে চাইছি, আর আপনি আমাদের মিথ্যা সন্দেহ করছেন । তবে জেনে রাখুন, আমি অসৎ নই । আমি বাড়ি চললাম ।
দাঁড়াও বৎস ! ঠিক আছে, ব্যাগ দুটি নাও । তবে একটা শর্ত !
আবার কীসের শর্ত ?
আমার গিন্নী তোমার মতো অল্প বয়সের ছেলে দেখলে তাঁর মন বিগলিত হয়ে উঠবে এবং দামী দামী খাবার খাওয়াতে চাইবে । তখন তুমি নিজেকে সংযত রাখবে ।
মুচকি হেসে সুবোধ বালকের ন্যায় ছেলেটা বলল, “ঠিক আছে দাদু । আপনি যেটা চাইবেন সেটাই হবে ।“
এবার বলুন তো, আপনার ছেলে মেয়ে কী ?
“তাদের কথা বলো না ভায়া । আমার গুণধর ছেলে থাকে ক্যানাডায় । বৌমা ও নাতিকে নিয়ে তাদের ব্যস্ততম সংসার । দেশে ফেরার সময় নেই । অন্যদিকে মেয়ে ও জামাই জার্মানীতে । ছেলে মেয়ের কথা বলতে গিয়ে দাদু একটু আবেগপ্রবণ হয়ে উঠলেন । একরাশ দুশ্চিন্তার দীর্ঘশ্বাস ফেললেন !
“কই গো গিন্নি ?” বাড়ির উঠোনে দাঁড়িয়ে দাদু হাঁকলেন ।
ঘুরে তাকিয়ে দেখেন, ব্যাগ দুটি পৌঁছে দিয়ে ছোকরা উধাও !
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন