।। প্রতিদিন বিভাগ।।
।। জানুয়ারি সংখ্যা।।
।। দীর্ঘ কবিতা (উন্মুক্ত) -৪।।
কিছুটা এলোমেলো বাকিটা জল
সুমন দিন্ডা
কবিতায় কত কিছু বলা যায়,
কবিতায় কিছু বলা যায় না।
দীর্ঘ চোখ, নিভাঁজ কপাল,
তৃতীয় নয়ন, সাপুড়ে সিঁথি,
কবিতা জানে, কবিতা বোঝে।
জীবন এখানে বিদ্যুৎ,
অভিজ্ঞতা, বারনহীন, বর্ণনাক্ষম,
বটগাছের পরিচয়ে নয়, ঘাসের সূক্ষ্মতায়।
গল্পের অবকাশে যুগ চলে যায় না,
অনধিক চরিত্রে ফাইটিং বা লাইটিং,
কান ফাটানো মেলোড্রামা - কেউ নয়,
হাল্কা আঁচড়ের দাগগুলি
সবসময় দেখা নাও যেতে পারে।
বিতর্ক উঠে আসে বিরোধের পাশে,
ভাষা প্রশ্নের মুখোমুখি,
শব্দ ছোটে তীরের গতিতে,
আহত নয় অমৃত ফোটায়।
এখানে প্যাঁচ আছে তবু প্যাঁচালো নয়,
অন্ধকার আছে কিন্তু রাত নেই,
বন্দুক পিস্তল খুন জখম সবাই জেগে,
মৃত্যুর পরে অন্য কিছু দেখা যায় বুঝি!
এত কিছু লেখা হয়
এত শব্দ লাইনে লাইনে,
সব যেন শীতঘুমে।
বোঝার মানুষ কম বলে
বড়ো অভিমানী,
সহজে যেতে চায় না অন্যের কাছে।
কদর নেই, তবু লিখে চলি,
বোঝে না কেউ, তবু শব্দ বোঝাই করি,
কাজ নেই তাই লিখি,
কাজ ভালোবাসি তাই লিখি,
কিছু একটা করতে চাই ব'লে
লিখতেই থাকি।
থামতে হয় কিনা জানি না,
বসতে হয় কিনা বলেনি কেউ,
হাতের সঙ্গে হাতের ঝগড়া বাঁধিয়ে
বিক্রি করতে থাকি অস্ত্রভান্ডার।
সুবিধাজনক আইডিয়া পেয়েছি পুরস্কারের,
দায়িত্ব পেয়েছি পিঠ চুলকানোর,
কাজ পেয়েছি আত্মপ্রচারের।
মাথায় রেখেছি কবিতা,
ব্যবসায় রেখেছি কবিতা,
ঘরেতে রেখেছি কবিতা,
পরকীয়াতেও কবিতা।
সুবিধামতো কবিতা,
ব্যবহারগত কবিতা,
আত্মগত কবিতা,
আমিই কবিতা।
ঢালো বিষ, ঢালো বিতৃষ্ণা,
ঢালো রাজনীতি, ঢালো শরীর।
আমি কবি যত তরুণের,
আমি কবি যত অনুষ্ঠানের,
আমি কবি যত ফেসবুকের,
আমি কবি যত রাজনীতির,
আমি কবি শুধু সুবিধাবাদের।
দল গড়ি, দল ভাঙি,
পেরেক ফোটাই, পাইপ বসাই,
আমার কবিতায় আমি জমিদার,
আমার কবিতায় আমি ঈশ্বর,
আমার কবিতায় আমি প্রেমিক
আমার কবিতায় আমিই সব অনুপ্রেরণা।
তুমি লিখতে জানো,
তুমি লিখতে জানো না,
তুমি আমার অধীনে,
তুমি আমার বিরোধী পক্ষ।
তোমাকে পোড়াতে চাই,
ভাসাতে চাই, মিশিয়ে দিতে চাই মাটিতে।
তাই তোমার প্রশংসা করি অহরহ।
এসো আমার জলে তুমি নিমজ্জিত হও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন