রবিবাসরীয় বিভাগ-২৮
আজকের গল্প
সমাজসেবা
তপন তরফদার
ইদানীং সমাজ সেবাই সব থেকে ভালো পেশা সেবকরা বেশ কিছু অর্থ ব্যয় করেন ওই বিজ্ঞাপনে, প্রচারে। হাসি হাসি মুখ করে,মুখের মাস্কটা তুথনিতে ঝুলিয়ে, বত্রিশটা দাঁত দেখিয়ে ফটো তোলেন। এমনকি বিষ দান করলেও।
আমি একজন সমাজসংস্কারক ও নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকার পেশায় আছি। যা সর্বজনবিদিত। নিন্দুকেরা বলে পৈত্রিক সম্পত্তির জোরে ফুটানি দেখাই। কেউ কেউ বলে, অনেক পাপ করেছে। পাপক্ষন্ডাতে সমাজের সেবায় মেতেছে। আমি জানি, ওদের কথায় কান দিলে কিছুই করা যাবে না। হাতি রাস্তা দিয়ে গেলেই কুকুর ঘেউঘেউ ভ করবেই, হাতির কিছুই যায় আসেনা।
এখন পথ শিশুদের জন্য সমাজ সেবা হট কেক। স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্তে একটা ব্ল্যাক বোর্ড টাঙিয়ে দুজন তরুণী দিদিমণিকে সঙ্গে নিয়ে ভালোই সমাজের সেবা হয় সেই সঙ্গে বিনা খরচায় স্টেশনের যাত্রীদের মুখে মুখে সারা শহরের প্রচারের দৌলতে আমি, “মানবিক সমাজসেবী।“ অনেক অনুষ্ঠানের মঞ্চে আলো করে বসার সুযোগ পাই। আজকে পথ শিশুদের বিশেষ অনুষ্ঠানে ওদের লিখতে বলা হয়েছে “তোমার স্বপন কি।“
পথ শিশু রামু অসাধারণ লিখেছে “আমি রাত্রে ঘুমাতে চাই।“ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গেল, সারারাত ধরে চায়ের ডাষ্টবিনে ফেলা প্লাস্টিকের গ্লাস, মাটির ভাঁড় ধুয়ে চকচকে করে রাখতে হয়। গন্ডোগোল হলেই রাম ধোলাই। যে ঘুমোতেই পারেনা, সে স্বপন দেখবে কি করে। কথাটা বেশ চাউর হয়ে গেছে।
আমার সমাজসেবার দফারফা হতে চলেছে। প্রাণকিশোর প্রধান মন্ত্রী কে সুপারিশ করেছে, “সব পথ শিশুদের সরকারি আস্তানায় রাখা হবে। যেমন গ্রাম,পশু,বৃক্ষ দত্তক নেওয়া হয় সেরকম যাদের ক্ষমতা আছে তাদের সবাইকেই দত্তক নিতে হবে। তাহলে কোনো ভবঘুরে, পথশিশু খুঁজে পাওয়া যাবে না।“
সত্যি সত্যি সরকার এধরনের বিভিন্ন প্রকল্প চালু করলে অনেকেরই সমাজ সেবার মৌরুসি পাট্টা লাটে উঠে যাবে।
Very nice.
উত্তরমুছুনগল্পটি পড়ে খুব ভালো লাগলো। সমাজ সেবার নামে
উত্তরমুছুনঅনেক কাজ হয় যা মোটেও সমাজ সেবার আওতায়
পড়ে না। বেশ ভালো লাগলো।