লেবেল

বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১

ধারাবাহিক উপন্যাস (পর্ব-১০)।। ছায়া - ছায়া অন্ধকারের আড়ালে — অনন্যা দাশ।। Ankurisha ।।E.Magazine ।।Bengali poem in literature ।।

 






ধারাবাহিক উপন্যাস (পর্ব-১০)


ছায়া - ছায়া অন্ধকারের আড়ালে 

অনন্যা দাশ 




আমি দেখিয়ে দিলাম। আশ্চর্য, দরজাটা খোলাই ছিল! ঠেলতেই খুলে গেল! আমি বেশ আশ্চর্য হলাম। ঐশী কখনও দরজা খুলে রাখে না, সব সময় তালা অথচ আজকেই খোলা ছিল আর আমি খেয়াল করিনি!   

মেগান আর রোহন কুমার ভিতরে ঢুকলেন আর আমি দরজার গোড়া থেকে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। ওমা ৪৪০ ভোল্ট কারেন্টের ধাক্কা খেলাম আমি! ঐশীর ঘরটা একদম খালি! মানে খাটটা রয়েছে কিন্তু সেটা ছাড়া আর কিছু নেই ঘরে। ঐশীর নিজের সব জিনিস হাওয়া! আলমারিও খালি! ওর গুচ্ছের জামাকাপড়, জুতো যা কিছু থাকত ওই ঘরে কিছুই নেই! বিছানাটায় টানটান করে চাদর পাতা যেন কেউ শোয়ইনি! ঐশী কখনও বিছানা ওই রকম সুন্দর পরিপাটি করে রাখত না। ঘরে জিনিসপত্র অগোছালো হয়ে ছড়িয়ে থাকত বরাবর! আমার মুখটা মাছের মতন খুলতে আর বন্ধ হতে লাগল। কোথায় গেল ঐশী?

রোহন কুমার চোখ আবার ছোট ছোট হয়ে গেছে। ওনার সঙ্গে মেগানের চোখাচোখি হল।

আমি আমতা আমতা করে বললাম, “ঐশী কখন ঘর খালি করে চলে গেছে আমি জানি না! আমাকে কিছু বলে যায়নি!”



মার্কাসের ঘরে বসেছিলেন রোহন আর মেগান। ওদের তিনজনের মধ্যে কথা হচ্ছিল।

রহন বললেন, “আমার আর মেগানের ধারণা যে ওই দীপা মেয়েটার ডি আই ডি আছে!”

“ডি আই ডি আবার কী?”


রোহন প্রিন্ট করা পাতাগুলো থেকে পড়তে লাগলেন, “ডিসোসিয়েটিভ আইডেন্টিটি ডিসর্ডার একটা মানসিক রোগ যাটাতে দুটো বা দুটোর বেশি ব্যক্তিত্ব একই মানুষের মাথার মধ্যে বাস করে এবং তাকে কন্ট্রোল করে। এটাকেই অনেকে বলে ‘ আত্মা ভর করেছে’। এই ধরনের লোকেদের ভুলে যাওয়াটাও স্বাভাবিক। এক ব্যক্তিত্বে থাকার সময় অন্য ব্যক্তিত্ব কী করেছে বা বলেছে সেটা মনে থাকে না। ১৯৯৪ পর্যন্ত এই মনোরোগটাকে মাল্টিপাল পার্সোন্যালিটি ডিসর্ডার বলা হত কিন্তু এখন রোগটাকে ঠিক মতন বোঝার জন্যে নামটা বদল করা হয়েছে। এই রোগের অনেক কারণ হতে পারে। ছোটবেলার কোন ভয়ঙ্কর ঘটনা বা শারীরিক অথবা মানসিক অত্যাচার থেকে এই রোগ বেশি হয় দেখা গেছে।”


এতটা পড়ে রোহন কুমার থামতে মার্কাস বললেন, “ও তাই বলো! আমাদের সময় রোগটাকে মাল্টিপাল পার্সোন্যালিটি ডিসর্ডার বা ডুয়াল পার্সোন্যালিটি ডিসর্ডার বলেই ডাকা হত। এখন ওই সব ডি আই ডি নাম দেওয়া হয়েছে। তবে তখন কেউ খুব একটা বিশ্বাস করত এটা সত্যিই রোগ কিনা। বেশির ভাগ লোকজনই মনে করত এটা ভাঁওতা দেওয়ার একটা উপায়। প্রাইমাল ফিয়ার সিনেমাটা দেখেছো? রিচার্ড গিয়ার আছে। যাই হোক মনের রোগ থাকতেই পারে মেয়েটার। ও তো সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে চক্কর কাটছিল বলেছিলে না?”

“হ্যাঁ, ডাঃ মিত্র। দেখি ওনার সঙ্গেও দেখা করতে হবে। তবে এই সব সাইকিয়াট্রিস্টরা যে সব কেসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সেগুলো আমার একেবারেই পছন্দ নয়! তারা কিছুই বলতে চায় না, নিজের পেশায় দোহাই দেবে আর বসে বসে রহস্য করবে শুধু! বিরক্তিকর!”

“হুঁ! দেখো যদি কিছু বার করতে পারো! কিন্তু তোমরা যা বলছ সেটা সত্যি হলে তো মেয়েটাকে গ্রেফতার করলে ভাল হয়। সে তো খুন করেছে এবং আবার করতে পারে!”  


“হ্যাঁ, পলাশের সঙ্গে ওর সরাসরি যোগাযোগ পাওয়া গেছে। পলাশের ব্যবহারে সে প্রচন্ড আহত ছিল তাই ওর প্রতি ঘৃণা জন্মাতেই পারে। কিন্তু অন্য দুটো ঘটনার সঙ্গে ওর সরাসরি যোগাযোগটা সঠিক ভাবে প্রমাণ করতে হবে। মানে ঐশী নামে ফেসবুক পেজ আছে কিন্তু তাতে ছবি অন্য মেয়ের। ল্যারি ছেলেটা সেখানে বিরক্ত করছিল কিন্তু ওটা পিছনে দীপা আছে কিনা বোঝা যাচ্ছে না। দীপা নামে মেয়েটার আরেকটা ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে। যদিও সেটা মোটেই বেশি অ্যাকটিভ নয় বরং ঐশী ঘোষ অ্যাকাউন্টটা বেশি অ্যাকটিভ! এদিকে ওই ডেট রেপ ড্রাগের কেসটা ভারি অদ্ভুত। মেয়েটা যা করেছে তার জন্যে ওকে দোষ দেওয়া যায় না। তাছাড়া ছেলেটা সত্যি বলছে কিনা কোন ঠিক নেই, কত ক্যাশ ছিল সে বলতে পারেনি ঠিক করে। খুব একটা বেশি ছিল না। দীপার ছবিটা দেখেও সে ঠিক মতন বলতে পারছে না সেই ছিল কিনা। বলছে মনে হয় এই মেয়েটাই কিন্তু সেদিন প্রচুর মেক আপ করে ছিল!”

 

(চলবে...)





আরও পড়ুন 👇🏾👇🏾


https://wwwankurisha.blogspot.com/2021/06/ankurisha-emagazine-bengali-poem-in_17.html


1 টি মন্তব্য:

  1. ডক্টরস ডে তে ডাক্তারের কিছু কথা আছে বলেই দিনটির সার্থকতা হল।

    উত্তরমুছুন