অঙ্কুরীশা-র পাতায় অন্য ক্যানভাসএর ২০ বছর উদযাপনের বর্ষব্যাপী অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে চলছে দুই বাংলার অনলাইন গল্প উৎসব"স্বল্প কথার গল্প''।উদ্বোধক হিসেবে পেয়েছি স্বনামধন্য কথা সাহিত্যিক সম্মাননীয় তপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে। বিশেষ অতিথি গল্পকার হিসেবে পেয়েছি সম্মাননীয়া মৌ মধুবন্তী এবং সপ্তদ্বীপা অধিকারী কে।আজ উৎসবের ৮ম দিনে আছেন দুই বাংলার দুই বিশিষ্ট গল্পকার~ ধ্রুব বাগচী এবং রোকেয়া ইসলাম। আপনাদের সবাইকে সাদর আমন্ত্রণ। উৎসব টি উপভোগ করুন। আপনাদের লাইক ও কমেন্ট এ আমাদের এই চলার পথ সুদৃঢ় হোক,এই আশা রাখি।
শুভেচ্ছান্তে-
সিদ্ধার্থ সাঁতরা
সভাপতি,উৎসব কমিটি।
বিশ্ব বন্দ্যোপাধ্যায়,
সম্পা,অন্য ক্যানভাস।
যুগ্ম আহ্বায়ক: মিতালী ত্রিপাঠী ও রীতা বেরা।
ধ্রুব বাগচী
অনেকটা স্বপ্নের মত
চোর আসার কথা ন়য়, অন্তত আমার ঘরে। ওরা এখন তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করে। তবু খুটখাট শব্দ, চেয়ার টানার আওয়াজ এত রাতে! সবে আসছিল ঘুমটা। ভেঙে গেল। মশারির মধ্যে থেকে দেখলাম তাকে। মেয়ে চোরে কখনো টেবিলের সামনে চেয়ারে বসে পায়ের ওপর পা তুলে বসে না আর গুনগুন করে হিন্দি গান করে না। তবে ধরতে তো হবে।কিন্তু কি ভাবে ঢুকলো! দরজা ভেঙে, না সিঁধ কেটে! না: সিঁধ কাটা এখন লুপ্তপ্রায় জীবিকা। পাকা চোর। আমিও খুব সন্তর্পনে পা টিপে তার পিছন দিকে নামলাম। আবছা আলোয় দেখি, কার্ল করা সোনালী চুল, সালোয়ার টপে সুন্দর লাগছে কিন্তু। সে আপন মনে গান গেয়ে চলেছে। টুকুস করে আলো জ্বালালাম। সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। " আইয়ে স্যর জী। বৈঠিয়ে।" খুব চেনা লাগলো। বড়ো চোখ, ঠোঁটের দু পাশে হালকা টোল,সর্বাঙ্গে মোহময়ী আবেদন। কোথায় দেখেছি! ও, ! দু হাজার সালের মিস ওয়ার্ল্ড! অভিনয়ে জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছে তিন বার। নিক জোনস বলে ভাইয়ের বয়সী কাকে যেন সেদিন বিয়ে করলো। ভদ্রতা করে বললাম, " আপ !! মেরে কামরে মে"! মাদকিও হাসি ছড়িয়ে বললো, " আপ মেরে পিকচার বরফি কি বহত বঢ়িয়া রিভিউ কিয়া। আজ মওকা মিলতে হি আপকে পাশ আয়া থ্যাংকস বোলনে "
বোকার মত বলে ফেললাম, " দ্যাটস ও কে"। এক হাসি ছড়িয়ে দরজা খুলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল প্রিয়ঙ্কা চোপড়া।
রোকেয়া ইসলাম
বহমান জীবন
বাবলু আজ খুশি। তিনমাস পর কাজে ডাক পড়েছে।ওদের সংসারে চারজন মানুষ খাওয়ার। রোজগারের মানুষ ওরা দুজন। মা ঠিকার কাজ করে, বার বছরের বাবুল খাবারের দোকানে কাজ করে। দোকানটা খোলা রাস্তায়। রাস্তায় ওর মত দুজনকে বসিয়ে শ্রমজীবিদের খাবার বিক্রি করে। করোনা আক্রমণের পর মালিক দোকানটা বন্ধ রেখেছিল। মাও বেকার।মায়ে পুতে আরামে দিনাতিপাত করতো পেটভর্তি ক্ষুধা নিয়ে। দুবার পনরদিনের খাবার মত সাহায্য পেয়েছিল।জীবনে নেমে এসেছে ভয়ংকর ক্ষুধা।
সকালে মা বাবুল কাজে যায়। মালিক ওকে মাস্ক গ্লাবস দিয়েই কাজে বসায়।কিছুক্ষণ পর দেখে কাস্টমাররা বেশিরভাগই মাস্ক গ্লাবস ছাড়া। হাত না ধুয়েই খাবার কিনে খায়।বাবুলও সব খুলে ফেলে। বেতনের টাকা মায়ের কাছে দিতেই মনে হয় করোনা কিছু নেই।
গভীর রাতে শীতে ঘুম ভেঙে যায়। শরীর কেঁপে জ্বর আসছে। তাহলে কি...!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন